মান্নার বিরুদ্ধে অভিযোগের নেপথ্যে অন্য খেলা, চলছে  নৌকা ডুবানোর গভীর ষড়যন্ত্র

বিশেষ প্রতিনিধি:

বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্নার বিরুদ্ধে হামলা ও মারধরের অভিযোগের নেপথ্যে অন্য খেলা রয়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।  এ খেলার মূল লক্ষ্য হচ্ছে, আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে নৌকাকে ডুবানো। মনোনয়ন নিয়ে বিভাজনে আওয়ামী লীগে বিরোধীদের কারণে শুধু ছাত্রলীগ নেতা মান্নাই নন, অনেকেই প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন।

সূত্র বলছে, ছাত্রলীগ নেতা মান্না নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী।  নিজের নির্বাচনী প্রচারণার পাশাপাশি মেয়র প্রার্থীর নৌকার পক্ষেও কাজ করছেন। মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর গ্রীন সিগনাল পেয়ে রইজ আহম্মেদ মান্না আধঘাট বেধে মাঠে নেমেছেন। এ অবস্থায় তার প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির এ কে এম গোলাম মর্তুজা আবেদীন। তিনি একাধিকবার নির্বাচিত কাউন্সিলর।

রইজ আহম্মেদ মান্নার অভিযোগ, আওয়ামী লীগের মধ্যকার বিভাজনের প্রেক্ষাপটে এখন জামায়াত-বিএনপিসহ উইপোকারাও লেজুর নাড়াতে শুরু করেছে। রাজনীতিতে নয়, বরং মাদক ব্যবসায় জড়িত এমন যুবকেরা নৌকার পক্ষে কথিত প্রচারণা চালানোর দোহাই দিয়ে পদস্থদের হেনস্থা করে চলছে, যার নেপথ্যে থেকে বিশেষমহল সাহস-শক্তি যোগাচ্ছে। এটা নৌকার জন্য অশুভ বার্তা বলে অভিহিত করেছেন ছাত্রলীগ নেতা রইজ আহম্মেদ মান্না।

এদিকে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, সাদিক আব্দুল্লাহ মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার পড়ে প্রতিটি ওয়ার্ডেই স্বাধীনতাবিরোধী একটি অংশ সক্রিয় হয়েছে। যাদের মূল উদ্দেশ স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভাজনকে ট্রামকার্ড হিসেবে হিসেবে ব্রবহার করে নিয়ে নৌকাকে ডোবানো। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের নিবেদিত নেতাকর্মীদের বাধিা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

অভিজ্ঞ মহল মনে করেন, মনোনয়ন প্রশ্নে বরিশাল অওয়ামী লীগে বিভাজন তৈরি হয়েছে, তাতে এবারের বিসিসি নির্বাচনে নৌকা অনেকটাই ঝুকিতে পড়েছে। দলের মধ্যকার দ্বন্দ্ব-সংঘাত বৃদ্ধি পেলে তার সুবিধা পুরোটাই যাবে বিরুদ্ধ পক্ষের ঘরে। বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন, বরিশার নগরী বিএনপির ঘাটি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু দলটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। সেক্ষেত্রে দলটির নেতাকর্মীদের বড় একটি সমর্থন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ অবস্থায় আওয়ামিী লীগ নিজেদের মধ্যে সংঘাত-হানাহানি নৌকার জন্য অশনিসংকেত হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে।

নির্বাচন পূর্ব এই বিরোধ মেটানো না গেলে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে কোণঠাসা করতে গিয়ে নৌকার প্রার্থীকে বেকায়দায় ফেলতে পারে। সেক্ষেত্রে বিএনপির ঘাটিতে স্বাধীনতা বিরোধী কোনো শক্তি উত্থ্যান হওয়াটা অমূলক হবে না। এমন শঙ্কা খোদ শীর্ষস্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারাও প্রকাশ করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন পূর্ব বরিশাল আওয়ামী লীগে যে বিরোধ চলছে, তা একমাত্র সাদিক আব্দুল্লাহ এবং তার পিতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহই মেটাতে পারেন। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের এই দুজন শীর্ষ নেতা বরিশালে আসলে এবং নৌকা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা শুরু করলে পরিবেশ-পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকাসহ সাদিক অনুসারী নেতাকর্মীরা শক্তি-সাহস ফিরে পাবেন বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।