দখিনের সময় ডেস্ক:
কিশোর ফারুকের যে দুরন্ত যাত্রা হয়েছিল রাজনীতির আঙিনায়, চলচ্চিত্রে এসে সেই ফারুক সাফল্যের রাজপুত্র বনে গেলেন। একের পর এক ব্যবসাসফল সিনেমা দিয়ে তিনি বাজিমাত করেছেন। যে অল্প কয়জন শিল্পী অভিনয় দিয়ে ঢাকাই সিনেমাকে আলোকিত করেছেন তাদের অন্যতম ফারুক। তিনি সবার কাছে ‘মিয়া ভাই’ বলেও খ্যাত। অনেক নায়িকাই ফারুকের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন। সেসব নায়িকার তালিকা থেকে ববিতা ও কবরীর সঙ্গে কাজ করার গল্প তুলে ধরা হলো…
কবরী
দেশ স্বাধীন হওয়ার কিছুদিন পরই চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হন চিত্রনায়ক ফারুক। এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ সিনেমায় তার নায়িকা ছিলেন কবরী। এটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭২ সালে। প্রথম ছবির গল্প জানাতে গিয়ে নায়ক ফারুক কবরীর স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘কবরী তখন সুপারস্টার। তার মতো নায়িকার সঙ্গে জুটি বেঁধে সিনেমা শুরু করতে পারাটা আমার জন্য আনন্দের। তবে ব্যাপারটি অতটা সহজ ছিল না। আমি খানিকটা ডানপিটে ছিলাম। আমি মারামারি করি এমনটাও প্রচার ছিল। যখন ‘জলছবি’ সিনেমার প্রযোজক আমাকে তার ছবির নায়ক করলেন কবরী কারও মাধ্যমে জানতে পারলেন যে আমি গুন্ডা কিসিমের। তিনি শুনেই ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। আমার সঙ্গে ছবি করবেন না বলে আপত্তি তুলেছিলেন।
পরে তাকে বোঝানো হলে তিনি রাজি হন। অভিনয় করতে এসে আমার সম্পর্কে তার ভুল ধারণাটি ভেঙে গিয়েছিল।’ সেই শুরু। এর পর ফারুক-কবরীকে দেখা গেছে বেশ কিছু জনপ্রিয় ছবিতে। ‘সারেং বউ’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘আরশিনগর’, ‘তৃষ্ণা’, ‘সুজন সখী’ ইত্যাদি। এর মধ্যে আবদুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত ‘সারেং বউ’ ছবিটি ফারুক-কবরী জুটিকে দিয়েছে অনন্য মর্যাদা। আর খান আতার চিত্রনাট্যে প্রমোদ করের ‘সুজন সখী’ ছবিটি এ জুটিকে সেরা পাঁচটি রোমান্টিক জুটি হিসেবে জায়গা করে দিয়েছে।
ববিতা
চিত্রনায়ক ফারুক সবচেয়ে বেশি সিনেমা করেছেন ববিতার সঙ্গে। তাই নিজের সফল বা প্রিয় নায়িকা হিসেবে ববিতাকেই এগিয়ে রাখেন তিনি। ১৯৭৩ সালে ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ছবি দিয়ে প্রথমবারের মতো জুটি হন তারা। এর পর ‘আলোর মিছিল’, ‘কথা দিলাম’, ‘প্রিয় বান্ধবী’, ‘লাঠিয়াল’, ‘সুর্যগ্রহণ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘নয়নমণি’, ‘মিয়া ভাই’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’ ইত্যাদিসহ ৩৩টি ছবিতে অভিনয় করেন তারা।
এর মধ্যে কালজয়ী হয়ে আছে ‘আলোর মিছিল’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ছবিগুলো। আর ‘নয়নমণি’ ছবির মিষ্টি রসায়নে ফারুক-ববিতা আজও দর্শকের মনে নিটোল প্রেমের প্রতীক হয়ে আছেন। সর্বশেষ এ জুটিকে দেখা গিয়েছিল ২০০৮ সালে, ‘ঘরের লক্ষ্মী’ নামের ছবিতে।