দখিনের সময় ডেস্ক:
ব্যক্তি পর্যায়ে কোনো ভাবেই ৬০ বিঘার অধিক জমির মালিক হওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। বুধবার সচিবালয়ে জাতীয় সংসদে গৃহীত ভূমি সংক্রান্ত তিনটি বিলের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। এই তিনটি বিল হচ্ছে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’, ‘ভূমি সংস্কার আইন, ২০২৩’ এবং ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন, ২০২৩’। বিল গুলো রাষ্ট্রপতির সম্মতি পেলে আইনে পরিণত হবে।
ভূমি সংস্কার আইন সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ব্যক্তি পর্যায়ে ৬০ বিঘার অধিক কৃষি জমির মালিক হওয়া যাবেনা। উত্তরাধিকারসূত্রে অর্জিত ভূমির ৬০ বিঘার অধিক হলে উত্তরাধিকারী পছন্দমত ৬০ বিঘা ভূমি রাখতে পারবে এবং অবশিষ্ট ভূমি সরকার বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ক্ষতিপূরণ দিয়ে খাস করবে। তবে কেউ যদি ৬০ বিঘা জমি থাকা স্বত্ত্বেও বেআইনিভাবে নামে-বেনামে নতুন করে অধিক জমি ক্রয়করে তাহলে তার অতিরিক্ত জমি বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং এক্ষেত্রে সরকার কোনো ক্ষতিপূরণ দিবেনা।’
ভূমি অপরাধ আইনের বিষয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘এই ভূমি অপরাধ আইন প্রণয়নের পুরো প্রকৃয়াটি ছিল বেশ জটিল ও সংবেদনশীল। আমরা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে অংশীজনদের মতামত গ্রহণ করেছি এর খসড়া তৈরির সময়। সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিকতার কারণে আমরা আমাদের ধারণা থেকে অনেক আগেই এই আইন দেশের জনগণকে উপহার হিসেবে দিতে পেরেছি। এটা একেবারে নতুন আইন। মাঠে কার্যকর হবার পর আমরা বুঝতে পারব কি কি পর্যায়ে সংশোধন প্রয়োজন। তা অনুযায়ী পরবর্তীতে সংশোধন হবে।’
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আইনটিতে ভূমি বিষয়ক অপরাধকে ৮টি মৌলিক ভাগে ভাগ করা হয়েছ। এগুলো হচ্ছে ভূমি প্রতারণা, ভূমি জালিয়াতি, অবৈধ দখল, ক্রেতা বরাবর বিক্রিত ভূমির দখল হস্তান্তর না করা, সীমানা বা ভূমির ক্ষতিসাধন, সরকারি, আধা-সরকারি, স্থায়তুশাসিত প্রতিষ্ঠান বা জনসাধারণের ব্যবহার্য ভূমির অবৈধ দখল, প্রবেশ বা কোনো কাঠামো নির্মাণ বা ক্ষতিসাধন, সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের স্বার্থযুক্ত বা জনসাধারণের ব্যবহার্য ভূমি অবৈধ ভরাট, শ্রেণি পরিবর্তন ইত্যাদি এবং মাটির উপরি-স্তর কর্তন ও ভরাট। এছাড়াও আরো ৪ ধরণের অপরাধকে সম্পূরক করা হয়েছে: আদেশ অমান্য, অপরাধ সংঘটনে সহায়তা বা প্ররোচনা, অপরাধ পুনঃ সংগঠন, কোম্পানি কর্তৃক অপরাধ সংঘটন।’
ভূমি জরিপ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা মূলত যেসব এলাকায় চলমান বিএস জরিপ কার্যক্রম এখনো শেষ হয়নি সেখানে বিএস জরিপ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। যেহেতু শেষ পর্যন্ত সেখানে বিডিএস (বাংলাদেশ ডিজিটাল জরিপ) হবে, সেক্ষেত্রে এখন বিএস জরিপ পরিচালনার কোনো অর্থই নেই। ১৯৯৮ সালে শুরু হওয়া বিএস কার্যক্রম এখনো শেষ হয়নি, অন্যদিকে আমরা আশা করছি এর চেয়ে অনেক কম সময়ে বিডিএস কার্যক্রম শেষ করা সম্ভব হবে। এতে মানুষের হয়রানি কমবে।’
Post Views:
64