দখিনের সময় ডেস্ক:
চাঁদপুরের বালুখেকো সেলিম খানকে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ‘আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন’ বলে বক্তব্য দিয়ে আলোচিত নদী রক্ষা কমিশন চেয়ারম্যান ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরীর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করেছে সরকার। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ ‘জনস্বার্থে বাতিল’ করা হয়েছে বলে বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী তিন বছরের জন্য জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান। সেই হিসাবে এই পদে তার ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিয়োগের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। এখন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করায় এক বছরের বেশি সময় আগেই তাকে এই পদ ছাড়তে হচ্ছে।
নদী রক্ষা কমিশন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর নানান পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনায় ছিলেন মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী। সবশেষ গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে এক সেমিনারে চাঁদপুরের মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদী দখলের পেছনে একজন নারী মন্ত্রীর ভূমিকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন। অর্থাৎ শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে স্পষ্ট ইঙ্গিত করে অভিযোগ তোলেন নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান। এরপরই নতুন করে আলোচনা শুরু হয় চাঁদপুরের একটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ‘নদীখেকো’ সেলিম খানকে নিয়ে। সেলিম খান দীপু মনির ঘনিষ্ঠ বলেই সব মহলেই প্রচার আছে।
নদী রক্ষা কমিশন চেয়ারম্যান বলেছিলেন, ‘মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলন বন্ধ করায় সরকারি কর্মকর্তাদের ওই মন্ত্রী শাস্তি দিয়েছেন। মেঘনায় এর আগে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে। যাদের নেতৃত্বে এই কাজ বন্ধ করা হয়েছে, তাদের (সরকারি কর্মকর্তাদের) পরে পানিশমেন্ট (শাস্তি) হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো (বদলি করা) হয়েছে। স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।’ মঞ্জুর আহমেদ আরও বলেছিলেন, ‘আবার সেখানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে। ভূমিকা রয়েছে একজন নারী মন্ত্রীর। এই হায়েনার দল থেকে নদীকে বাঁচানো যাচ্ছে না। এই হায়েনার দলের পেছনে আছে রাজনৈতিক শক্তি। চাঁদপুরের ওই নারী মন্ত্রী তাদের সহায়তা করেন।’
এই বক্তব্যের দুদিন পরই একটি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ‘হুমকি’ পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী। বলেছিলেন, ‘একজন নারী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কথা বলে তোপের মুখে আছি। আমাকে বিভিন্ন হুমকিধমকি দেওয়া হচ্ছে। তবে এতে আমি ভীত নই। রাষ্ট্রের স্বার্থে কাজ করে যেতে চাই। বালুখেকোদের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে যুদ্ধে নামার বিকল্প নেই।