দখিনের সময় ডেস্ক:
ভারতের দেয়া মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা তেমন ভালো হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। তবে মিডল ওভারে হাল ধরেন ট্রাভিস হেড এবং মার্নাস লাবুশেন। পুরো টুর্নামেন্টে আগুনঝরা বোলিং করা ভারতীয় বোলারদের রীতিমতো নাকানিচুবানি খাইয়েছেন এই দুই অজি ব্যাটার। আর তাতে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের লক্ষাধিক দর্শককে কাঁদিয়ে ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অস্ট্রলিয়া।
রোববার (১৯ নভেম্বর) আহেমদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ভারতের দেয়া ২৪১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৭ ওভার হাতে রেখে ৬ উইকেটে জিতেছে অট্রেলিয়া। ভারতের দেয়া মাঝারি লক্ষ্যটাই পাওয়ারপ্লের পর পাহাড়সম হয়ে ওঠে অস্ট্রেলিয়ার জন্য। ৭ ওভারের মধ্যেই অজিদের তিন ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়েছিলেন জাসপ্রীত বুমরাহ এবং মোহাম্মদ শামি। সেখান থেকে অজিদের ম্যাচ জেতানোর নায়ক ট্রাভিস হেড।
রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ১৫ রান করে অস্ট্রেলিয়া। তবে দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই ডেভিড ওয়ার্নারকে ফেরান মোহাম্মদ শামি। ৩ বল খেলে ৭ রান করেন ওয়ার্নার। ওয়ার্নারের বিদায়ের পর ক্রিজে এসে ঝড় তুলেছিলেন মিচেল মার্শ। তবে সে ঝড় বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। বুমরাহর পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলটি মার্শের ব্যাটে আলতো চুমু খেয়ে উইকেট কিপারের হাতে জমা পড়ে। ১৫ বলে ১টি করে চার ও ছয়ে ১৫ রান করে ফেরেন মার্শ। সপ্তম ওভারের শেষ বলে স্টিভেন স্মিথকেও ফেরান বুমরাহ। ৯ বলে ৪ রান করে ফেরেন স্মিথ।
তৃতীয় উইকেটে অবিশ্বাস্য এক জুটি গড়েন হেড এবং লাবুশেন। বিপদের মুখে দুজনে মিলে গড়েন ১৯২ রানের জুটি। আর তাতে কোনো শঙ্কা ছাড়াই রান তাড়া করে ফেলে অজিরা। অস্ট্রেলিয়ার যখন ২ রান দরকার, তখন আউট হন হেড। মাঠে নেমে প্রথম বলেই উইনিং শট খেলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই শুভমান গিলের উইকেট হারায় ভারত। মাত্র ৪ রান করে আউট হন তিনি। মিচেল স্টার্কের বলে অ্যাডাম জাম্পাকে ক্যাচ দেন এ ওপেনার। গিল ফিরলেও বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পাওয়ার-প্লেতে ভারতের রানসংখ্যা বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন রোহিত। কিন্তু ১০ ওভার শেষ হওয়ার আগেই ভুল শট সিলেকশনে আউট হন তিনি। ৩১ বলে ৪৭ রান করেছেন তিনি।
উইকেটে এসে দ্বিতীয় বলেই চার মেরেছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। নিজের খেলা তৃতীয় বলে উইকেটের পেছনে জস ইংলিসের কাছে ক্যাচ দেন এই ব্যাটার। ১০০ রানের আগে ৩ উইকেট হারানোর পর লোকেশ রাহুলকে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দিচ্ছিলেন বিরাট কোহলি। তবে ফিফটি তুলে নেয়ার পর ৫৪ রানে কামিন্সের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন ডানহাতি এই ব্যাটার। কোহলির বিদায়ের পর রানের গতি একেবারেই কমে যায়। রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে এরপর ৩০ রানের জুটি গড়েন রাহুল। তবে ৩৬তম ওভারে হ্যাজলউডের শর্ট লেন্থ ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে জাদেজা ফিরলে ভাঙে সেই জুটি।
চাপের মুখে ফেরেন রাহুলও। দলীয় ২০৩ রানে তার বিদায়ের পর ১১ রানের ব্যবধানে আরও দুই উইকেট হারায় ভারত। উইকেটে একমাত্র ভরসা হিসেবে টিকে ছিলেন সূর্যকুমার যাদব। তবে দলের প্রয়োজনে কিছুই করতে পারেননি তিনি। ২৮ বলে ১৮ রান করে হ্যাজেলউডের বলে ফেরেন তিনি। ওভার শেষ হওয়ার আগেই অলআউট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছিল ভারতের। তবে মোহাম্মদ সিরাজ এবং কুলদীপ যাদবের ব্যাটে সেই শঙ্কা এড়িয়ে ৫০ ওভার ব্যাটিং করে রোহিতের দল। শেষ বলে অবশ্য রান আউট হয়েছেন কুলদীপ যাদব।