Home শীর্ষ খবর চিকিৎসক পরিচয়ে কসাই, সিজারের বিল দিতে না পারায় নবজাতক বিক্রি

চিকিৎসক পরিচয়ে কসাই, সিজারের বিল দিতে না পারায় নবজাতক বিক্রি

দখিনের সময় ডেস্ক:
রংপুরের টার্মিনাল এলাকায় হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালে প্রসূতি মায়ের সিজারের (অপারেশন) বিল পরিশোধ করতে না পারায় ৮ দিনের এক নবজাতকে মাত্র ৪০ হাজার টাকায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। রোববার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে নগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। অভিযোগ পাওয়ার পর রোববার রাত ৩টার দিকে নগরীর পীরজাবাদ এলাকা থেকে বাচ্চাটিতে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় ওই হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম রনিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে রংপুর নগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় ওই নবজাতককেও উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলো- হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার এসএম রনি, নবজাতকটির ক্রেতা রুবেল হোসেন ও তার স্ত্রী বিথি। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বলেন, লাবনী আক্তার নামে এক প্রসূতি মা তার স্বামীকে নিয়ে নগরীর টার্মিনাল এলাকায় হলি ক্রিসেন্ট নামে একটি ক্লিনিকে গত ১৩ তারিখে ভর্তি হন। ওই দিন রাতে তার সিজার হয়। তিনি সেখানে ১৭ তারিখ পর্যন্ত ছিলেন। হাসপাতালের বিল আসে ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু সেই টাকা পরিশোধ করার মতো সামর্থ্য তাদের ছিল না।
এর আগে দূর সম্পর্কের পরিচয়ে লাবনী হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসক এসএম রনির কাছে যায় এবং তার পরামর্শেই তার ক্লিনিকে সিজার করানো হয়। এরপর চিকিৎসার খরচ দিতে না পারায় এই চিকিৎসক লাবনীকে বিল পরিশোধ করতে চাপ দেয়। কিন্তু লাবনী এতে রাজি না হওয়ায় তার স্বামী ওয়াসিমের যোগসাজশে রুবেল হোসেন রতন নামে একজনের কাছে ডাক্তার রনি ও ওয়াসিম ৪০ হাজার টাকায় বাচ্চাটিকে বিক্রি করে দেয়।
প্রসূতি লাবনী জানান, ডাক্তার রনি এবং তার ছেলেকে আমি আগে থেকে চিনতাম, তাদের এলাকায় আমি বড় হয়েছি। তারাও আমাকে চেনেন। আমি তাকে (রনিকে) বলি আমার অনেক সমস্যা, টাকা-পয়সা নাই। এই কথা শুনে উনি বলে, কোনো সমস্যা নাই। টাকা-পয়সা লাগবে না। তার কথামতো আমি তার ক্লিনিকে ভর্তি হই, তারা আমার সিজার করায়। পরে আমার স্বামী টাকা জোগাড় করতে অনেক চেষ্টা করেও ব্যবস্থা করতে না পারায় ওই ডাক্তার আমাকে বাচ্চা বিক্রি করার প্রস্তাব দেয়। অনেক কান্নাকাটি করলে ডা. রনি বলে ‘এখানে মায়া কান্না করে কোনো লাভ হবে না’।
লাবনী আরও বলেন, তখন আমি ডাক্তারকে আমার স্বামীর কিডনি নিতে বলি, আমার স্বামী অনেকবার কিডনি দিতে গেছে, তখন ডাক্তার বলেছে কিডনিতে কি টাকা পরিশোধ হয়? এ সময় আমার স্বামীকে অনেক অপমানও করা হয়। লাবনী বলেন, আমার স্বামী বাধ্য হয়ে অন্য ক্লিনিকে কিডনি বিক্রি করার জন্য যায়। সেখানেও পারে নাই। পরে আমি ডাক্তারকে বলি, ‘আপনি আমার রক্ত নেন, না হয় চোঁখ নেন, অনেক হাত-পা ধরার পরেও উনি (ডাক্তার) আমার কান্নাকাটি শোনেন নাই।’
লাবনী বলেন পরে ওনারা যার কাছে বাচ্চা বিক্রি করেছে তারা আসে। আমি সন্তানকে দিতে না চাইলে আমাকে অনেক মারধর করে বাচ্চা নিয়ে যায়। আমার স্বামীর আইডি কার্ড নিয়ে যায়। তখন আমি স্বামীকে বলি তুমি সাংবাদিক আর পুলিশকে জানাও। পরে আমি থানায় আসলে পুলিশ আমাকে সাহায্য করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

এক-তৃতীয়াংশ ইহুদি-আমেরিকান কিশোর হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল

দখিনের সময় ডেস্ক: এক-তৃতীয়াংশের বেশি আমেরিকান-ইহুদি কিশোর (১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী) 'আমি হামাসের সাথে সহানুভূতিসম্পন্ন'- এমন বক্তব্যের সাথে একমত। ইসরাইলের একটি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে...

প্রতিদিন কলা খাওয়ার উপকার

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রতিদিন কলা খেলে মেলে অনেক উপকার। কলায় থাকে প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন। যে কারণে চিকিৎসকেরা নিয়মিত কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন। প্রতিদিন অন্তত দুটি...

মোহিনীর প্রেমের এআর রহমানের বিচ্ছেদ, যা বলছেন পুত্র

দখিনের সময় ডেস্ক: ব্যক্তিজীবন নিয়ে সংবাদের শিরোনামে এআর রহমান। সায়রা বানুর সঙ্গে দীর্ঘ ২৯ বছরের দাম্পত্যের অবসান। বুধবার রাতে রহমানের স্ত্রী সায়রার আইনজীবী এই খবর...

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে? জেনে নিন গতি বাড়ানোর কৌশল!

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...

Recent Comments