চারদিকে যেন কথার বৃষ্টি বর্ষিত হচ্ছে! হয়তো এ ধারা থেকে পিছিয়ে থাকতে চাননি ডিবিপ্রধান। অথবা তিনি আলোচনায় থাকার ক্ষেত্রে ডা. সাবরিনাকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেছেন। এ ব্যাপারে প্রচলিত একটি গল্প প্রাসঙ্গিক হতে পারে।
গল্পটি এ রকম, চোর মালপত্র নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি টের পেয়ে গৃহকর্তা চোরের পিছু নিলেন। টের পেয়ে মালপত্র ফেলে ভোঁ-দৌড় দিল চোর। কিন্তু মালপত্রের দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে চোরের পেছনে ছুটতে থাকলেন গৃহকর্তা। কারণ, তাকে চোর ধরতেই হবে। চোর দৌড়ায়, দৌড়ান গৃহকর্তা। কিছুক্ষণের মধ্যে তার মনে হলো, আরে আমি তো দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া লোক। চোরের পেছনে দৌড়ানো কি আমার সাজে! যেই চিন্তা সেই কাজ! তিনি চোরকে ছাড়িয়ে সামনে ছুটলেন। এই সুযোগে উল্টো দিকে ফিরে দৌড়াতে থাকল চোর রত্নটি। কিছুক্ষণ পর দৌড়ে ক্লান্ত মালিক বাড়ি ফেরার সময় দেখলেন, ফেলে দেওয়া মালপত্র চোর নিয়ে গেছে। তখন তিনি অনুধাবন করেন, প্রতিটি ঘটনায় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হওয়া কোনো কাজের কাজ নয়।
গল্পের সেই গৃহকর্তার মতো আমাদের ডিবিপ্রধানের কবে বোধোদয় হবে, তা বলা মুশকিল। হয়তো একদিন হবে, অথবা কোনোদিনই হবে না। এ বিষয়টি পরিষ্কার নয়। কিন্তু এটি খুবই পরিষ্কার, সব বিষয়ে তার কথা বলতেই হবে এবং তিনি আলোচনায় থাকবেনই। যেমনটাই ঘটে আসছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের আজকের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ প্রথম আলোচনায় আসেন জাতীয় সংসদ চত্বরে তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুককেন্দ্রিক ঘটনায়। বলা হয়, সে ঘটনাই তাকে উত্থানের শক্ত সিঁড়িতে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এরপর তিনি পেশাগত অনেক সাফল্য দেখিয়েছেন। কিন্তু এই সাফল্য অনেকটা ছাপিয়ে তিনি বারবার আলোচনায় আসছেন। এ ক্ষেত্রে সহায়ক বিষয় হচ্ছে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে আহার করানো, যা পাবলিসিটি হয়েছে, জেনেছে সবাই।
নেতা থেকে নায়িকা—সব শ্রেণির মানুষ রয়েছেন প্রকাশিত তার আপ্যায়নের তালিকায়। এ নিয়ে নানা কথা বলা হচ্ছে। সবচেয়ে মজার কথা বলেছেন হিরো আলম। সহযোগীসহ রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে ধারণ করা একটি ভিডিও ক্লিপে মধ্যাহ্নভোজের সময় ইউটিউবার আশরাফুল ইসলাম ওরফে হিরো আলমকে বলতে দেখা গেছে, ‘এটা ঠিক না। দুরকম খাবার দিচ্ছেন, ঠিক নাকি? অপু আসলে অনেক খাবার দিছেন, নেতা আসলে অনেক কিছু খেতে দিছেন। আমাদের খালি আলু ভর্তা, ডাল, ভাজি দিছেন, মাছ দিছেন।’
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
# দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শিরোনাম, ‘ডা. সাবরিনা এবং ডিবিপ্রধান’