পদ্মা ব্রিজ হওয়ার আগে বরিশাল-ঢাকা করতাম লঞ্চে। সেই পাট চুকে গেছে। নৌ-পথের পাট চুকিয়ে এখন সড়ক পথই ভরসা। সরকারি লোকদের ফ্রিস্টাইল দুর্নীতি এবং মালিকপক্ষের খামখেয়ালিতে তখন লঞ্চে যাতায়াতে মাঝেমধ্যে ‘পঞ্জ’ হারাবার অবস্থা হতো। এখন সড়কে জান যাওয়ার পরিস্থিতি হয়েছে। আর সড়কে প্রাণ গেলে যে কী দশা হয় স্বজনরা তা হাড়েহাড়ে টের পান।
শুধু তাই নয়, লাশ নিতে স্বজনদের বাপ-দাদার নাম ভুলে যাওয়ার অবস্থা হয়। যে কারণে সড়কে মারা গেলে আমার লাশ নেওয়ার জন্য স্বজনরা ভোগান্তিতে পড়ুক- তা আমি চাই না। বরং সড়কে মারা গেলে আমার লাশটি কাদের ভাইকে উৎসর্গ করে গেলাম। আর এও জানি, আমার লাশের ব্যাপারে মন্ত্রীর কোনো আগ্রহ অথবা দায়বদ্ধ থাকবে না। থাকার কোনো কারণও নেই। তবে হয়তো ‘মন্ত্রীর মাল’ হিসাবে বিবেচনায় আমার লাশ দ্রুত আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম নিয়ে যাবে। অথবা নেবে অন্য কোনো সংস্থা। হয়তো আমার লাশ দাফন হবে যথাযথ ধারায়। মাটি চাপাও হতে পারে আরো অনেক লাশের সঙ্গে। অথবা অন্য কোনো বিভ্রমে হতে পারে দাহও। অথবা পড়ে থাকতে পারে কোনো হাসপাতালের হিমঘরে। অথবা পোকার খাবারে পরিণত হতে পারে কোনো মর্গে।
আমার লাশের পরিণতি বিষয়ে আমার মোটেই ভাবান্তর নেই। যেখানে সড়কে মৃত্যুভয় সদা তাড়া করে ফেরে, সেখানে লাশের পরিণতি নিয়ে ভয় পাওয়ার সুযোগ থাকে? ক্যানসারে আক্রান্ত মানুষের কী নেইল পলিশ নিয়ে ভাবার সময় থাকে? যার আছে তার থাক, আমার নেই!
# ঢাকাটাইমস-এ প্রকাশিত ২২ এপ্রিল ২০২৪, শিরোনাম: ‘কাদের ভাইকে উৎসর্গ করলাম আমার লাশ’