Home মতামত কাদের ভাইর শরণাপন্ন হলাম

কাদের ভাইর শরণাপন্ন হলাম

কেবল মন্ত্রিত্ব নয়, জটিল সময়ে আওয়ামী লীগের মতো বিশাল দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছেন ওবায়দুল কাদের। বলা হয় জিল্লুর রহমান, মতিয়া চৌধুরীসহ হাতেগোনা যে কয়েকজনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্নাতীতভাবে বিশ্বাস করেন তাদের মধ্যে ওবায়দুল কাদের একজন। জিল্লুর রহমান না ফেরার দেশে গেছেন। কিন্তু রেখে গেছেন দৃঢ়তা ও বিশ্বস্ততার অমর দৃষ্টান্ত। সম্ভবত সেই দৃষ্টান্তই ওবায়দুল কাদেরের চিরকালীন পাথেয়।
বলা প্রয়োজন, ওবায়দুল কাদেরের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাসের ভিত্তি নিশ্চয়ই একদিনে সৃষ্টি হয়নি। এ প্রসঙ্গে ওয়ান ইলেভেনের সেই সময়কার পরিস্থিতিতে ওবায়দুল কাদেরের ভূমিকা অনেকেরই স্মরণে আছে। আর আমার স্মরণে আছে আরো অনেক আগের ঘটনা। কাদের ভাইর সাথে আমার প্রথম ঘনিষ্ঠতা ১৯৯৬ সালে। তখন তিনি রাজনীতির পাশাপাশি সাংবাদিকতা করতেন। তিনি ভালো লেখক। তিনি সাপ্তাহিক সন্দ্বীপ-এ কলাম লিখতেন, প্রধানত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রসঙ্গে। সে সময় আমি ছিলাম এ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার। প্রধান বিট ছিল রাজনীতি ও অপরাধ। ফলে রাজনীতিক এবং পুলিশ ও অপরাধীদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল, আড্ডা দিতাম। আর আড্ডায় যারা খোলামেলা ছিলেন তাদের মধ্যে কাদের ভাই অন্যতম। তিনি বরাবরই খোলামেলা প্রবণতার মানুষ।
এদিকে সাপ্তাহিক সুগন্ধায় থাকাকালে সাংবাদিক আজিজুল হক বান্না ভাইর আওয়ামীবিরোধী তির্যক লেখায় পত্রিকাটির ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছিল। বান্না ভাই ছিলেন ৭৫-এর খুনি ফারুক-রশিদ চক্রের পে- রোলের সাংবাদিক। সে সময় সুগন্ধায় আওয়ামী ঘরানার যারা কলাম লিখতেন তারা ছিলেন ‘ধরি মাছ, না ছুঁই পানি’ গোছের প্রবণতায় অতি সতর্ক। তাদের লেখায় বান্না ভাইর লেখার ব্যালেন্স হচ্ছিল না। এ অবস্থায় কাদের ভাইর শরণাপন্ন হলাম। তিনি একবাক্যে রাজি হলেন। ফলে বান্না ভাই বেশ বেকায়দায় পড়লেন। আওয়ামীবিরোধী একতরফা ব্যাটিংয়ের সুযোগ তার আর থাকলো না। সুগন্ধায় সমানে চললো ওবায়দুল কাদেরের আওয়ামী গুণকীর্তন এবং আজিজুল হক বান্নার নিন্দার ধারা। অবশ্য দুজনের লেখার মান নিয়ে মাসুদ কামালের তুলনামূলক মতামত ছিল। সে জার্নালিজমের মেধাবী ছাত্র এবং লেখার মান প্রশ্নে বেশ খুঁতখুঁতে। তিনি সব সময়ই মতামত প্রকাশে অগ্রগামী। তার কথা মন দিয়ে শুনেছি, কিন্তু রাখিনি।
সাপ্তাহিক সন্দ্বীপ ও সুগন্ধায় কাদের ভাইর লেখার বাইরে তাকে আরো ঘনিষ্ঠভাবে চেনার সুযোগ হয়েছে দৈনিক বাংলার বাণীতে কিছুদিন চাকরি করার সুবাদে। শফিকুল আজিজ মুকুল ভাইর মাধ্যমে বাংলার বাণীতে যোগদান করেছিলাম। তখন কাদের ভাই ছিলেন বাংলার বাণীর সহকারী সম্পাদক। বলা বাহুল্য, সেই সময় বাংলার বাণী মানেই আওয়ামী রাজনীতির ধারক, এগিয়ে নেওয়ার বাহন। যেনো বোরাক। অফিসে অনির্ধারিত আড্ডায় কেউ কেউ কাদের ভাইকে বলতেন, শেখ হাসিনার সমালোচনা করে কিছু লেখেন। কাদের ভাই বলতেন, ‘এখনো সময় হয় নাই।’
অবশ্য ওবায়দুল কাদেরের সেই সময় আর হয়নি, কখনো আর হবেও না। কারণ তিনি পাল্টাবার লোক নন। এমনকি তিনি মন্ত্রী হওয়ার পরও কিছুমাত্র পাল্টাননি। অথচ জিএম কাদের, জাহাঙ্গীর কবীর নানকসহ অনেককেই মন্ত্রী হওয়ার পর বেশ পাল্টে যেতে দেখেছি। যারা ক্ষমতার চেয়ারে বসে আচরণে পাল্টে যাওয়ার ধারায় অবগাহন করেন না তাদের মধ্যে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, শেখ সেলিম, তরিকুল ইসলাম, কর্নেল আকবর হোসেন, খ ম জাহাঙ্গীর, মির্জা আজমসহ অনেকেরই নাম বলতে পারবো।
# ঢাকাটাইমস-এ প্রকাশিত ২২ এপ্রিল ২০২৪, শিরোনাম: ‘কাদের ভাইকে উৎসর্গ করলাম আমার লাশ’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

ময়মনসিংহবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, নেবে ২৬১ জন

দখিনের সময় ডেস্ক: ময়মনসিংহ সিভিল সার্জনের কার্যালয় ও এর অধীন বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির ছয়টি শূন্য পদে ২৬১ জনকে নিয়োগের জন্য...

সরকারি চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, ৬টি পদে নিচ্ছে ২১৯ জন

দখিনের সময় ডেস্ক: টাঙ্গাইল সিভিল সার্জনের কার্যালয় ও এর অধীন বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির ছয়টি শূন্য পদে ২১৯ জনকে নিয়োগের জন্য...

১৭ জুন কোরবানির ঈদ, দুদিন ম্যানেজ করা গেলে ছুটি মিলবে ৯দিন

দখিনের সময় ডেস্ক: চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ঈদুল আজহা (কোরবানির ঈদ) ১৭ জুন (সোমবার) উদযাপিত হতে পারে। এতে সরকারি চাকরিজীবীদের টানা পাঁচ দিনের ছুটি...

ইন্টারনেট ছাড়াই হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো যাবে ছবি-ফাইল

দখিনের সময় ডেস্ক: বর্তমানে বিশ্বের জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে অন্যতম মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ। অনেকেই ব্যক্তিগত বা অফিসের প্রয়োজনীয় কাজে নিয়মিত এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেন। প্রতিদিন...

Recent Comments