প্রচলিত প্রবচন, ‘ঠগ বাছলে গ্রাম উজাড় এবং লোম বাছলে কম্বল উধাও।’ কয়েকদিন ধরে এ প্রবচন এবং বিএনপির প্রয়াত নেতা কর্নেল আকবর হোসেনের কথা বেশ মনে পড়ছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা এ সেনা কর্মকর্তা শুদ্ধ রাজনীতিক হায়দার আকবর খানের হাত ধরে রাজনীতিতে এসে কাজী জাফর আহমদের ইউপিপিতে সম্পৃক্ত হন। কিন্তু বেশি দিন তিনি বাম ধারায় থাকেননি। অল্প সময়ের মধ্যে তাঁর ‘গুরু’ জেনালের জিয়ার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। রাজনীতিতে আলোচিত এ নেতা আসলে বিএনপির ক্লাব ধারার রাজনীতির প্রোডাক্ট। প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের ‘বটবৃক্ষ’ রাজনীতির বিপরীতে জেনারেল জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত ‘ক্লাব’ ধারার রাজনীতি যে বাস্তবতার আলোকে কতটা সময়োপযোগী ছিল তার অকাট্য প্রমাণ ধারণ করে আছে বিএনপি। এ অবস্থান যত না নেতৃত্বের দক্ষতায়, তার চেয়ে অনেক বেশি দলটির গঠন প্রক্রিয়ার কৌশলের কারণে। একই কারণে শুরুতেই অন্য যে কোনো দলের চেয়ে এ দল হয়ে ওঠে উদার চিন্তার নেতাদের প্ল্যাটফরম। এ সময় অনেক আগাছাও প্রবেশ করেছে। এ সমস্যা ছাপিয়ে অনেক উদার রাজনীতিক জেনারেল জিয়ার দলে সমবেত হতে পেরেছিলেন। এ নেতাদের মধ্যে যাদের ঘনিষ্ঠভাবে চিনতাম তাঁদের মধ্যে আমার ঘনিষ্ঠতম হচ্ছে আকবর হোসেন। তিনি বনমন্ত্রী থাকাকালে সংসদে বলেছিলেন, ‘মাননীয় স্পিকার, বন বিভাগ চালাতে আমি কি লোক মঙ্গলগ্রহ থেকে আনব!’
সরকারের প্রশাসন নিয়ে চলমান কথাবার্তা এবং নানান ঘটনায় কর্নেল আকবর হোসেনের উচ্চারণের সঙ্গে মিলিয়ে বলা চলে- ‘প্রশাসন চালাতে ড. ইউনূস কি মঙ্গলগ্রহ থেকে লোক আনবেন?’ তা তো সম্ভব নয়। কিন্তু সোনার পাথরবাটি চাইবার মতো এমনটাই বলা হচ্ছে। টিভির টকশোতে অংশগ্রহণকারী কেউ কেউ তো প্রশাসনে কেবলই পলাতক স্বৈরাচারের ছায়াভূত দেখছেন। বলাবাহুল্য, প্রকৃত প্রস্তাবেই শেখ হাসিনার ভক্ত-অনুরক্ত-অবৈধ সুবিধাভোগী অনেকে প্রশাসনে আছেন। কিন্তু তারা কি আগের কেবলায় আছেন? নিশ্চিতভাবে বলা চলে, যারা বেশি আনুগত্য দেখিয়েছেন তারাই সবচেয়ে আগে ইউটার্ন করেছেন। এক অর্থে কেবলা বদল। আর এটি নতুন কোনো বিষয় নয়। এটি আমলাদের ইনবিল্ড প্রবণতা। ফলে বলা হয়, সরকার যায় সরকার আসে, কিন্তু আমলারা থেকে যায়। আমলাদের এ অবস্থা অনেকটা মিরপুরের আলোচিত এস এ খালেকের মতো। তিনি বলতেন- ‘আমি তো সব সময় সরকারি দল করি, সরকার পাল্টালে আমি কী করব!’ রাজনীতিকের ক্ষেত্রে এটি একটি নির্লজ্জ অজুহাত হলেও আমলাদের জন্য এটিই ইনবিল্ড প্রবণতা। যা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা হতো না। এ প্রণতার কারণে একসময় অনেকটা মিউমিউ করে বলা হতো- ‘সরকার বদলালে মন্ত্রীরা জেলে যায়, সচিবরা কেন যায় না!’
সনাতনী ধারা ভেঙে বর্তমান সরকার আমলে জেলে যাওয়ার ব্যাপারে মন্ত্রী-আমলা একাকার হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে কোনোই সংশয় নেই, বিগত সরকারের অনেক অপকর্মের মধ্যে একটি হচ্ছে, প্রশাসনকে দলদাস এবং দুর্নীতিবাজ করে তোলা। কিন্তু এদের চিহ্নিত করা হবে কীভাবে? একি ‘বঞ্চিত আলখেল্লা’ পরা কর্মকর্তাদের হাহুতাশ আর লাফালাফি দিয়ে? তা তো হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সম্ভবত তাই হয়েছে। কথিত এ বঞ্চিতদের চাপ বিবেচনায় নেওয়ার ফলে যে অবস্থা হয়েছে তার অকাট্য প্রমাণ শুরুতেই পুলিশে দগদগে ঘা হওয়ার দৃশ্য হয়েছে। আর প্রশাসন ক্যাডারে যে কোন অবস্থায় নেমেছে তা দেশবাসীর কাছে নগ্নভাবে প্রকাশিত হয়েছে ডিসি নিয়োগ কান্ডকে কেন্দ্র করে। কথিত ‘বঞ্চিতদের’ অবাঞ্ছিতদের চাপে চিড়েচ্যাপটা হয়ে এ নিয়োগ কি সততার সঙ্গে সঠিকভাবে দেওয়া গেছে? মনে হয় না! বরং এ নিয়ে বস্তাভরা টংকা লেনদেন হওয়ার খবর তো গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ ব্যাপারে অনেক ঘটনা ও রটনা আছে মানুষের মুখে মুখে। পলাতক স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আমলে প্রশাসনে একে অন্যকে সাইজ করার জন্য ‘জামায়াত-বিএনপি’ তকমা দেওয়া হতো। এ তকমা দেওয়ার হোতারা ছিলেন আসলে ধান্দাবাজ। নানান কিসিমের ধান্দাবাজের ফাঁদে পা দিয়ে যে কী পরিণতি হয় তা তো পলায়নের মধ্য দিয়ে হাতেনাতে প্রমাণ করে গেছেন পলাতক স্বৈরাচার। তকমার এ ধারা অন্ধভাবে আমলে নিলে যে সুফলের পরিবর্তে নানান ধরনের বিপত্তি ঘটে তার বহু প্রমাণ কিন্তু এরই মধ্যে বেশ সামনে চলে এসেছে। আর একই তকমার ঝড়ে যে কেবল হাসিনার কথিত ভক্তরা সাইজ হচ্ছেন তা কিন্তু নয়। বরং অনেক সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তা সাইজ হয়েছেন, হচ্ছেন। প্রসঙ্গক্রমে একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। প্রশাসন ক্যাডারের একজন অতিরিক্ত সচিব একটি করপোরেশনের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া এ আমলার দক্ষতা-সততা-নিরপেক্ষতাকে তুলনা করা হতো বিএনপি সরকার আমলে একই সংস্থার চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, অতি সম্প্রতি উল্লিখিত ওই অতিরিক্ত সচিবকে একটি মন্ত্রণালয়ের সচিব করার দুই দিনের মধ্যে ওএসডি করা হয়েছে। কী ব্যাপার? কোন অপরাধে তাঁকে সচিব হিসেবে পদোন্নতি ও নিয়োগ দেয়ার দুই দিনের মাথায় পত্রপাঠ সড়িয়ে দেয়ার যুক্তি কী? আর তার যদি কোন অপরাধ থেকেই থাকে তাহলে অতিরিক্ত সচিব থেকে সচিব করা হয়েছিল কেন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রিটিশ শাসনামলে তৎকালীন ভারতীয় সিভিল সার্ভিসে ওএসডির বিধান চালু করা হয়। যার চর্চা পাকিস্তান আমলেও বলবৎ ছিল। স্বাধীন বাংলাদেশেও সরকারি কর্মকর্তাদের ওএসডি করার নিয়ম রাখা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে ১৯৯৬ সালের একটি ঘটনা রাজনৈতিক বিবেচনায় ওএসডির সংখ্যা অতি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। সেই কেলেঙ্কারির প্রকাশ্য খলনায়ক মহীউদ্দীন খান আলমগীর। এদিকে ২০১৩ সালে হাই কোর্টে জমা দেওয়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৪ সাল থেকে নয় বছরে ওএসডি কর্মকর্তার সংখ্যা ছিল প্রায় তিন হাজার ছয় শ। ওই নয় বছরে তাদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাবদ সরকারের ব্যয় হয়েছে অন্তত ১৫১ কোটি টাকা। বর্তমানে ঠিক কতজন কর্মকর্তা ওএসডি আছেন সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা মুখে কুলুপ এঁটে আছেন। তবে ওএসডির সংখ্যা এক শর বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওএসডি কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রায় ১৬ জন সচিব ও জ্যেষ্ঠ সচিব রয়েছেন। শীর্ষ এ কর্মকর্তাদের অনেকেই ওএসডি হয়েছেন শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর। ওই তালিকায় আরও প্রায় অর্ধশত অতিরিক্ত সচিব আছেন। স্বৈরাচারী সরকারের আমলে ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণে যোগদান করেন ৪০তম বিসিএস-এ এএসপি হিসেবে নির্বাচিত ৬২। তাদের পাসিং আউট প্যারেড ছিল ২০ অক্টোবর। সমাপনী কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করতে রাজশাহীতে হাজিরও হয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। কিন্তু ঠিক আগের দিন রাতে কর্তাদের মনে পড়ল, ওই ৬২ জন স্বৈরাচারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, প্রসবের সময় কেন মনে পড়ল, ওহ! এই সন্তান তো জারজ! গত আড়াই মাসে কেন মনে পড়েনি? নিশ্চয়ই এ প্রশ্নে কোনো জবাব পাওয়া যাবে না। জীবনানন্দ দাশের একটি কবিতার পংতি ‘বলিলাম ম্লান হেসে- ছায়াপি- উত্তর দিল না।’
কবিতায় প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া গেলে তো আর বাস্তবে প্রতিক্রিয়া থেকেই যায়। যার প্রভাব কিন্তু প্রতিনিয়ত প্রকট হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, অনেক কিছু মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে অন্তর্র্বতী সরকার। সরকার এরই মধ্যে প্রায় ডজন দেড়েক সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও পিছিয়েছে, সমাধান নিয়ে সন্দিহান হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এটিকে সরকারের তথ্য ঘাটতি ও দৃঢ়তার অভাব হিসেবে চিহ্নিত করছেন। নানাবিধ দাবি এবং চাপ বিবেচনায় নিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করতে সরকার বেশ ঝামেলায় আছে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে দেশের মানুষ মহা ঝামেলায় আছে দ্রব্যমূল্য নিয়ে।
চলমান অবস্থায় অনেকেই মনে করেন রাজনীতির নামে দুর্বৃত্ত কান্ড বন্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে। কথিত বঞ্চিতদের অবাঞ্ছিত চাপ আমলে না নিয়ে সরকারের এ মুহূর্তের করণীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা। মনে রাখা প্রয়োজন, দুর্বৃত্তরা কিন্তু দুর্বৃত্তই। তা যে কোনো দলের আলখেল্লা পরাই হোক। ইঁদুর যেমন মাঠের ফসল পয়মাল করে দেয় তেমনই রাজনীতির দুর্বৃত্তরাও জনগণের ওপর জুলুম করে নড়বড়ে করে দেয় দেশ ও সরকারের ভিত্তি। আর এদের লালনপালন অথবা আশকারা দিয়ে লাভ হয় না। যার মনুমেন্ট হয়ে আছেন পলাতক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। এদিকে সাধারণের বিবেচনায়, সুদূর এবং নিকটবর্তী করণীয় নির্ধারণে সরকার ব্যর্থ না হলেও কার্যক্রম এক ধরনের ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে। দ্রব্যমূল্যে মানুষের নাকাল দশায় ক্ষোভ বাড়ছে। যদিও এই ক্ষোভের মাত্রা এখনো সীমা ছাড়িয়ে উচ্চকিত ক্ষোভে পরিণত হয়নি। তাই বলে এই জনক্ষোভ উপেক্ষা করা সমীচীন নয়। মনে রাখা প্রয়োজন, বর্তমান সরকার হচ্ছে টানেলের শেষ মাথায় ক্ষীণ আলোর মতো! জনগণের আশা-ভরসার স্থল।
# বাংলােদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত, ২৭ অক্টোবর ২০২৪। ‘প্রশাসনে লোক মঙ্গলগ্রহ থেকে আসবে’
দখিনের সময় ডেস্ক:
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এক-এগারোর সরকারের মতো দুই নেত্রীকে মাইনাস করার কোনো কৌশল এ সরকারের...
দখিনের সময় ডেস্ক:
সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে...
দখিনের সময় ডেস্ক:
অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমরা এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এই নতুন দেশে আমাদের...
দখিনের সময় ডেস্ক:
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এক-এগারোর সরকারের মতো দুই নেত্রীকে মাইনাস করার কোনো কৌশল এ সরকারের...
দখিনের সময় ডেস্ক:
সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে...
দখিনের সময় ডেস্ক:
অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমরা এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এই নতুন দেশে আমাদের...
দখিনের সময় ডেস্ক:
ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান ওমর নিজ বাড়ি ও গাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন।...
We use cookies on our website to give you the most relevant experience by remembering your preferences and repeat visits. By clicking “Accept”, you consent to the use of ALL the cookies.
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may affect your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. These cookies ensure basic functionalities and security features of the website, anonymously.
Cookie
Duration
Description
cookielawinfo-checbox-analytics
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Analytics".
cookielawinfo-checbox-functional
11 months
The cookie is set by GDPR cookie consent to record the user consent for the cookies in the category "Functional".
cookielawinfo-checbox-others
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Other.
cookielawinfo-checkbox-necessary
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookies is used to store the user consent for the cookies in the category "Necessary".
cookielawinfo-checkbox-performance
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Performance".
viewed_cookie_policy
11 months
The cookie is set by the GDPR Cookie Consent plugin and is used to store whether or not user has consented to the use of cookies. It does not store any personal data.
Functional cookies help to perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collect feedbacks, and other third-party features.
Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.
Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.
Advertisement cookies are used to provide visitors with relevant ads and marketing campaigns. These cookies track visitors across websites and collect information to provide customized ads.