হুমকীর মুখে কুয়াকাটা সৈকত, নেদারল্যান্ডের প্রযুক্তি ব্যবহার করার কথা জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী

খালিদ হাসান নাঈম:

বঙ্গোপসাগরের গ্রাসে হুমকীর মুখে পড়েছে ‘সাগর কন্যা’ কুয়াকাটা সৈকত। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্যের কুয়াকাটা হারিয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে। ক্রমে বিলুপ্ত হচ্ছে অপার সৌর্ন্দযের লীলাভুমি কুয়াকাটা সৈকতের ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নৈসর্গিক সবুজ বনরাজি। এদিকে পর্যটকদের কাছে ক্রমে হয়ে উঠছে ভীতিকর।

কুয়াকাটা সৈকতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যভূমির সবুজ বন হারিয়ে ইতোমধ্যে ভূতুরে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সৈকতের পূর্ব পশ্চিম জুড়ে দুই দিকেই শুধু ধ্বংস্তুপ।  কুয়াকাটাকে রক্ষায় স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচী পালন করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টেকসই কোন উদ্যোগ নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ড এ পর্যন্ত স্বল্প মেয়াদী যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তার কোনটিই ফলপ্রসু হয়নি।

গত দুই দশকে কুয়াকাটা সৈকতের অন্তত দেড় কিলোমিটার ভূ-ভাগ ও বিভিন্ন স্থাপনা বিলিন হয়ে গেছে সাগরের ঢেউ-এর ছোবলে। ঐতিহ্যবাহী এস এ ডাক বাংলো, ফয়েজ মিয়ার নারিকেল বাগান, তালবাগান, শাল বাগান, দুটি লেক, প্রাচীরঘেরা এলজিইডির বায়ো গ্যাস প্লান্ট কাম বিশ্রামাগার, জাতীয় উদ্যান, ঝাউবন, গঙ্গামতির লেক, লেম্বুরবনের একাংশ, ঝাউ বাগান সংলগ্ন বন বিভাগের ‘ইকো পার্ক’, শুঁটকি পল্লীর বৃহত্তম অংশ সহ অসংখ্য বাড়ি ঘরও বিলুপ্ত হয়েছে।

এমনকি কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্ব ও পশ্চিম দিকের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান সহ সবুজ বনাঞ্চল ঢেউয়ের তোড়ে বিলিন হয়েছে ইতোমধ্যে। যেকোন দুর্যোগ ছাড়াও বর্ষাকালীন অমাবস্যা ও পুর্নিমার ভরা কোটালে ফুসে ওঠা সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ সৈকতে আঘাত হানছে। এবারের ভাদ্রের বিগত বড় অমাবশ্যায় ফুসে ওঠা সাগর আরো একবার লন্ডভন্ড করেছে কুয়াকাটা সৈকত এলাকা। সবুজ বনভূমি, আবাসিক হোটেলসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধ্বংস স্তুপে পরিনত হয়েছে।

সম্প্রতি প্রতিমন্ত্রীর পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম কুয়াকাটা সৈকত পরিদর্শন করে করতে গেলে তার সামনেই ভূক্তভোগী ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন সংগঠন সৈকত রক্ষায় মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে তারা প্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ সময়  কুয়াকাটা সৈকত ভাঙ্গন রোধে নেদারল্যান্ডের প্রযুক্তি ব্যবহার করার কথা জানিয়েছেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী।