দখিনের সময় ডেস্ক ॥
অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে কথিত ‘ক্রেতা-ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন’। নকল করা হয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নাম ও লগো। বানানো হয়েছে ‘বাংলাদেশ ক্রেতা-ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন’। কথিত এই ফাউন্ডেশনই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তুলছে নিম্নমানের খাদ্যসামগ্রী তৈরি ও বিক্রির অভিযোগ। জরিমানার টাকা চেয়ে, পুলিশের ভয় দেখিয়ে লিগ্যাল নোটিশও পাঠানো হচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
৬ই সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের এক মিষ্টি ব্যবসায়ীকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠায় ‘বাংলাদেশ ক্রেতা-ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন’। নাম ও লগোতে মিল থাকায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান ভাবেন ওই ব্যবসায়ী। নোটিশে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে নিম্নমানের খাদ্যসামগ্রী তৈরি ও বিক্রির অভিযোগের কথা উল্লেখ করে জরিমানা দাবি করা হয় পনের হাজার টাকা। ভয় দেখানো হয় পুলিশের।
আকাশ সুইটমিটের পরিচালক আকাশ ঘোষ বলেন, আপনার আমাদের অফিসে আসতে হবে না। আপনি ১৫ হাজার টাকা আমাদেরকে পাঠিয়ে দিলেই হবে। পরে আমি তাদের বলি, টাকা দিব কিন্তু আমাকে ডকুমেন্ট দিতে হবে। এসময় সে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে যখন পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে তখন ডকুমেন্ট পাবা।
লিগ্যাল নোটিশে রাজধানীর ৪/৪-বি, পুরানা পল্টনের সুমন প্লাজা নামে একটি ভবনকে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অনেক খোঁজোখুজির পরও পাওয়া যায়নি এই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের অফিস। পুরানা পল্টনের বাসিন্দার বলছেন, এই সুমন প্লাজা নামে পল্টনে কোনো ভবন নেই। ৪/৪-বি ঠিকানাটিও বানানো। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতারিত হয়ে অনেকেই কথিত এই প্রতিষ্ঠানের খোঁজে আসে। বন্ধ লিগ্যাল নোটিশে দেয়া আইনজীবী কামরুল ইসলাম কাজলের ফোন নাম্বারটি।
প্রতারণা থেকে বাঁচতে ব্যবসায়ী ও ভোক্তা সবাইকে সর্তক থাকার আহ্বান জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহার। তিনি বলেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান। এটির সিলমোহর ছাড়া যদি অন্য কোন জায়গা থেকে কোন ব্যবসায়ীর কাছে নোটিশ যায়,তাহলে তাদের ডাকে সাড়া দিবেন না।
প্রতারিতদের আইনের আশ্রয় নেয়ার পাশাপশি এসব অপরাধ দমনে তথ্য দিয়ে আইন-শৃংখলা বাহিনীকে সহযোগিতার পরামর্শ পুলিশের। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন,ভোক্তা অধিকারের নামে যে প্রতারণার কথা বলা হচ্ছে তা আমাদের কাছে অভিনব মনে হচ্ছে।জনস্বার্থে অবশ্যই আমাদের এটি তদন্ত করতে হবে। কেউ যদি এসব বিষয়ে টাকা চায় তাহলে বুঝতে হবে সে প্রতারক।