Home অন্যান্য অপরাধ ও দূর্নীতি টিকটকের নামে চলে নারী পাচার ও দেহ ব্যবসাসহ ভযংকর অপরাধ

টিকটকের নামে চলে নারী পাচার ও দেহ ব্যবসাসহ ভযংকর অপরাধ

দখিনের সময় ডেস্ক:

টিকটকের নামে জড়ো হচ্ছে অপরাধী চক্র। রীতিমতো সামাজিক ব্যাধিতে রূপ নিচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘টিকটক’। উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণীরা টিকটক ব্যবহার করে জড়িয়ে যাচ্ছে ভয়ঙ্কর সব অপরাধে। সেলিব্রেটি হওয়ার ঘোরে তাদের অনেকেই বুঁদ হয়ে পড়ছে মাদকের নেশায়।

নারী পাচারের ক্ষেত্রেও ‘টিকটক’কে বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে সংঘবদ্ধ চক্র। ‘টিকটক’ কেন্দ্রিক একের পর এক অপরাধের ঘটনায় উদ্বিগ্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। গোয়েন্দারা বলছেন, অশ্লীল ভিডিও তৈরিতে জড়িত লাইকি ও টিকটকারদের তালিকা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরই মধ্যে কমপক্ষে ৫০টি গ্রুপের সন্ধান মিলেছে, যারা অশ্লীল ভিডিও  তৈরি করে। এসব ভিডিও দেখে তরুণ-তরুণীসহ শিশুরাও বিপথে যাচ্ছে। এ অবস্থায় ওই সব টিকটক ও লাইকি নির্মাণকারী এবং এসব প্ল্যাটফরমে অভিনয়কারীদের শনাক্ত করতে মাঠে নেমেছে পুলিশ ও র‌্যাব।

সারা দেশ থেকে টিকটকের আড়ালে এসব চক্রের মাধ্যমে ২ হাজারের অধিক মেয়ে পাচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কেবলমাত্র আশরাফুল মন্ডল ওরফে বস রাফি সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই পাঁচ শতাধিক নারী এরই মধ্যে পাচারের শিকার হয়েছে বলে এলিট ফোর্স র‌্যাবকে জানিয়েছেন বিভিন্ন সময় গ্রেফতারকৃতরা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্য, গত ১১ মাসে দেড় শ জনের বেশি কথিত টিকটক অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যারা বিতর্কিত এই সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে অল্পবয়সী কিশোরী থেকে তরুণী ও মধ্যবয়সী নারীদের ফাঁদে ফেলে অনৈতিক সম্পর্ক করে আসছিল। এসব নারীর অনেককে পাচারও করা হয়েছে উন্নত জীবনযাপনের প্রলোভন দেখিয়ে। দেশে টিকটকের আড়ালে মানবপাচার ও অনৈতিক বিভিন্ন কর্মকান্ডের মূলহোতা টিকটক হৃদয়, নদী আক্তার, বস রাফি, ম্যাডাম সাহিদা। এদের মধ্যে ২৮ মে ভারতে হৃদয় গ্রেফতার এবং ২২ জুন নদী আক্তার ও ৩১ মে রাফি ও ম্যাডাম সাহিদা গ্রেফতার হয় র‌্যাবের হাতে।

গোয়েন্দারা বলছেন, দেশের উঠতি তরুণ-তরুণীদের একটি অংশ এখন টিকটকসহ বিভিন্ন মিউজিক অ্যাপসমুখী। আর এই অ্যাপসকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিভিন্ন গ্রুপ। এসব গ্রুপের নারী সদস্যদের ভারত এবং দুবাইয়ের বিভিন্ন মার্কেট, সুপার শপ, বিউটি পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির অফার দিয়ে প্রলোভনে ফেলছে বহুল পরিচিত টিকটকাররা। বস রাফির অন্যতম সহযোগী ম্যাডাম সাহিদার দুই মেয়ে সোনিয়া ও তানিয়া পাচার চক্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও সক্রিয়ভাবে জড়িত। সাহিদা দেশে একটি সেফ হাউস পরিচালনা করতেন, আর তার দুই মেয়ের ভারতে রয়েছে সেফ হাউস।

অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ‘জনপ্রিয়’ টিকটকারদের বেশির ভাগই অশিক্ষিত বা অল্প শিক্ষিত। কেউ সেলুনে কাজ করে, কেউ দিনমজুরের কাজ করে। কেউবা কোনো দোকানের বিক্রয়কর্মী।এর বাইরে স্কুল, কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও কেউ কেউ টিকটকে নিজেদের বিলিয়ে দিচ্ছে। কম গতির ইন্টারনেটেও টিকটক-লাইকি অ্যাপ চালানো ও ভিডিও আপলোড করার সুযোগ থাকায় ঢাকার বাইরে এমনকি গ্রাম পর্যন্ত এদের ব্যবহারকারী বেড়ে চলেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

বিআরইউ’র সভাপতি আনিসুর, সম্পাদক খালিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির (বিআরইউ) সভাপতি আনিসুর রহমান খান স্বপন (নিউ এইজ / ঢাকা ট্রিবিউন) আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন খালিদ সাইফুল্লাহ (নয়া...

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জল

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে নিহত মাসুদ কামাল তোফাজ্জলের জানাজা শেষে বরগুনার পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে...

অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর গ্রেফতার

দখিনের সময় ডেস্ক: চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেফতার হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তাকে আটক করা হয়। নিউমার্কেট থানার...

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম...

Recent Comments