Home অন্যান্য অপরাধ ও দূর্নীতি আইসিইউ-কেন্দ্রিক ব্যবসার ফাঁদ পেতে অবৈধ ব্যবসা চালাচ্ছিলেন সারোয়ার

আইসিইউ-কেন্দ্রিক ব্যবসার ফাঁদ পেতে অবৈধ ব্যবসা চালাচ্ছিলেন সারোয়ার

দখিনের সময় ডেস্ক:

পর্যাপ্ত আইসিইউ চিকিৎসা সেবা রয়েছে, এমন আশ্বাস দিয়ে দালাল চক্রের মাধ্যমে সরকারি হাসপাতাল থেকে নিজের ক্লিনিকে রোগী ভাগিয়ে আনতেন গোলাম সারোয়ার (৫৭) নামের এই ব্যক্তি। তিনি ‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। আইসিইউ-কেন্দ্রিক ব্যবসার ফাঁদ তৈরি করে তিনি অবৈধ ব্যবসা করে আসছিলেন।

একটি শিশু মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আজ শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তারের সময় তাঁর মালিকানাধীন হাসপাতালটির বিভিন্ন অনিয়ম দেখতে পান র‌্যাব সদস্যরা। আজ রাজধানীর কাওরান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল  মঈন এ তথ্য জানান।

কমান্ডার খন্দকার আল  মঈন বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার(৬জানুয়ারী) রাজধানীর শ্যামলী এলাকায় ‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল’ থেকে দাবি করা টাকা দিতে না পারায় আয়েশা আক্তার নামে এক নারীর দুই যমজ সন্তানকে এনআইসিইউ থেকে বের করে দেওয়া হয়। এমনকি টাকা দিতে না পারায় ওই নারীকে শারীরিকভাবে হেনস্তাও করেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম সারোয়ার। পরে প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন আয়েশা আক্তার এবং ১০ হাজার টাকা সংগ্রহ করে ওই হাসপাতালের ফার্মেসির বিল পরিশোধ করেন। এরপর একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে যমজ দুই শিশুর মধ্যে একজন মারা যায়। এই ঘটনার পরপরই শিশুটির মা বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। অপর শিশুকে তাৎক্ষণিক ঢাকা মেডিকেলের এইচডিইউতে ভর্তি করান। বর্তমানে শিশুটি আগের চেয়ে অনেকটাই সুস্থ আছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামি জানিয়েছেন, ১৯৯২ সালে তিনি প্রাণিবিদ্যায় মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ২০০০ সাল থেকে প্রায় ৬টি (রাজারবাগ, বাসাবো, মুগদা, মোহাম্মদপুর ও শ্যামলী এলাকায়) হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রায় এক বছর ধরে শ্যামলীতে ‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল’ প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যবসা শুরু করেন। আগের অভিজ্ঞতা থেকে এই হাসপাতালের সঙ্গেও দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন তিনি। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগীদের ফুসলিয়ে এই হাসপাতালে নিয়ে আসা হতো। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যখনই তদারকি এবং মনিটরিংয়ের জন্য লোকজন আসতো, তখন বাইরে থেকে চিকিৎসক ও নার্স এনে সবকিছু ঠিকঠাক করে রাখা হতো। অন্যান্য সময় হাসপাতালটি ফাঁকা পড়ে থাকত। চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মতো ব্যবস্থাও থাকত না।

হাসপাতাল পরিচালনার বিধি অনুযায়ী সার্বক্ষণিক ৩ জন চিকিৎসক ডিউটিরত থাকার কথা থাকলেও সেখানে মাত্র একজন চিকিৎসক ডিউটিতে থাকতো। হাসপাতালটিতে ২টি আইসিইউসহ ৩০টি বেডের অনুমোদন রয়েছে। তবে এই হাসপাতালে ৬টি আইসিইউ রয়েছে। অর্থাৎ ৪টি আইসিইউ বেশি। এছাড়া ভেন্টিলেটর রয়েছে ২টি। ৯টি এনআইসিইউ থাকলেও ইনকিউভিটর আছে মাত্র ১টি। ১৫টি সাধারণ বেড রয়েছে। মূলত আইসিইউ-কেন্দ্রিক ব্যবসার ফাঁদ তৈরি করে তিনি অবৈধ ব্যবসা করে আসছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

মাদকের নতুন ডিজি মোস্তাফিজুর, বরিশালের কৃতি সন্তান

দখিনের সময় ডেস্ক: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) পদে নিয়োগ পেয়েছেন অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। বর্তমানে তিনি গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। মোস্তাফিজুর...

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চাকরি, নেবে ৮৫ জন

দখিনের সময় ডেস্ক: কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির ছয়টি শূন্য পদে ৮৫ জনকে নিয়োগের জন্য এ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। ১৬ মে থেকে আবেদন...

চ্যাটজিপিটির নতুন চমক, ব্যবহার করা যাবে বিনামূল্যে

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রযুক্তি বিশ্বে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ওপেনআই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চালিত চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি। এবার প্রযুক্তির দুনিয়ায় আরো একটি আমূল...

ভারতে আইকনিক নিনজা ৪০০’র উৎপাদন কেন বন্ধ করল কাওয়াসাকি

দখিনের সময় ডেস্ক: ভারতে আইকনিক নিনজা ৪০০’র উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে কাওয়াসাকি। বাজারে নিনজা ৫০০ লঞ্চের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই আইকনিক নিনজা ৪০০-র যুগের অবসান...

Recent Comments