Home অন্যান্য অপরাধ ও দূর্নীতি কানা জুয়েলের মিথ্যা মামলায় অতিষ্ঠ চরমোনাইবাসী

কানা জুয়েলের মিথ্যা মামলায় অতিষ্ঠ চরমোনাইবাসী

মশিউর রহমান তাসনিম, চরমোনই থেকে ঘুরে এসে:

বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়ন নানান কারণে সুপরিচত। কিন্তু এই পরিচয়কে কলংকিত করার দিকে নিয়ে যাচ্ছেন জনৈক কানা জুয়েল। কেউ আবার তাকে ল্যাংরা জুয়েল হিসেবেও চেনেন। এইসব নানান পরিচয় ছাপিয়ে তার প্রধান পরিচয় হয়ে দাড়িয়েছে মামলাবাজ হিসেবে। কেউ কেউ তাকে ডাকেন ‘মামলা জুয়েল’ বলেন। কেউ কেউ কানা জুয়েলের পৈত্রিক নামটিই ভুলতে বসেছেন।

জমিজমা বিক্রয়ের নামে প্রতারণা এবং দুর্বল ব্যক্তিদের মামলায় ফাসানোর ধারা কানা জুয়েল পেয়েছেন পৈত্রিক সূত্রে। তার বাবাও এই কাজ করতেন। বাবার ধারা থেকে কানা জুয়েল মুক্ত থাকবেন- এমনটি ধারণা করেছিলো এলাকাবাসী। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। বরং বাবার চেয়েও এক কাঠি সরেসম হয়েছে এই কানা জুয়েল। উল্লেখ্য, কানা জুয়েল বিএ পাস এবং বরিশাল শহরের পোর্টরোডে তার ক্রোকারিজের ব্যবসাও আছে। এরপরও জমি নিয়ে প্রতারণা এবং অন্যকে মামলায় ফাসানোর ‘পৈত্রিক ব্যবসা’ ছাড়তে পারেনি কানা জুয়েল।

চরমোনাইতে কানা জুয়েলের মিথ্যা মামলার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন উত্তম দাস, মাহবুব. মিরাজ, অপু দাশ, রহিমা, শিউলী, মো: ফেরদাউস, জাহাঙ্গীর প্রমুখ। এ মধ্যে মো: ফেরদাউসের বিরুদ্ধে কানা জুয়েল মামলা করেছে অন্তত ১১টি। এর মধ্যে আদলতে খারিজ বা পুলিশী তদন্তে মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে ৭টি মামলা। আদালতে বিচারাধীন ও পুলিশী তদন্তাধীন রয়েছে ৪টি মামলা।

এখানেই শেষ নয়। নিতাই দাস ও উত্তম দাসের বিরুদ্ধে কানাজুয়েল মিথ্যা মামলা দিয়েছেন অন্তত ১২টি। প্রতিবন্ধি দেলোয়ার ও তার আত্মীয়ে নামে ২টি। রাজিয়া সুলতানা ও তার আত্মীয়দের বিরুদ্ধে কানা জুয়েল একাধিক মামলা করেছেন। আফতাব আলী, মকবুল হোসেন, আয়শা বেগম, শিউলী বেগম ও তার বাবাসহ বহুলোকের বিরুদ্ধে কানা জুয়েলের দায়ের করার মামলার সংখ্যা পায় একশ। আর এই সকল মামলায় স্বাক্ষী ঘুরেফিরে কয়েকজন মুখ চেনা ব্যক্তি। যাদের সংখ্যা ৯ থেকে ১০ জন। এদের মধ্যে প্রধান হচ্ছেন আনোয়ার খা, কমল, সেলিম, হারুন প্যাদা, রাজা, ইউনুস প্রমুখ।

মামলাবাজ কানা জুয়েলের রয়েছে রাজনৈতিক পরিচয়ও। আগে সে ছিলো বিএনপির কর্মী, পরিচিত ছিলো ছালাম রাড়ীর কাছের লোক হিসেবে। কিন্তু অধুনা তিনি আওয়ামীলীগে ভেরার চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে এবারের ইউপি নির্বচনের সময় হুজুরদের দলে ভিড়ে গেছেন কানা জুয়েল। হুজুরদের দল তাকে গ্রহণ করেছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সবাই জানেন, কানা জুয়েল নিজেকে হুজুরদের দল ইসলামী আন্দোলনের লোক হিসেবে বড় গলায় পরিচয় দিয়ে থাকেন।

হুজুরদের দলের লোক হিসেবে পরিচয় দিয়ে কানা জুয়েল এক ধরনের অঘোষিত প্রটেকশন পাচ্ছেন। তবে এলাকায় ধুমায়িত হচ্ছে জনরোষ। উল্লেখ্য, বছর কয়েক আগে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে কানা জুয়েলের বাড়ী ঘেরাউ করেছিলো। সেবার ভাগ্য গুণে প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলো কানা জুয়েল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

ধর্মীয় নেতা থেকে যেভাবে ইরানের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন এব্রাহিম রাইসি

দখিনের সময় ডেস্ক: এব্রাহিম রাইসি ছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ এক কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতা, ২০২১ সালে যিনি রাষ্ট্রপতি হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পর...

ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক

দখিনের সময় ডেস্ক: হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ সব আরোহীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ...

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট এব্রাহিম রাইসির মৃত্যু

দখিনের সময় ডেস্ক: ইরানের প্রেসিডেন্ট এব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আবদোল্লাহিয়ানসহ হেলিকপ্টারে থাকা সবাই নিহত হয়েছেন বলে ইরানের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম প্রেসিডেন্ট...

কে ‍এই এব্রাহিম রাইসি

দখিনের সময় ডেস্ক: ইরানে প্রেসিডেন্ট এব্রাহিম রাইসি দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনির ঘনিষ্ঠ দৃঢ়চেতা ধর্মীয় নেতা। তিনি দেশটির শীর্ষ বিচারপতি এবং তার মতাদর্শ অতি-রক্ষণশীল।...

Recent Comments