Home অন্যান্য নির্বাচিত খবর এবারও বিদ্রোহীদের কাছে ধরাশায়ী আওয়ামী লীগ

এবারও বিদ্রোহীদের কাছে ধরাশায়ী আওয়ামী লীগ

দখিনের সময় ডেস্ক:

ষষ্ঠ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহীদের কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। অনেক ইউপিতে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীও ছিল না আওয়ামী লীগ প্রার্থী। জামানতও হারিয়েছেন অনেকেই। ২১৬ ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে ১১৭টিতে এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী-স্বতন্ত্র ও অন্যান্য দলের প্রার্থী জয়ী হয়েছেন ৯৯টিতে।

এ ধাপে আওয়ামী লীগে জয় পেয়েছে ৫৪.১৭ শতংশ ইউপিতে। ৩১ জানুয়ারি সোমবার এ ধাপের ভোট হয়। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ছয় ধাপে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মোট ২ হাজার ১৩৩টিতে জয় পেয়েছে। প্রথম ধাপে ২৬৯, দ্বিতীয় ধাপে ৪৮৫, তৃতীয় ধাপে ৫২৫, চতুর্থ ধাপে ৩৯৬, পঞ্চম ধাপে ৩৪১ ও ষষ্ঠ ধাপে ১১৭টিতে জয়ী হয়।

ষষ্ঠ ধাপে ২১৬ ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগে ১১৭, স্বতন্ত্র ৯৫, জাতীয় পার্টি ৩, জাতীয় পার্টি-জেপি ১টি জয় পেয়েছে। ইভিএমে এ ধাপে মোট ভোট পড়েছে ৬৯.০৭ শতাংশ। সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে ৫৩.৭৩ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে ৮৭.৮৮ শতাংশ।

পঞ্চম ধাপে আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে ৪৯.২৭ শতাংশ ইউপিতে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র-বিদ্রোহী ও অন্যান্য দল ৫০.৭২ শতাংশ ইউপিতে বিজয়ী হয়েছে। ইসি জানিয়েছে, পঞ্চম ধাপে ইসির প্রকাশিত ৯৯২ ইউপির ফলাফলে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ৩৪১টি, স্বতন্ত্র ৩৪৬টি, জাতীয় পার্টি ২টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ১টি ও জমিয়তে উলামায়ে  ইসলাম বাংলাদেশ ১টিতে জয় পেয়েছে।

বিগত চার ধাপের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে ৪৮.৫১ শতাংশ ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে পরাজিত হয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৫১.৪৯ শতাংশ এবং স্বতন্ত্র, জাপাসহ অন্যান্য দল ৪৮.৫১ শতাংশ ইউপিতে বিজয়ী হয়েছেন। নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত ৭৯৬ ইউপির ফলাফল বিশ্লেষণে এই তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২৭ ইউপিতে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন দেয়নি।

তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪৭.০৬ শতাংশ ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে পরাজিত হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৫২.৯২ শতাংশ; স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৪৪.৯৫ শতাংশ ও জাপাসহ অন্যান্য দল ২.১১ শতাংশ ইউপিতে জয় পেয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের মধ্যে প্রায় ৪২ শতাংশই পরাজিত হয়েছেন। যদিও প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা ৭৩.৪৮ শতাংশ বিজয়ী হয়েছিলেন। আর ওই ধাপে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছিলেন ২৪.২২ শতাংশ ইউপিতে।

গত ১১ নভেম্বরের দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ৫৮.২৭ শতাংশ জয়ী হয়েছেন। বাকি ৪১.৭৩ শতাংশ নৌকার প্রার্থী নিজ দলের বিদ্রোহী, স্বতন্ত্র (বিএনপি), অন্যান্য দলের প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হয়েছেন। এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন ৩৯.৫৬ শতাংশ। তাদের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত নেতারাও আছেন। প্রথম ধাপে গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বরের ভোটে নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা ৭৩.৪৮ শতাংশ ইউপিতে জয়ী হন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছিলেন ২৪.২২ শতাংশ ইউপিতে।

আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- ষষ্ঠ ধাপের ইউপি ভোটে বগুড়ার সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবু জাফর ফরাজী নৌকা প্রতীকে মাত্র ১৩৩ ভোট পেয়েছেন। এ ইউনিয়নে মোটরসাইকেল প্রতীকে রাজিবুল ইসলাম খান রাজু ৩ হাজার ৫১০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ফাঁপোর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শফি মাহমুদ নৌকা প্রতীকে মাত্র ৬০৬ ভোট পেয়েছেন। এ ইউনিয়নে অটোরিকশা প্রতীকে মেহেদী হাসান ২ হাজার ৮৬ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার ইউপি নির্বাচনে জামানত হারিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত দুই ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী। এদের মধ্যে একজন হলেন পাকুল্যা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও পাকুল্যা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জুলফিকার রহমান টিটো এবং অপরজন দিগদাইড় ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আলী তৈয়ব শামীম। পাকুল্যা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী জুলফিকার রহমান টিটো পেয়েছেন ৬৯০ ভোট এবং দিগদাইড় ইউনিয়নে আলী তৈয়ব শামীম পেয়েছেন ১ হাজার ২৪৬ ভোট।

ষষ্ঠ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ৫ ইউনিয়ন ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিন ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইভিএম-এ অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে দুই উপজেলার ৮ ইউনিয়নের মধ্যে ৫টিতেই আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের ভরাডুবি হয়েছে। ষষ্ঠ ধাপে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার আট ইউনিয়নে ভোট হয়েছে। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে মাত্র একটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী জয় পেয়েছেন। এ ছাড়া ছয়টিতে স্বতন্ত্র ও অন্যটিতে জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙল প্রতীকের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে খোর্দ্দ কোমারপুরে নৌকা পেয়েছে ৮৪৫ ভোট।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

মানবাধিকার কর্মী মিনা ফারাহকে জামায়াত আমিরের ফোন

দখিনের সময় ডেস্ক: বিশিষ্ট কলামিস্ট, অনলাইন এক্টিভিস্ট ও মানবাধিকারকর্মী মিনা ফারাহকে ফোন করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় তিনি বাংলাদেশের কঠিন...

পঞ্চগড়ে চা খামারিদের ক্ষমতায়নে ইউসিবির কর্মশালা

দখিনের সময় ডেস্ক: ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবি) সম্প্রতি পঞ্চগড় জেলার চা খামারিদের জন্য একটি কর্মশালা আয়োজন করেছে। চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে আর্থিক...

সন্তানের অত্যাচারে শতবর্ষী বৃদ্ধের আত্মহত্যা

দখিনের সময় ডেস্ক: সৈয়দ আলী আকনে (১০৪) নামের এক শতবর্ষী বৃদ্ধের আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে বিষপানে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। সৈয়দ আলী পিরোজপুরের ইন্দুরকানী...

গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: সিইসি

দখিনের সময় ডেস্ক: নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, নির্বাচন আয়োজন করতে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা দরকার। সবার সহযোগিতা...

Recent Comments