Home শীর্ষ খবর সয়াবিন তেলের জন্য হাহাকার, কৃত্রিম সংকটের ফাঁদ

সয়াবিন তেলের জন্য হাহাকার, কৃত্রিম সংকটের ফাঁদ

দখিনের সময় ডেস্ক:

বাড়তি আমদানি খরচ ও সংকট দেখিয়ে দফায় দফায় দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সর্বশেষ গত ৭ ফেব্রুয়ারি লিটারপ্রতি খোলা সয়াবিনে সাত টাকা এবং বোতলজাতে আট টাকা দাম বাড়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে অস্থির হয়ে উঠেছে সয়াবিন তেলের বাজার। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি দামে বাজারে ছাড়া হচ্ছে। ভোক্তার পকেট কাটতে সুযোগ নিচ্ছেন খুচরা বিক্রেতারাও।

চারদিকেই সয়াবিন তেলের হাহাকার। গত এক সপ্তাহ ধরেই খোলা তেলের বাজার লাগামছাড়া। সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ টাকা বেড়েছে খোলা সয়াবিন (সুপার) ও পামওয়েল। ১৬৫ থেকে ১৭৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে খোলা তেল, যা সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি। গত সপ্তাহে খুচরায় খোলা তেল ১৫৪ থেকে ১৬২ টাকার মধ্যে পাওয়া গেলেও এখন পাইকারিতেই ১৬১ থেকে ১৬২ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে বলে জানান কারওয়ানবাজারের মেসার্স যমুনা স্টোরের বিক্রেতা মো. ওয়াসিম। খুচরা এ বিক্রেতা বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়েই খোলা তেল এখন কম রাখছেন দোকানে। অনেকে তো বিক্রিই বন্ধ রেখেছেন, যা পাওয়া যাচ্ছে তার দাম অনেক।’

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দামে। গত সপ্তাহের শুরুতে প্রতি লিটার বোতলের তেল ১৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ১৮০ টাকায় পৌঁছেছে। পাঁচ লিটারের বোতলের দাম গিয়ে ঠেকেছে ৮৫০ টাকায়। যদিও কিছু দোকানে আগের দামেই তেল পাওয়া যাচ্ছে। এর কারণ জানতে চাইলে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, দোকানে বোতল তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। কোম্পানিগুলো সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। অনেকে বন্ধও রেখেছে।

ব্যবসায়ী মো. মুজাহিদ আমাদের সময়কে বলেন, ‘দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের পর থেকে কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে না। করলেও তা অনেক কম। আমাদের চাহিদার অর্ধেক তেলও সরবরাহ করছে না তারা। জিজ্ঞেস করলে বলছে- প্রোডাকশন বন্ধ আছে।’ একই কথা জানালেন মালিবাগবাজারের মেসার্স গাজী স্টোরের ব্যবসায়ী মো. মাসুদ রানাও, ‘কোম্পানিগুলোর কাছে তেল চেয়ে পাওয়া যাচ্ছে না। দোকানে মাত্র কয়েক বোতল তেল রয়েছে। অন্যান্য দোকানেও একই অবস্থা। তাই অনেকে বেশি দামে বিক্রি করছেন।’

এদিকে ক্ষুব্ধ ভোক্তারা বলছেন, দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের খবরে ব্যবসায়ীরা কারসাজি করছেন। বাড়তি লাভের আশায় তেল লুকিয়ে ফেলছেন তারা। ইচ্ছেমতো বোতলের দাম হাঁকাচ্ছেন। খোলা তেলের দাম বোতলের চেয়েও বেশি। নজরদারিতে ঘাটতি এবং ত্রুটিপূর্ণ বাজার ব্যবস্থাপনার কারণে বারবার এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে এবং ভোক্তারা এর মাসুল দিচ্ছেন বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, নিবিড় নজরদারি ও ব্যবস্থাপনার ফাঁক গলে চতুর ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম হঠাৎ বাড়িয়ে দিয়ে অল্প সময়ে অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছেন। চাল, ডাল, তেল ও পেঁয়াজের মতো অতিপ্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যগুলোর দিকে সরকারকে আরও নজর দিতে হবে। কেবল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নয়, পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে অর্থ মন্ত্রণালয়কেও আরও উদ্যোগী হতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

শিবিরকে প্রকাশ্যে রাজনীতি চর্চার আহ্বান ছাত্রদল সেক্রেটারির

দখিনের সময় ডেস্ক: বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে প্রকাশ্যে গণতান্ত্রিক রাজনীতি চর্চার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সেক্রেটারি নাসির উদ্দিন। মঙ্গলবার দৈনিক কালবেলার সঙ্গে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় নাসির...

দাঁতে ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়

দখিনের সময় ডেস্ক: দাঁতের ক্ষয়, চোয়াল বা দাঁতের মধ্যে সংক্রমণ, মাড়ির রোগ বা আঘাতের মতো বিভিন্ন কারণে দাঁত ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা দৈনন্দিন সব...

শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন: সোহেল তাজ

দখিনের সময় ডেস্ক: সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল বলেছেন, শেখ হাসিনা আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।...

১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন হতে অন্তর্র্বতী সরকারকে সাহায্য করবে সেনাবাহিনী: জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান

দখিনের সময় ডেস্ক: সেনাপ্রধান বলেছেন রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ১৮ মাসের মধ্যে যেন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে, সে জন্য অন্তর্র্বতী সরকারকে সাহায্য করবে সেনাবাহিনী।‘যাই হোক...

Recent Comments