বরিশাল পতনের পর নেতা-মুক্তিযোদ্ধা-সাধারণ মানুষ উদভ্রান্তের মতো পালাচ্ছিলো। অন্তত অবস্থান ত্যাগ করেছেন কমবেশি সবাই। কিন্তু এই ধারার বাইরে ছিলেন তৎকালীন বরিশাল শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত চৌধুরী। জালাল সর্দারের নির্দেশ মতো তিনি তখনও তেলের ট্যাংকার পাহারা দিচ্ছিলেন।
মনসুরুল আলম মন্টুর ভাষ্যমতে ভারত যাবার পথে তিনি এনায়েত চৌধুরীকে তাদের সঙ্গে যাবার জন্য বলেছেন। কিন্তু সে বলেছে, ‘বললাম না আমার এখানে ডিউটি। ডিউটি রেখে কি করে যাই। তারপর একটু ভেবে বললো, বরিশাল যখন আক্রমন শুরু হয়েছে, দেখি অর্ডার আসে কিনা।’
এ ঘটনার সঙ্গে অনেকটাই মিলে যায় ১৭৯৮ সালে ইংল্যান্ড ও ফ্রাঞ্চের মধ্যে ‘ব্যাটল অফ নাইল’ হিসেবে খ্যাত ভয়াবহ যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত ক্যাচাবিয়াংকা কবিতার সঙ্গে। যে কবিতার প্রধান চরিত্র ১২/১৩ বছরের কিশোর ক্যাচাবিয়াংকা একেরপর এক গোলা বর্ষনের পরও এডমিরাল বাবার নির্দেশ ছাড়া জাহাজ ত্যাগ করতে পারছিলো না।
১৭৯৮ সালের প্রেক্ষাপটে কিশোর ক্যাচাবিয়াংকা জন্য যেমন নির্দেশ আসেনি তেমনই নির্দেশ আসেনি ১৯৭১ সালের বাস্তবতায় যুবক এনায়েত চৌধুরীর জন্য। হুবহু মিল। তবে পার্থক্য হচ্ছে, আদেশ না পেয়েও এনায়েত চৌধুরী তেলের জাহাজ ত্যাগ করেছিলেন, ২৭ এপ্রিল। এ প্রসঙ্গে এনায়েত চৌধুরী বলেন, জাহাজ পাস করে যারা যাচ্ছিলো তার সবাই আমাকে জাহাজ ত্যাগ করতে বলছিলো। এক পর্যায়ে আমার সঙ্গে থাকা আর্মাররাও জাহাজ ত্যাগ করার পক্ষে মত দিলো। শেষতক আর তেলের জাহাজ পাহারা দেয়া সম্ভব হয়নি।
‘নির্দেশ আসেনি’- বলে এনায়েদ চৌধুরীর জাহাজ ত্যাগ না করা প্রসঙ্গে অন্যরকম ভাষ্য আছে। মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাবিক নুরুল আলম ফরিদ বলেছেন, অবস্থান ত্যাগ করা প্রসঙ্গে কোন ধরনের ‘নির্দেশ’ প্রয়োজন ছিলো না। বরং আগেই বলা ছিলো, বরিশালের পতন হলে কি করতে হবে। কাজেই সবাই যখন নিরাপদ অবস্থানে যাচ্ছেন তখন তেলের জাহাজ আকড়ে থাকার কোন যুক্তি ছিলো না। তা ছাড়া শহর ছাত্রলীগে তার কমিটির সেক্রেটারি মনসুরুল আলম মন্টু তাকে সঙ্গে যবার জন্য আহাবানও জানিয়েছিলেন।
এ ব্যাপারে এনায়েত চৌধুরীর বক্তব্য হচ্ছে, জালাল সর্দারের মতো দ্বায়িত্বশীল ব্যক্তি আমাকে যে দ্বায়িত্ব দিয়েছেন তা ত্যাগ করতে হলে তিনি জনাবেন- এ ধারণা আমার দৃঢ় ছিলো। পরে মুরতজা রহমান মানিকের কাছে শুনেছি, নবগ্রাম রোড দিয়ে মনজু ভাইর মামা বাড়ির দিকে পালিয়ে যাবার সময় জালাল ভাই বারবার আমাকে খবর দেবার তাগিত বোধ করেছেন। তিনি বারবার বিষয়টি প্রকাশও করেছেন। তবে পরিস্থিতি অনুকুলে ছিলো না। এদিকে আমি আদেশের অপেক্ষায় ছিলাম। যদিও আমাকে জাহাজ ছাড়তে হয়েছে বাধ্য হয়েই, বিনা আদেশে।
সূত্রমতে কোটি টাকার সম্পদ বিবেচনা করে এনায়েত চৌধুরীকে ওয়েল ট্যাংকার পাহারা দেবার দায়িত্ব দিয়েছিলে জালাল সর্দার। কিন্তু জাহাজ ত্যাগ করার অর্ডার তিনি আর দিতে পারেননি। তখন কে কাকে অর্ডার দেয়! সবাই তো পালাচ্ছিলো। কোন রকম আদেশ না পেয়ে ২৭ এপ্রিল বিকেলে তেলের জাহাজ ছেড়ে এনায়েত চৌধুরীকেও পালাতে হয়েছিলো। এমনকি মুক্তিযোদ্ধা সেজে যারা তাকে পালাতে সহায়তা করেছিলো তাদের হাতেই খুন হবার আশংকা দেখা দিলো। প্রাথমিক অবস্থায় তাকে রক্ষা করলো এক বয়স্ক মহিলা। অভুক্ত মানুষটিকে পরম মমতায় খেতেও দিয়েছিলেন অচেনা এই মমতাময়ী নারী।
এরপর এনায়েত চৌধূরী ঝালকাঠির দিকে পালাবার পরিকল্পনা করেন। এজন্য তাকে মেইন রাস্তায় তুলে দেবার অনুরোধ করলেন। তখনও মৃত্যুভয় তার পিছু ছাড়েনি। এর মধ্যেই ভাগ্যক্রমে নিরাপদ বলয় পেয়ে গেলেন তিনি। একদল গরুর ব্যাপারী গরু দিয়ে ঝালকাঠির দিকে যাচ্ছিলো। এনায়েত চৌধুরী এই বলয়ের মধ্যে ডুকে পড়লেন। মিশে গেলেন চলমান গরু ব্যাপরাীদের সাথে। রাতের আঁধারে তখন তাকে চিহ্নিত করা সহজ ছিলো না।
দখিনের সময় ডেস্ক:
দেশের বাইরে গিয়ে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডে বিভিন্ন পণ্য ও সেবা কিনতে সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করেন কয়েকটি দেশে। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে...
দখিনের সময় ডেস্ক:
বিশ্বে মাছ উৎপাদনে শীর্ষ দেশগুলোর একটি হচ্ছে বাংলাদেশ। সরকারের দাবি অনুযায়ী, দেশটি মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রতিবছর মাছ উৎপাদন হয় ৪৯ লাখ মেট্রিক টন।...
দখিনের সময় ডেস্ক
বিরাজমান আইনে শুধু সুইসাইড নোটের ভিত্তিতে শাস্তি দেয়া যায় না। তবি এটি মামলায় গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য হিসেবে গণ্য হয়। সাক্ষ্য আইন ১৮৭২–এর ৩২...
এ নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই, মূল ক্ষমতা নিজ হাতে রেখে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শক্তভাবে দেশ চালাচ্ছেন। এরপরও প্রশ্ন আছে, প্রধানমন্ত্রী কাদের মাধ্যমে দেশ...
দখিনের সময় ডেস্ক:
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। রাজভবনে কর্মরত অস্থায়ী এক নারী কর্মচারী এই অভিযোগ এনেছেন। ইতিমধ্যেই কলকাতার হেয়ার...
দখিনের সময় ডেস্ক:
বর্তমানে বিশ্বের জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে অন্যতম মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ। অনেকেই ব্যক্তিগত বা অফিসের প্রয়োজনীয় কাজে নিয়মিত এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেন। প্রতিদিন...