Home অন্যান্য অপরাধ ও দূর্নীতি বাজার সয়লাব নকল ঘি-মাখনে, বিক্রি হয় নামী-দামী সুপার শপেও

বাজার সয়লাব নকল ঘি-মাখনে, বিক্রি হয় নামী-দামী সুপার শপেও

দখিনের সময় ডেস্ক:

মানহীন ডালডা, পাম অয়েল, পানি, ফ্লেভার ও রঙ মিশিয়ে তৈরি করা হয় নকল ঘি ও মাখন। পরে দেশের নামিদামি অনেক খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কারখানা হয়ে এগুলো চলে যাচ্ছে মানুষের ঘরে ঘরে। এমনকি জনপ্রিয় অনেক কোম্পানির মোড়কে সুপার শপে বিক্রি হয় এসব নকল পণ্য।

মানহীন পণ্য খেয়ে প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। কিন্তু অপরাধীরা থেকে যাচ্ছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। বেকারি পণ্য তৈরির একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো স্নেহজাতীয় পদার্থ। এসব খাদ্যপণ্য মানুষের শরীরের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর বলে জানিয়েছেন রোগতত্ত্ববিদ ও আইইডিসিআরের প্রাক্তন পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, ডালডা ও পাম অয়েলে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এগুলোতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা মানুষের রক্ত দ্রুত জমাট বাধার কারণ। এসব পণ্য খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়।

মানসম্পন্ন বেকারি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানের মার্জারিন (মাখনের বিকল্প) ব্যবহার হয়ে থাকে। অন্যদিকে সাধারণ প্রতিষ্ঠানগুলো ডালডা বা বনস্পতি ব্যবহার করে। সে দিক থেকে দেশে এ জাতীয় পণ্যের একটি বড় বাজার রয়েছে।

এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন রাজধানীর ভাসানটেকের লিটন তালুকদার। ৭ বছর আগেও লিটন মিরপুরের একটি স্থানীয় বেকারির ডেলিভারি বয় হিসেবে কাজ করতেন। এরপর তিনি মিরপুর সাড়ে ১১, পল্লবী বাসস্ট্যান্ডে ‘আহসান’স হট কেক’ নামে একটি ছোট পরিসরে দোকান খোলেন, যেটি তার একমাত্র দৃশ্যমান বৈধ ব্যবসা। তারপর শুরু করেন নকল-ভেজাল ঘি ও মাখন তৈরির ব্যবসা। সেই থেকেই দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রসিদ্ধ ব্র্যান্ডের নামে অবৈধভাবে ভেজাল খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছেন তিনি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, লিটন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী কারখানা করে অনুমোদন ছাড়াই বালতি, মগ, ড্রাম ইত্যাদি ব্যবহার করে নকল ঘি, মাখন ও মার্জারিন তৈরি করে আসছেন। এগুলো বাজারজাত করার ক্ষেত্রে তিনি ভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করে থাকেন। এসব পণ্য বাজারজাত করতে তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটাসহ বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির মোড়ক ব্যবহার করেন।

এ বিষয়ে লিটনের কারখানার সাবেক কারিগর মো. ফারুক  বলেন, লিটনের অস্থায়ী কারখানায় পাম অয়েল, পানি ও মার্জারিন মিলিয়ে তৈরি করা হয় মাখন। পাম অয়েল ও ডালডা মিশিয়ে তৈরি করা হয় ঘি। এসব ঘি বিক্রি করা হয় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজিতে এবং মাখন বিক্রি করা হয় ৬২০ টাকা কেজিতে। এ ছাড়া কালার কেমিক্যাল পেস্ট ও বিভিন্ন ধরনের জিংক অক্সাইড রঙ মিলিয়ে তৈরি করা হয় পেস্টি কেকের ক্রিম। এসব পণ্য ছড়িয়ে দেওয়া হয় ঢাকাসহ সারাদেশে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

শিবিরের ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষণা শিগগিরই: শিবির সভাপতি

দখিনের সময় ডেস্ক ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, দু-একদিনের মধ্যে সেক্রেটারিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। গতকাল শনিবার রাতে গণমাধ্যমকে...

সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান গ্রেপ্তার

দখিনের সময় ডেস্ক সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরীকে রাজধানীর আদাবর থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রবিবার রাজধানীর...

শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার

দখিনের সময় ডেস্ক: কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপে বাড়ির সামনে থেকে তাহমিনা আক্তারের (৭) নামে এক শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত...

স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, থানায় এসে স্বামীর আত্মসমর্পণ

দখিনের সময় ডেস্ক: রাজধানীর পল্লবীতে শামসুন্নাহার (৫২) নামের এক নারীকে নিজ হাতে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন তার স্বামী। ঘাতক স্বামীর নাম মোখলেছুর রহমান (৫২)।...

Recent Comments