দখিনের সময় ডেস্ক:
পদ্মা সেতু নিছক নদীর বুকে দাঁড়িয়ে থাকা একটা অবকাঠামো নয়। এই সেতু দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির এক নতুন ভিত। যেখান থেকে শুরু হতে পারে নতুন এক বাংলাদেশের যাত্রা। দেশের আত্মমর্যাদার প্রতীক হয়ে ওঠা পদ্মা সেতুকে এভাবেই মূল্যায়ন করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, পরিকল্পিতভাবে এগুলে সেতুকে ঘিরেই গড়ে উঠবে নতুন অর্থনৈতিক করিডোর।
দীর্ঘ যানজট কিংবা ফেরি আসা না আসার সঙ্কট আর যাত্রাপথের অনিশ্চয়তা কাটিয়ে বাংলাদেশ এখন বহুল প্রত্যাশার পদ্মা বহুমুখী সেতুর নতুন যাত্রায়। ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙা হয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্য পৌছুতে যেখানে দিনটাই শেষ হয়ে যেতো, সেখানে এখন ঢাকার দূরত্ব হবে সময়ের হিসেবে মাত্র দেড় থেকে দুই ঘন্টার।
শুধু যাতায়াতের করিডোর হিসাবেই নয়, পদ্মা সেতুকে নতুন অর্থনৈতিক করিডোর হিসেবও দেখছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। যেখানে কমবে সময় আর সড়ক দুর্ঘটনা। বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক ড. হাদিউজ্জামান জানান, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর দূরত্ব ও সময় কমিয়ে আনার অর্থনৈতিক মূল্যই ব্যাপক।
আর বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এম শামসুল হক বলেছেন, ২১টি জেলার মানুষের জীবন মান উন্নয়নের মূল ভিত্তি তথা অর্থনৈতিক মেরুদন্ড তৈরি হবে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে। তিনি জানান, এখন প্রয়োজন পদ্মা বহুমুখী সেতুকে ঘিরে পরিকল্পিত ভূমি ব্যবস্থাপনার কাজটি করা। তাহলে সেতুকে ঘিরে তৈরি হবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের নতুন করিডোর।
এই দুই বিশেষজ্ঞ জানান, আকাশ, সড়ক আর নৌপথ- এই ত্রিমাত্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সমানভাবে কাজে লাগানো গেলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের জীবনে তা সরাসরি প্রভাব ফেলবে। আর সেখানে মূল লাইফ লাইনটা হয়ে উঠবে পদ্মা বহুমুখী সেতু। দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়কপথ এবং নিচের স্তরটিতে একটি একক রেলপথ।
পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসানো হয়েছে। ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ নির্মিত হয়েছে দেশটির সবচেয়ে বড় এ সেতু। যা এখন যান চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। ২৫ জুন জকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান ও আয়োজেন মাধ্যমে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।।