দখিনের সময় রিপোর্ট ॥
তীব্র শীত ও হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত জনজীবন। প্রচ- শীতে অনেকটা কাবু হয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকার জনজীবন। পৌষের শুরুতেই উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত। কেবল উত্তর অঞ্চল নয়, শীতের প্রকোপ সারাদেশেই। দেশের ২৩ জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরণের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই শৈত্যপ্রবাহ থাকতে পারে আরো কয়েকদিন। এই শৈত্যপ্রবাহ কেটে যাবার পর আবার আসবে আরেক দফার শৈত্যপ্রবাহ। এমনটাই মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।
মেঘাচ্ছন্ন আকাশ আর ঠান্ডা বাতাসে হিমশিম খেতে হচ্ছে দেশের মানুষকে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে তীব্র শীত চলবে আরো কয়েক দিন। এদিকে আসছে শৈত্যপ্রবাহ। এদিকে অন্যান্য এলাকার তুলনায় রাজধানী ঢাকায় শীত তুলনামূলক কম পড়লেও এই শৈত্যপ্রবাহে কাবু হয়ে পড়েছে নগরবাসীও। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত বিভিন্ন রোগ নিয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে হাসপাতাল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগীর সংখ্যা।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে প্রচ- শীত বিরাজ করছে। শীতের সঙ্গে বাতাস। ফলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘরের বাইরে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বাধ্য না হলে বাসার কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। কুয়াশায় চারদিক অনেকটা অন্ধকার হয়ে থাকে কোনকোন অঞ্চল। বয়স্ক আর শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলছেন, দেশের ওপর দিয়ে একটি যে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছিল, সেটা শেষ হয়ে গেছে। তবে দিনে তাপমাত্রা কম থাকায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। সেটা আরো কয়েকদিন থাকতে পারে। তিনি বলছেন, উত্তর-পশ্চিম শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ (জেড বায়ু) বেশি সক্রিয় থাকায়, মেঘলা আকাশ এবং ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের আলো আসতে পারছে না। বাতাসে জলীয় বাষ্পে আর্দ্রতাও বেশি। ফলে দিনে তাপমাত্রা না বাড়ায় ঠান্ডা জেঁকে রয়েছে।
ঘন কুয়াশার কারণে গত শুক্রবার রাতে পদ্মার পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরি চলাচল পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়। গত শনিবার সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও কুয়াশার কারণে চার ঘণ্টা বিমান চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। আবহাওয়া দপ্তর বলছে, এ মাসের শেষের দিকে আরেকটি শৈত্যপ্রবাহ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলছেন, কালকের পর আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হবে। ঠান্ডা ভাবটা কিছুটা কমে যাবে। তবে এই মাসের শেষের দিকে আরেকটি মৃদু বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে।
উল্লেখ্য, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে হলে সেটি শৈত্যপ্রবাহ বলে ধরা হয়। ফলে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ওপরে হওয়ায় শৈত্যপ্রবাহ কেটে গেছে বলে আবহাওয়াবিদরা বলছেন। আগামী কয়েকদিনের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, চলতি মাসের শেষদিক ছাড়াও জানুয়ারির প্রথমদিকে আরেকটি মৃদু বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। দেশের উত্তরাঞ্চলে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।