দখিনের সময় ডেস্ক:
বরিশালে দালালের খপ্পরে পড়া এক গ্রাম্য রোগীর পক্ষাবলম্বন করে কথা বলায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ও কর্মচারীর হামলায় সিটি কর্পোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপি সদস্য গিয়াসউদ্দিন বাবুল মোল্লা নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার দুপুর ১টার দিকে নগরীর জর্ডন রোডের গেইন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ঘটনাস্থল এবং হাসপাতাল পরিদর্শন করলেও হামলায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি। ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
বাবুল মোল্লার ভাই কালাম মোল্লা বলেন, কোরবানির পশু কেনার আলোচনার জন্য তার ভাই সাবেক কাউন্সিলর বাবুল মোল্লা জর্ডন রোডের ৫ ওই ভবনের ৪ তলায় তার ভাড়া ফ্ল্যাটে আসছিলেন। ভবনের সামনে পৌঁছার পর ‘নিউরো সার্জন ডা. অমিতাভ সরকার’-এর নাম নিয়ে এক রোগীর সাথে ডায়াগনস্টিক কর্মচারী ও অটোরিকশা চালকের বাদানুবাদ শুনে সেখানে দাড়িয়ে রোগীর পক্ষাবলম্বন করেন বাবুল মোল্লা।
ডা. অমিতাভ সরকার’ জর্ডন রোডে নয়, সদর রোডের চেম্বারে প্রাইভেট প্রাকটিস করেন বলে রোগীকে বলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক ‘হালারে মার, অটো দিয়া চাপা দে’ বলতেই অটোচালক বেশী রোগীর দালাল অটোরিকশা দিয়ে তাকে ধাক্কা দেয়। এ সময় ডায়াগনস্টিক মালিকের ছোট ভাই ডাক্তারের ছদ্মবেশধারী এক ব্যক্তি লাঠি দিয়ে তার ভাইয়ের মাথায় আঘাত করে। এতে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। দ্রুত তাকে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাবুল মোল্লাকে (৬২) মৃত ঘোষণা করেন।
বাবুল মোল্লার মরদেহ রাখা হয় মেডিকেলের লাশ ঘরে। খবর পেয়ে সিটি কর্পোরেশনের সাবেক ও বর্তমান কাউন্সিলর এবং বিএনপি’র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা হাসপাতালের লাশ ঘরের সামনে ভিড় করেন।
এদিকে সাবেক কাউন্সিলরের মৃত্যুর খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল জর্ডন রোডের গেইন ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। তবে হামলাকারীদের কাউকে আটক করতে পারেনি।
কালাম মোল্লা আরও বলেন, রোগীর সাথে প্রতারণার প্রতিবাদ করায় প্রাণ গেছে তার ভাইয়ের। এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবী করেন তিনি। সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র-২ কেএম শহীদুল্লাহ সহিদ বলেন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বাবুল মোল্লা। হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবী জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. লোকমান হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য পাওয়া যাচ্ছে না। লাশের ময়নাতদন্ত হবে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভূঁঞা বলেন, অপরাধী যত বড় হোক তাকে ছাড় দেয়া হবে না। এ বিষয়ে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।