Home বরিশাল আলো ঝলমলে বরিশাল শহরের উল্টো দিকে ভাঙ্গনের তান্ডব, মানুষের হাহাকার

আলো ঝলমলে বরিশাল শহরের উল্টো দিকে ভাঙ্গনের তান্ডব, মানুষের হাহাকার

দখিনের সময় ডেস্ক:

কীর্তনখোলা নদী পশ্চিম তীরে আলো-ঝলমলে বরিশাল বিভাগীয় শহর। এর ঠিক উল্টো দিকে নদী ভাঙ্গনের তান্ডব। মানুষের নিত্য হাহাকার। অথচ এই ভাঙ্গন রোধে খোদ প্রানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের আশ্বাস দিয়েছিছেন। এর পর কেটেগেছে তিন বছর। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে ফাইল পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে।

বরিশাল শহরের ঠিক ওপারে চরকাউয়ার একাংশে ভাঙনকবলিত মানুষের হাহাকার নিত্য দিনের। নিজের বসতভিটা হারিয়ে কেউ অন্যের জমিতে, কেউ ভাড়া বাসায় থাকছেন। মাঝখানে কীর্তনখোলা নদী। ভুক্তভোগীরা বলছেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কোনো সহায়তা করছেন না। এমনকি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার তিন বছর অতিবাহিত হলেও নদী ভাঙন ঠেকাতে প্রাথমিক পদক্ষেপও নেওয়া হয়নি। ফলে এক গ্রামের ৩০ পরিবারের ভিটে-মাটি গিলে খেয়েছে কীর্তনখোলা নদী।

যদিও পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, তিনটি স্থানে ভাঙন ঠেকাতে ৫৩৫ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। পাস হলে শিগগিরই কাজ শুরু হবে। এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের কীর্তনখোলা নদী তীরবর্তী ছোট্ট গ্রামের বিশাল এলাকাজুড়ে ভাঙছে। বর্তমানে ভাঙনের মুখে রয়েছে বিল্ডিং, পুল, আর বাড়ির আঙিনা। বাসিন্দারা নিজস্ব উদ্যোগে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও তাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা লিটন হাওলাদার বলেন, বিগত ৭-৮ বছর ধরে কীর্তনখোলা আমাদের গ্রামটি ভাঙছে। একটি এলাকা ভেঙে বিলিন হয়ে যাচ্ছে অথচ তাদের দেখা নেই।

নুরজাহান বেগম বলেন, আমার বসতভিটা সব নদীতে নিয়ে গেছে। নিজের জমি হারিয়ে এখন অন্যের জমিতে কুড়ে ঘর তুলে থাকি। আমাদের আসনের এমপি হলেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী। তিনি এসেছিলেন অনেক আগে। কিন্তু ভাঙন ঠেকাতে কোনো উদ্যোগ নেননি।

আনসার নামে একজন বলেন, একেক জন বাসিন্দা ৭-৮ বার ঘর সরিয়েছেন। তারপরও রক্ষা হয়নি। কমপক্ষে ৩০টি ঘর নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। আমরা এখন সব হারিয়ে অন্যের বাড়িতে ভাড়া থাকি।  তিনি বলেন, পানিমন্ত্রী (পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী) এক জুনে এসে আশ্বাস দিয়ে গেলেন ভাঙন ঠেকাবেন। তারপর দুই বছর পার হয়ে গেল। ভাঙন ঠেকাতে কোনো কাজই শুরু হয়নি।

এক নারী বলেন, আমার স্বামীকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়েছিলাম। বাড়ি থেকে খবর গেল নদী ভাঙনে বাড়িঘর নিয়ে গেছে। খবর শুনে আমার স্বামী স্ট্রোক করে সঙ্গে সঙ্গে মারা যান। তার দাফনও করতে হয়েছে অন্যের জমিতে। তিনি বলেন, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এসেছিলেন দুই বছর আগে। আশ্বাস দিয়েছিলেন আমাদের বাড়িঘর রক্ষায় কাজ করবেন। তিনি আমাদের আসনের এমপি। কিন্তু আমাদের জন্য কিছুই করেনি।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেছেন গদবাধা কতঅ। তিনি বলেন, চরকাউয়া, চাঁদমারি এবং জাগুয়ায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রকল্প প্রস্তাবনা করা হয়েছে। সেটি এখন পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। যে কোনো সময়ে পাস হয়ে যাবে। পাস হলে ভাঙন রোধে কাজ শুরু করা হবে। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে ভাঙন ঠেকাতে প্রাথমিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

প্রতিদিন কলা খাওয়ার উপকার

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রতিদিন কলা খেলে মেলে অনেক উপকার। কলায় থাকে প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন। যে কারণে চিকিৎসকেরা নিয়মিত কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন। প্রতিদিন অন্তত দুটি...

মোহিনীর প্রেমের এআর রহমানের বিচ্ছেদ, যা বলছেন পুত্র

দখিনের সময় ডেস্ক: ব্যক্তিজীবন নিয়ে সংবাদের শিরোনামে এআর রহমান। সায়রা বানুর সঙ্গে দীর্ঘ ২৯ বছরের দাম্পত্যের অবসান। বুধবার রাতে রহমানের স্ত্রী সায়রার আইনজীবী এই খবর...

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে? জেনে নিন গতি বাড়ানোর কৌশল!

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...

প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করলে কী হয়?

দখিনের সময় ডেস্ক: ওজন কমানো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হতে পারে। কঠোর ডায়েট অনুসরণ করা, খাবারের প্রতি লোভ নিয়ন্ত্রণ করা, প্রতিদিন জিমে যাওয়া, কঠোর ওয়ার্কআউট করা...

Recent Comments