আল্লাহ ছাড়া এখন আমার আর কেউ নেই: কলি

দখিনের সময় ডেস্ক:

ব্যাংকার জীবন কৃষ্ণ রায়ের ফাঁদে পড়ে জীবন যাবার উপক্রম হয় নায়িকা কলির, আর পা হারাতে বসেছেন ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসায়। সকল আশা ছেড়েদিয়েছেন তিনি। সবশেষ ডাক্তারের কথা শুনে মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েন তিনি। বললেন,  ‘আল্লাহ ছাড়া এখন আর আমার কেউ নেই।’

জনতা ব্যাংকের রাজধানীর আরামবাগ শাখার এজিএম জীবন কৃষ্ণ রায়ের ফাঁদে পড়ে নায়িকা সিমি ইসলাম কলি প্রথমে হারিয়েছেন ৮০ লাখ টাকা। এই টাকা ফেতে চাইলে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়। তার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য পায়ের কেটে দেয়া হয়। কিন্তু ভাগ্যক্রমে তার জীবন রক্ষা পায়। কিন্তু পা হারাতে বসেছেন ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসায়।

সিমির সঙ্গে কথা বলে জানাযায়, ব্যাংকার জীবন কৃষ্ণ রায়ের একটা পালিত মেয়ে ছিল। যিনি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে একটা ছেলের সঙ্গে ঘর ছাড়েন। এরপর ২০১৪ সালে শিল্পকলা একাডেমিতে সিমিকে দেখে তার সেই পালিত মেয়ের মতো দেখতে বলে জানান জীবন কৃষ্ণ রায়। বলেন, ‘তুমি আমার মেয়ের মতো দেখতে।’

গত ২৯ জুলাই রাতে নরসিংদীর শিবপুর ও রায়পুরা থানার সংযোগস্থল খইনপুর কুটিরবাজার ব্রিজের কাছে তাকে হত্যার জন্য সন্ত্রাসীরা তার পায়ের রগ কেটে দেয়। এ ছাড়া তার চোখ উপড়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যাচেষ্টাও করে।  কিন্তু ভাগ্যক্রমে বেচে যান সিমি ইসলাম কলি।

এরপর সেখান থেকে সিমি ইসলাম কলি নরসিংদীর সদর হাসপালে যান । ডাক্তার  অনেকক্ষণ পর আসেন। অবস্থা খারাপ দেখে তারা দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। এ সময় রক্ত বন্ধ করার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপর অ্যাম্বুলেন্স করে তিনি ঢাকায় এসে মগবাজার ইনসাফ বারাকাহ (ইনসাফ বারাকাহ কিডনি এন্ড জেনারেল হাসপাতাল) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি হন।

সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে পরীক্ষা করে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। এরপর ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে (ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) যান কলি। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় নিউরো সাইন্স হাসপাতালে (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল)। সেখানে  সারাদিন ফেলে রেখে রাতে অপারেশন করা । তারপর তাকে  পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে  কিছুদিন ভর্তি থেকে  চিকিৎসা নেন সিমি ইসলাম কলি।

এরপও কলির পায়ের অবস্থা দিনদিন খারাপ হতে থাকে। এ অবস্থায় তিনি ধানমন্ডির ল্যাব এইড হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। সেখানে পরীক্ষা করে জানানো হয়, ‘ভুল চিকিৎসা হয়েছে।’ মূল রগের পাশে আরও কিছু শিরা ও ধমনি (রক্তনালি) থাকে। সেখানে একটি শিরা গিঁট দেওয়া। আর এ কারণে রক্ত প্রবাহ হচ্ছে না। তাই আবার অপারেশন করতে হবে। যেহেতু অনেকদিন হয়ে গেছে আর সেখানের অবস্থাও (মূল রগ ও রক্তনালি) ভালো না। তাই এই অপারেশনে ভালো সম্ভাবনা মাত্র ১০%।

নায়িকা কলি বলেন,  আমি জানি না কোন হাসপাতালে আমার ভুল চিকিৎসা হয়েছে। আমি ন্যায়বিচার পাচ্ছি না, আবার সঠিক সেবাও পেলাম না। এখন ভুল চিকিৎকার কারণে আমার জীবন যেতে বসেছে।