দখিনের সময় ডেস্ক:
থাইল্যান্ডের রানির মতো পোশাক পরে বিক্ষোভ করার অভিযোগে এক অধিকারকর্মীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত। রানির মতো পোশাক পরে রাজতন্ত্রের অবমাননা করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত সোমবার এই দণ্ড দেয়া হয়।
ওই অধিকার কর্মীর নাম জাতুপর্ন ‘নিউ’ সাইউয়েং (২৫)। ২০২০ সালে ব্যাংককে এক রাজনৈতিক বিক্ষোভের সময় তিনি গোলাপি রঙের একটি পোশাক পরেছিলেন। তবে তার বিরুদ্ধে আনা রাজতন্ত্র অবমাননার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। জাতুপর্ন বলেছেন, তিনি কেবল ঐতিহ্যবাহী একটি পোশাক পরেছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ২১০ জনে প্রতিবাদকারীর বিরুদ্ধে রাজতন্ত্র অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু তার আগের তিন বছরে দেশটিতে কঠোর রাজতন্ত্র অবমাননার আইনটি কার্যকরই ছিল না।
রাজা ও রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সমালোচনা নিষিদ্ধে কঠোর আইন রয়েছে থাইল্যান্ডে। ২০১৯ সালে রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন থাইল্যান্ডের সিংহাসনে আরোহণ করেন। তারপর থেকে প্রতাপশালী থাই রাজতন্ত্র সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত লোকজনের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যাপক কঠোর দমন-পীড়ন চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।
স্থানীয় মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো সোমবার আদালত যে রায় ঘোষণা করেছে তার তীব্র সমালোচনা করেছে। প্রাথমিকভাবে জাতুর্পনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও পরে তা কমিয়ে দুই বছর করা হয়েছে।
২০২০ সালে ব্যাংককে এক বিক্ষোভ-প্রতিবাদে গোলাপি রংঙের সিল্কের একটি পোশাক পরেছিলেন। বিক্ষোভস্থলে তিনি লালগালিচার ওপর দিয়ে হেঁটে যান। এ সময় তার মাথার ওপরে একজন ছাতা ধরে ছিলেন। থাইল্যান্ডের রানি সুথিদাকে প্রায়ই সরকারি অনুষ্ঠানে সিল্কের পোশাক পরতে দেখা যায়। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠানে থাই রাজপরিবারের সদস্যদের মাথার ওপর ছাতাও ধরে থাকেন একজন।
আদালতের রায় ঘোষণার আগে মার্কিন বার্তা সংস্থা এপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জাতুপর্ন বলেছেন, ‘কাউকে বিদ্রুপ করার কোন উদ্দেশ্য আমার ছিল না। আমি সেদিন থাই ঐতিহ্যের আদলে নিজের জন্য একটি পোশাক পরেছিলাম।’
ওই বছর রাজা ভাজিরালংকর্নের কন্যারা একটি ফ্যাশন শো আয়োজন করেছিলেন। সেই ফ্যাশন শো’র সময়ে আন্দোলনকারীরা ব্যাংককে রাজতন্ত্র এবং সামরিক সরকারের ওপর রাজপরিবারের প্রভাবের সমালোচনা করে ফ্যাশন শো আয়োজন করেন।
তবে রাজতন্ত্র অবমাননার এসব ঘটনায় কোনও মন্তব্য করেনি থাই রাজপরিবার। থাইল্যান্ডের আন্দোলনকারীরা প্রাথমিকভাবে সেনা-সমর্থিত সরকারকে লক্ষ্যবস্তু করলেও পরবর্তীতের তাদের সমালোচনার কেন্দ্রে চলে আসে নতুন রাজা ও রাজপরিবারের সদস্যরা।