Home শীর্ষ খবর মিয়ানমার সংকটে জাতিসংঘের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মালয়েশিয়া

মিয়ানমার সংকটে জাতিসংঘের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মালয়েশিয়া

দখিনের সময় ডেস্ক:
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব মিয়ানমারে চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভূমিকায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। শুক্রবার(২৩ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেছেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিরাপত্তা পরিষদ উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাদের কাছ থেকে এমন প্রতিক্রিয়া ‘খুবই দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব বলেন, কারও কারও মতে, নিরাপত্তা পরিষদ (মিয়ানমারের) বিষয়টিতে হাত ধুয়ে ফেলেছে এবং সেটি যেন আসিয়ানের (দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট) হাতে তুলে দিয়েছে। ইসমাইল সাবরি বলেন, আসিয়ানের ‘পাঁচ-দফা ঐকমত্য’ প্রস্তাবকে নতুন করে প্রাণ দেওয়া দরকার। ওই প্রস্তাবনায় অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ, একজন বিশেষ দূত নিয়োগ এবং সব অংশীদারদের নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
আসিয়ানের অন্যতম সদস্য মালয়েশিয়া। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জানান, আসিয়ানের ‘পাঁচ দফা ঐকমত্য’ প্রস্তাব বাস্তবায়নে কোনো অর্থপূর্ণ অগ্রগতি না থাকায়, বিশেষ করে মিয়ানমারের জান্তার দিক থেকে হতাশ মালয়েশিয়া। বর্তমান রূপ নিয়ে আসিয়ানের ‘পাঁচ দফা ঐকমত্য’ আর চলতে পারবে না।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এটিকে ‘নতুন গৃহযুদ্ধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যাতে কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
মিয়ানমারের সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপের দাবিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের অন্যতম সোচ্চার কণ্ঠ মালয়েশিয়া। তারা শুরু থেকেই মিয়ানমার জান্তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে নির্বাচিত রাজনীতিবিদদের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার জন্য জাতীয় ঐক্যের সরকারের (এনইউজি) সঙ্গে আলোচনায় বসতে আসিয়ানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে। এ ছাড়া ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া এবং সিঙ্গাপুর ক্ষমতা ছাড়ার সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণার জন্য মিয়ানমারের জেনারেলদের চাপ দিচ্ছে।
এদিন রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও কথা বলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। ১৯৫১ সালের ‘কনভেনশন অন দ্য স্ট্যাটাস অব রিফিউজি’ এবং ১৯৬৭ সালের প্রোটোকলে স্বাক্ষরকারী না হলেও কেবল মানবিক কারণে প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী গ্রহণ করেছে মালয়েশিয়া।
২০১৭ সালে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর বর্বর নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম। এর আগেও এসেছিল কয়েক লাখ। সবমিলিয়ে সাড়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। মিয়ানমারে এখনো রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দেখা হয়। সেখানে তারা নাগরিকত্ব, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার মতো অনেক মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

প্রতিদিন কলা খাওয়ার উপকার

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রতিদিন কলা খেলে মেলে অনেক উপকার। কলায় থাকে প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন। যে কারণে চিকিৎসকেরা নিয়মিত কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন। প্রতিদিন অন্তত দুটি...

মোহিনীর প্রেমের এআর রহমানের বিচ্ছেদ, যা বলছেন পুত্র

দখিনের সময় ডেস্ক: ব্যক্তিজীবন নিয়ে সংবাদের শিরোনামে এআর রহমান। সায়রা বানুর সঙ্গে দীর্ঘ ২৯ বছরের দাম্পত্যের অবসান। বুধবার রাতে রহমানের স্ত্রী সায়রার আইনজীবী এই খবর...

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে? জেনে নিন গতি বাড়ানোর কৌশল!

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...

প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করলে কী হয়?

দখিনের সময় ডেস্ক: ওজন কমানো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হতে পারে। কঠোর ডায়েট অনুসরণ করা, খাবারের প্রতি লোভ নিয়ন্ত্রণ করা, প্রতিদিন জিমে যাওয়া, কঠোর ওয়ার্কআউট করা...

Recent Comments