Home শীর্ষ খবর সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আপোষহীন রাষ্ট্রনায়ক

সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আপোষহীন রাষ্ট্রনায়ক

দখিনের সময় ডেস্ক:

মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বরাবরই আপোষহীন রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূল এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেওয়া পদক্ষেপ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রশংসিত হয়েছে। মিয়ানমারে নৃশংসতার শিকার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে যে মানবিকতার পরিচয় তিনি দিয়েছেন, তা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছে।

দেশকে উন্নত বিশ্বের কাতারে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপকল্প ২০৪১ ঘোষণা করেন। নদীমাতৃক বাংলাদেশের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ ও ভৌত উন্নয়নের জন্য তিনি ১০০ বছরের ‘ডেলটা প্ল্যান বা বদ্বীপ পরিকল্পনা’ ঘোষণা করেছেন। পরশ-পাথর ধারিণী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্পর্শে দেশের সকল স্তরে যেন লেগেছে উন্নয়নের সোনালী ছোঁয়া।

দেশের এই সার্বিক উন্নয়নের ধারায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পরশ-পাথরের ছোঁয়া দেওয়ার সুযোগ রাতারাতিই পেয়ে যাননি। হাঁটতে হয়েছে পিতার মতই বহু কন্টকাকীর্ণ পথ। বঙ্গবন্ধুর ন্যায় শত বাধা-বিপত্তি, হুমকি এবং জেল-জরিমানাসহ নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করতে হয়েছে দিনের পর দিন। এমনকি হত্যার উদ্দেশ্যে কমপক্ষে ১৯ বার মতান্তরে ২২ বার সশস্ত্র হামলার শিকার হতে হয়েছে তাকে। হাল ছাড়েননি তিনি। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ অর্জন করেছে গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা। শেখ হাসিনা ভাত-ভোট এবং সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য অবিচল থেকে চালিয়ে গেছেন নিরন্তর সংগ্রাম। যেই সংগ্রাম তীব্রতর হয়েছিল শোকাবহ ’৭৫ এর পর।

১৫ আগস্ট, ১৯৭৫, বাংলার ইতিহাসে সংঘঠিত হয় এক নির্মম ও জঘন্য হত্যাকাণ্ড। শেখ হাসিনা তখন স্বামী-সন্তান, ছোট বোন শেখ রেহানাসহ অবস্থান করছিলেন বেলজিয়ামে। দেশে না থাকায় সেদিন তারা প্রাণে বেঁচে গেলেও জীবনে গভীরতম সংকট নেমে আসে; শুরু হয় দুঃসহ এক জীবনের পথ চলা। প্রথমে জার্মানি এবং পরে ভারতে নির্বাসিত জীবন যাপন করতে বাধ্য হন তিনি।

এদিকে, দেশে শুরু হয় এক মহা ক্রান্তিকাল। জাতীয় চার নেতাকে কারাগারে হত্যা করায় গভীর সংকট দেখা দেয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। বাংলাদেশের রাজনীতি চলে যায় স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে। এক সময়ের প্রগতিশীলদের বড় অংশই ক্ষমতার লোভে সামরিক শাসকের সহযোগী হয়ে দেশের সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করতে থাকে। পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের মধ্যে দেখা দেয় বিশ্বাসের চরম ঘাটতি। এ সময় দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছে শতভাগ আস্থাশীল নেতৃত্বের দাবি ওঠে দল ও দলের বাইরে সর্বস্তরে। উদ্ভূত পরিস্থিতি ও বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় অনিবার্য হয়ে ওঠে দিল্লিতে নির্বাসিত বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে দলের দায়িত্ব প্রদানের। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮১ সালের ১৩-১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ইডেন হোটেলে অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন। এ সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি করে নেওয়া হয়।

শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচনের মাধ্যমে শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়। শুরু হল দলের নেতাকর্মীদের দৌড়ঝাঁপ। দলীয় নেতাকর্মীদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় বঙ্গবন্ধুর পরিবার এবং বিশ্বস্ত নেতৃবৃন্দ (শেখ সেলিম, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, ডা. এস এ মালেক, জিল্লুর রহমান, আবদুস সামাদ আজাদ, আবদুর রাজ্জাকসহ অনেকে) দিল্লি গিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে তাকে দেশে প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে রাজি করাতে সমর্থ হন। ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮১ তারিখে শেখ হাসিনার সঙ্গে সেই সাক্ষাতে পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশে প্রত্যাবর্তনসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে বেশ কয়েকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ সভায় আলোচনার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয় যে, ১৭ মে ১৯৮১ শেখ হাসিনা ঢাকায় ফিরবেন। সেই অনুযায়ী ১৬ মে ১৯৮১ দিল্লি থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে কলকাতা আসেন এবং ১৭ মে বিকেলে কলকাতা থেকে বিমানযোগে জীবনের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে ঢাকায় আসেন দেশের মানুষকে ভালোবেসে, পরিবার ও বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশে। এতে করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসীরা যেন আবার দেখতে পেল নতুন এক অত্যুজ্জ্বল আশার আলো। শুরু হলো দারুণ এক অনুভূতি নিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী মুক্তিকামী মানুষের অপেক্ষার পালা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

সংস্কার নিয়ে সরকার ও বিএনপির কোনো বিরোধ নেই: তারেক রহমান

দখিনের সময় ডেস্ক: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে অন্তর্র্বতী সরকারের সঙ্গে বিএনপির কোনো বিরোধ নেই। সংস্কার আগে, নাকি নির্বাচন — এমন...

সংঘাত এড়িয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান সরকারের

দখিনের সময় ডেস্ক: শিক্ষার্থীদের কোন ধরনের সংঘর্ষে না জড়িয়ে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। বলা হয়েছে, এ ধরনের সংঘাতের পেছনে কোনো ধরনের ইন্ধন থাকলে তা...

আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে যাত্রাবাড়ী-ডেমরায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

দখিনের সময় ডেস্ক: আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আজ সোমবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের...

ছেলের কুড়ালের আঘাতে বাবার মৃত্যু

দখিনের সময় ডেস্ক: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ছেলের কুড়ালে আঘাতে মামুন মিয়া (৬১) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। রোববার (২৫ নভেম্বর) রাতে উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের কলাজুরা...

Recent Comments