বরিশাল জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাড. এ কে এম মুরতজা আবেদীন মনে করেন, ২৩ সেপ্টেম্বরের ঘটনায় বরিশাল জাতীয় পার্টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। দৈনিক দখিনের সময়-এর সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। তাঁর মতে এ ঘটনায় ‘বোরখার ভিতরের লোক’ প্রকাশ্যে আসার মতো ঘটনা ঘটেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ সেপ্টেম্বর বরিশাল নগরীর কীর্তনখোলা কমিনিউটি সেন্টারে জেলা জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভার আহ্বান করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। মঞ্চে অরো উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসরিন জাহান রত্না এমপি, শফিকুল ইসলাম সেন্টু প্রমুখ। কিন্তু এ সভা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। এ ঘটনায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও বরিশাল মহানগর জাতীয় পার্টি আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিনুল ইসলাম হাবুলকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, ২৩ সেপ্টেম্বর বরিশাল জাতীয় পার্টির বিরোধ নগ্নভাবে প্রকাশিত হয়ে পড়েছে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর ঘটনা এবং পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে বরিশাল জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক এ্যাড. এ কে এম মুরতজা আবেদীনের সঙ্গে দৈনিক দখিনের সময় প্রতিনিধির কথা হয় ২ অক্টোবর কাউনিয়ায় তার বাস ভবনে। তিনি বলেন, সেদিনের ঘটনা জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীদের ব্যাথিত করেছে ! সেদিন ১০/১২ জন লোক যে ঘটনা ঘটিয়েছে তার প্রতিক্রিয়ায় আমরা প্রতিবাদী হলে পরিস্থিতি কী দাড়াতো!
দৈনিক দখিনের সময়-এর সঙ্গে আলাপকালে মুরতজা আবেদীন অত্যন্ত সতর্ক ও কৌশলী ছিলেন। এক প্রশ্নে উত্তরে তিনি বলেন, ‘বরিশাল জাতীয় পার্টিতে কোন বিরোধ নেই।’ অনুষ্ঠানের ব্যানারে রওশন এরশাদের ছবি থাকা প্রসঙ্গে একাধিকবার প্রশ্ন করেও সরাসরি তাঁর কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তিনি কেবল এইটুকু বলেন, ‘এটি অন্য বিষয়, যেভাবেই হোক হয়েছে !’ অপর এক প্রশ্নের উত্তরে এ কে এম মুরতজা আবেদীন বলেন, ২৩ সেপ্টেম্বর ঘটনার বিষয়ে কেন্দ্র সিব্ধান্ত নেবে। দেখি কি করে। এ বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য করা সঙ্গত নয়।
বরিশাল জাতীয় পার্টির বিষয় নিয়ে রাখঢাক করে কথা বললেও রাজনীতির বিষয় নিয়ে অত্যন্ত খোলামেলাভাবে কথা বলেছেন এ কে এম মুরতজা আবেদীন। এক প্রশ্নে উত্তরে তিনি বলেন, আমরা যখন সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলি তখন তাদের মনোভাব অনুধাবনের চেষ্টা করি। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির থাকা ঠিক হবে না। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির কর্মীরাও এমনটাই মনে করেন।
এ প্রসেঙ্গ মুরতজা আবেদীন বলেন, অওয়ামী লীগ যে অনেক ভালো কাজ করেনি তা কিন্তু ঠিক নয়। আওয়ামী লীগের অনেক ভালো কাজ আছে। সঙ্গে খারাপ কাজও আছে। আর খারাপ কাজই মানুষ বেশি মনে রাখে। যেমন দশটা হালাল কাজকে ম্লান করে দেয় একটি হারাম কাজ। আর আওয়ামী লীগের ভালো কাজ ম্লান করার জন্য আওয়ামী লীগই যথেষ্ট। এটা কেউ করে কাজে, আবার কেউ করে কথায়। আর এ ছাড়া কোন দল ১৪/১৫ বছর ক্ষমতায় থাকলে বদনামের মাত্রা বেশি হওয়াই বাস্তবতা।
এক প্রশ্নের উত্তরে এ্যাড. মুরতজা আবেদীন বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বরিশাল সদর আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কর্নেল জাহিদ ফারুক শামীমের বিপুল ভোট পাবার ক্ষেত্রে প্রধান ফ্যাক্টর ছিলো জাতীয় পার্টির ভোট।
অপর এক প্রসঙ্গে এ কে এম মুরতজা আবেদীন বলেন, চলমান বাস্তবতায় শেখ হাসিনা ছাড়া কি আওয়ামী লীগ চলবে? চলবে না। তেমনই জিএম কাদেরের নেতৃত্ব ছাড়া জাতীয় পার্টি চলবে না। এই বিষয়টি জাতীয় পার্টির প্রতিটি নেতা-কর্মী বোঝেন। আর এটি বোঝার জন্য মোটেই পন্ডিত হবার প্রয়োজন পড়ে না। তিনি বলেন, আমরা জাতীয় পার্টি করি। দলকে শক্তিশালী করতে চাই। দলে মতবিরোধ থাকতেই পারে, কিন্তু আমরা সংঘাত চাই না।
বরিশাল জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরে কোন বিরোধ থাকার কথা অস্বীকার করলেও মুরতজা আবেদীনের অভিযোগের তীর প্রধানত ইকবাল হোসেন তাপস ও মহসিন ইসলাম হাবুলের দিকে। জেলা কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে এম. এ জলিলকে গ্রহণ না করা প্রসঙ্গে তার বক্তব্য হচ্ছে, ইকবাল হোসেন তাপস ষড়যন্ত্রে এম. এ জলিলকে বরিশাল জেলা কমিটির সদস্য সচিব করেছেন। অথচ কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত ছিলো , জেলা যাবে মহানগরে এবং মহানগর যাবে জেলায়। এ হিসেবে জেলা কমিটির সদস্য সচিব হবার কথা গোলাম মোর্শেদ চুন্নুর। কিন্তু করা হয়েছে এম. এ জলিলকে। আর গোলাম মোর্শেদ চুন্নু কোথাও নেই!
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মুরতজা আবেদীন বলেন, কেবল বরিশাল বলে কথা নয়; যেকোন স্থানে প্রার্থী দেবার বিষয়টি পার্টির কেন্দ্রের এখতিয়ারে। কিন্তু ইকবাল হোসেন তাপসকে বরিশালে মেয়র প্রার্থী হিসেবে আগাম ঘোষণা দিয়ে রাখায় অনেক সময় বিব্রতকর প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়।
দখিনের সময়: হতে পারে, গত মেয়র নির্বাচনে তার সাফল্যের কারণেই আগাম এই ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
মুরতজাআবেদীন: কিসের সাফল্য ভাই! গত মেয়র নির্বাচনে ইকবাল হোসেন তাপশ পেয়েছেন ৭শ’৬৪ ভোট; নিজের এলাকা ২১ নং ওয়ার্ডে পেয়েছেন একশ’ ভোট। একে সাফল্য বলে?
উল্লেখ্য, নানান প্রেক্ষাপটে বরিশাল জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাড. এ কে এম মুরতজা আবেদীনের শক্ত ভিত্তি রয়েছে। সবচেয়ে বড় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ১৯৯৫ সাল থেকে তিনি একটানা পাঁচবার ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। এমনকি গতবার সকাল ১০টার মধ্যে সম্পন্ন হওয়া নির্বাচনেও তারে পরাজিত করা যায়নি। এদিকে শুধু নির্বাচনী রাজনীতিতেই নয়, ‘জনশক্তি’ ও সাংগঠনিক ভাবেও মুরতজা আবেদীনের জোরালো ভিত্তি রয়েছে বলেও অনেকেই মনে করেন। সূত্র বলছে, ২০১৫ সালে পার্টি চেয়ারম্যান জেনারেল এইচ এম এরশাদের উপস্থিতিতে কাউন্সিলের মাধ্যমে বরিশাল মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি হয়েছিলেন এ্যাড. এ কে এম মুরতজা আবেদীন।
দখিনের সময় ডেস্ক:
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। উপজেলা নির্বাচন শেষে আজ বুধবার সন্ধ্যায়...
দখিনের সময় ডেস্ক:
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। গতকাল সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম...
দখিনের সময় ডেস্ক:
১০৫ দিন কারাভোগের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মুক্তি পেয়েছেন।বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত...
প্রায় দুই দশক আগে এসটিভি ইউএস নামে একটি টেলিভিশন আমেরিকা থেকে সম্প্রচারিত হতো। কিন্তু কার্যক্রম পরিচালিত হতো বাংলাদেশ থেকে। এতে মুখোমুখি নামে একটি টকশো...
দখিনের সময় ডেস্ক:
কলেজে অধ্যক্ষের রুমে ঢুকে শিক্ষক পেটানো ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। শিক্ষককে পেটানো বহিষ্কৃত এ ছাত্রলীগ নেতা হলেন মো. সাফাতুন নুর...