Home লাইফস্টাইল রোগটা এখন শিশুদের বেশি হচ্ছে

রোগটা এখন শিশুদের বেশি হচ্ছে

দখিনের সময় ডেস্ক:

দীপের বয়স ৩ বছর। প্রিস্কুলে যায়। কিন্তু দুই দিন ধরে ওর জ্বর, কিছু খেতে চায় না, খেলাধুলাও কম করছে। সকালে দীপের মা দেখলেন, ছেলের মুখের ভেতর লালচে ঘা। সেই সঙ্গে হাতের তালু আর পায়ের তলায় ছোটো ছোটো লাল দানা ও ফুসকুড়ি। জলবসন্ত নয় তো? শোনা গেল স্কুলের আরও কয়েক শিশুরও একই উপসর্গ দেখা দিয়েছে।

এই মৌসুমে দেশে কম বয়সী শিশুদের অনেকেই এ ধরনের লক্ষণে আক্রান্ত হচ্ছে। রোগটি একেবারে নতুন নয়, আগেও ছিল, তবে এ বছর দেখা দিচ্ছে বেশি। মুখে ঘা, হাতে ও পায়ে র‍্যাশ থাকায় চিকিৎসাবিজ্ঞানে এ রোগকে বলা হয় হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ।

এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। সাধারণত ৫ বছর বা এর নিচের শিশুদের বেশি দেখা যায়। তবে ১০ বছর বয়স পর্যন্তও হতে পারে। গরমকালে বা শরতে এমন রোগী বেশি পাওয়া যায়। চিন্তা বা উদ্বেগের কিছু নেই, এটি নিজেই সেরে যায়। কোনো বিশেষ জটিলতাও নেই বলেই চলে। হাত, পা আর মুখ ছাড়াও ফুসকুড়ি হতে পারে শিশুর নিতম্ব ও যৌনাঙ্গের আশেপাশে।

উপসর্গ কী

সাধারণত আক্রান্ত হওয়ার ৩ থেকে ৬ দিনের মধ্যে লক্ষণ শুরু হয়। এই রোগে সাধারণত প্রথমে জ্বর, গলাব্যথা, অরুচি ও দুর্বলতা দেখা যায়। মুখে ঘা তৈরি হয়, মুখ থেকে লালা ঝরে। ত্বকে, বিশেষ করে হাতের তালু ও পায়ের তলায় লাল দানা ও ফুসকুড়ি দেখা যায়। তবে এটি সাধারণত চুলকায় না। খুবই কম ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে সংক্রমণ যেমন মেনিনজাইটিস, এনকেফালাইটিস ইত্যাদি হতে পারে।

যেভাবে ছড়ায়

এটি খুবই ছোঁয়াচে রোগ। আক্রান্ত শিশু অন্য শিশুর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এলে হাঁচি, কাশি, সর্দি, লালা এমনকি একই খেলনা, থালাবাটি, গ্লাস ব্যবহার থেকে এই রোগ ছড়াতে পারে। এ ছাড়া ফেটে যাওয়া ফুসকুড়ির পানি ও মলের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে।

চিকিৎসা কী

তেমন কোনো চিকিৎসার দরকার নেই। লক্ষণ শুরু হওয়ার ৫ থেকে ৭ দিনে এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। জ্বরের জন্য গা মুছিয়ে দেওয়া ও প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়াতে হবে। শিশুকে প্রচুর পানি, সরবত ও স্যুপ খাওয়াবেন, যাতে পানিশূন্যতা না হয়। মুখের ক্ষত বা ঘায়ের কারণে ব্যথা হলে ছোট বরফের টুকরা চুষতে দিতে পারেন। যদি প্রচুর বমি হয়, শিশু কিছুই খেতে না পারে, পানিশূন্যতা দেখা দেয়, অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে পড়ে, মাথাব্যথা, ঘাড় ব্যথা হয়, জ্বর ৭ থেকে ১০ দিনেও ভালো না হয়, তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।

এই রোগ থেকে দূরে রাখতে শিশুকে বারবার হাত ধোয়ার অভ্যাস করাতে হবে। আক্রান্ত শিশুকে স্কুলে বা ডে-কেয়ার না পাঠানোই ভালো। পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খাওয়াবেন, যাতে শিশুর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

নিজের চেয়ার ঠিক রাখতেই ব্যস্ত পুলিশ কর্মকর্তারা

দখিনের সময় ডেস্ক: জুলাই ২৪-এর আন্দোলনে গণহত্যার জন্য একক বাহিনী হিসেবে পুলিশকে দায়ী করা হয়। মানুষের ক্ষোভের আগুনে পুড়েছে বাহিনীটির শতশত থানা, যানবাহন। জীবন গেছে...

সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে কখনোই সংস্কার হবে না: তোফায়েল

দখিনের সময় ডেস্ক: সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে আর কখনোই সংস্কার হবে না। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন সদস্য...

না ভোট ফিরিয়ে আনার সুপারিশ সংস্কার কমিশনের

দখিনের সময় ডেস্ক: সরাসরি রাষ্ট্রপতির নির্বাচন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোনো প্রার্থী নির্বাচিত না হওয়া, না ভোট ফিরিয়ে আনা ও অর্থের উৎসের স্বচ্ছতা নিশ্চিতসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ...

সুযোগ পেলে গলা চেপে ধরবে আ.লীগ: রিজভী

দখিনের সময় ডেস্ক: গণহত্যার জন্য বর্তমানে আওয়ামী লীগ ক্ষমা চাওয়ার কথা বললেও, সুযোগ পেলে আবারও তারা মানুষের গলা চেপে ধরবে। এমনটাই মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র...

Recent Comments