Home লাইফস্টাইল এই সময়ে শিশুর জ্বর

এই সময়ে শিশুর জ্বর

দখিনের সময় ডেস্ক:
ঋতুবৈচিত্র্যের কারণে আমাদের দেশে মৌসুমি ভাইরাসজনিত জ্বরের প্রকোপ একটু বেশিই। বিশেষ করে যাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম, যেমন শিশু ও বয়স্ক, ভাইরাস জ্বরে বেশি আক্রান্ত হয় তারা। শিশুদের ভাইরাস জ্বর হলে সাধারণত সর্দি-কাশি, গলা, মাথা ও শরীর ব্যথা, অনেক সময় পাতলা পায়খানা ও বমি হতে পারে।
নানা ধরনের ভাইরাসের কারণে এই সময়ে জ্বর হতে পারে। যেমন করোনাভাইরাস, ডেঙ্গু ভাইরাস, রাইনোভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, রেস্পিরেটরি সিনসাইটিয়াল ভাইরাস ইত্যাদি। তবে সব ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ এক নয়। ডেঙ্গু ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ বিশেষভাবে আলাদা।
* সাধারণত ডেঙ্গু জ্বরে তাপমাত্রা থাকতে পারে ১০১ থেকে ১০৫ ডিগ্রি। জ্বরের সঙ্গে প্রচণ্ড মাথাব্যথা, বিশেষ করে মাথার পেছনের দিকে ও চোখের কোটরের ভেতর প্রচণ্ড ব্যথা, মেরুদণ্ডে হাড়ের ভেতরও প্রচণ্ড ব্যথা করে। বমি বা বমি বমি ভাব হয়।
* জ্বর একটানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেওয়ার পর আবার জ্বর আসতে পারে।
* জ্বর চার দিন পরে হঠাৎ করে ছেড়ে দিতে পারে। জ্বর ছেড়ে দেওয়ার পর ৪৮ থেকে ৯৬ ঘণ্টা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ সময় (ক্রিটিক্যাল পিরিয়ড) শিশুর জন্য। এই জ্বরবিহীন সময়টাতে শরীরে লাল লাল র‍্যাশ উঠতে পারে এবং এই র‍্যাশে প্রচণ্ড চুলকানি হয়, যা সাধারণত অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধে কাজ হয় না। তবে এই চুলকানি তিন দিনের বেশি থাকে না।
* ডেঙ্গু রোগীর জ্বর চলে যাওয়ার পর হঠাৎ করেই রক্তচাপ কমে গিয়ে ক্রিটিক্যাল পর্যায়ে চলে যেতে পারে। তখন ক্রিটিক্যাল কেয়ার সাপোর্টের (সিসিইউ) দরকার হয়।
* এখন যেহেতু ডেঙ্গুর সময়, সে জন্য জ্বর হলে অবহেলা করা উচিত নয়। জ্বরের প্রথম তিন দিনের মধ্যে ডেঙ্গু ভাইরাসের এনএসওয়ান অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে হবে।
* সাধারণ সর্দি-জ্বর হলেও জ্বর যদি তিন দিনের বেশি স্থায়ী হয় এবং এর তীব্রতা বাড়তেই থাকে, প্রচণ্ড কাশি ও কাশির সঙ্গে বুক ভেতরের দিকে দেবে যায়, শ্বাসের গতি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয় (২ মাসের কম শিশুর শ্বাসের গতি মিনিটে ৬০ বা তার বেশি, ২ মাস থেকে ১ বছরের কম শিশুদের ৫০ অথবা তার বেশি এবং ১ বছর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত ৪০ অথবা তার বেশি) তাহলে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
* সর্দি-জ্বরের জন্য বিশ্রাম; প্যারাসিটামল, অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ চিকিৎসকদের পরামর্শমতো খাওয়াতে হবে।
* কুসুম গরম পানি দিয়ে গা মোছানো ও প্রচুর পরিমাণে তরল শক্তিদায়ক খাবার খাওয়াতে হবে, সঙ্গে সঙ্গে বুকের দুধও দিতে হবে। কাশির জন্য কুসুম গরম লেবুর শরবত দেবেন। বাচ্চা বড় হলে মধু দিয়ে লেবুর চা দেবেন।
অধ্যাপক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম, অধ্যাপক ও পরিচালক, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট, শ্যামলী, ঢাকা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

কোথাও সরকারিভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়নি, দেশকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে

দখিনের সময় ডেস্ক: সরকারিভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়নি জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, দেশের পাহাড়ি এলাকাতেও বহুমুখী ষড়যন্ত্র থেমে...

দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বিচারক নিয়োগ নীতিমালা: প্রধান বিচারপতি

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগে নীতিমালা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে। একই সঙ্গে সুনির্দিষ্ট আইনও করা হবে বলে...

গায়েবি মামলার কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে: আসিফ নজরুল

দখিনের সময় ডেস্ক: অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিচার বিভাগ ব্যবহার করে মানুষকে হয়রানি করার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বিগত...

ইসরায়েলে মশাবাহিত ‘ওয়েস্ট নাইল’ ভাইরাসে নিহত ৭০, আক্রান্ত ৯১৩

দখিনের সময় ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যের দু’টি দেশ লেবানন ও ফিলিস্তিনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইসরায়েল। গাজায় যুদ্ধ শেষ করতে না করতেই, দেশটি নতুনভাবে লেবাননে যুদ্ধ শুরু করেছে। এদিকে, মশাবাহিত...

Recent Comments