Home লাইফস্টাইল ফুসফুসে মাত্রাতিরিক্ত বাতাস

ফুসফুসে মাত্রাতিরিক্ত বাতাস

দখিনের সময় ডেস্ক:
ফুসফুস হচ্ছে মানবদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের নিশ্চয়তা প্রদান করে এ ফুসফুস। মানুষের শরীরে এ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটি আবার নানা রকম রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে থাকে। ফুসফুসের বিভিন্ন ধরনের ব্যাধির মধ্যে একটি জটিল ব্যাধি হচ্ছে এমফাইসিমা। এমফাইসিমার ফলে ফুসফুসে মাত্রাতিরিক্ত বাতাস জমা হয়। এটি প্রধানত একটি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ। কারণ যখন ফুসফুসের ভিতরের দিকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাতাস জমা হয় তখন রোগীর বক্ষ, কাশির সঙ্গে সঙ্গে শ্বাসকষ্ট প্রকোপ আকার দেখা দেয়।
এমফাইসিমা একটি কষ্টদায়ক ব্যাধি এ রোগ মানবদেহে একদিনে বাসা বাঁধে না। দীর্ঘ সময় নিয়ে এটি সৃষ্টি হয়। বাড়তি বাতাস জমা হলে ফুসফুস খুব দ্রুত ফুলে উঠে এবং এর অভ্যন্তরের অংশগুলো অকেজো হয়। কেউ যদি হাঁপানি বা অ্যাজমা রোগী হয়ে থাকে, তবে তার এ ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্ত রোগীদেরও ফুসফুসে এমফাইসিমা হতে পারে। কোনো কোনো শ্বাসকষ্টজনিত ব্যাধির কারণেও এমফাইসিমা হতে পারে। ধূমপান হচ্ছে ফুসফুসের সবচেয়ে বড় শত্রু। ধূমপায়ী ব্যক্তিদের এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন ধরনের জীবাণু সংক্রমণের কারণেও এ রোগ হতে পারে। পরিবেশ দূষণ, কালো ধোঁয়াও ফুসফুসের এমফাইসিমা সৃষ্টির কারণ। আবার উপরের কারণগুলো ছাড়াও যে কোনো ব্যক্তি এ রোগ/ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারে।
লক্ষণসমূহ : প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট। অল্প চলাফেরাতেই শ্বাসটানের উপক্রম হয় এবং দম ফুরিয়ে যায়। শ্বাস নেওয়ার সময় গলার শিরা ভরে যায়। পেটে এবং পায়ে পানি আসে। লিভারের আকার বৃদ্ধি পায়। কখনো কখনো এসব রোগী রক্তশূন্যতায় ভোগে। আবার রোগীর দেহ নীলও হয়ে যেতে পারে। বুকের আকৃতি পরিবর্তন হয়ে যায়। রোগী যখন ধীরে ধীরে জটিল আকার ধারণ করে তখন শ্বাসযন্ত্র ও হার্টের অচলতার কারণে হার্ট অ্যাটাক (ফেইলিওর) হতে পারে। ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসের কারণে যদি এমফাইসিমা হয়ে থাকে প্রাথমিক অবস্থায় শ্বাসকষ্টের তীব্রতা দেখা যায় না। কিন্তু পরে হৃদযন্ত্রের ডান পাশের অংশ কার্যক্ষমতা হারিয়ে এক সময় হার্ট ফেইলিওর হয়।
প্রতিরোধ : এমফাইসিমা সম্পূর্ণ ভালো করার কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তবে ব্যাধিটি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। যেহেতু এটি একটি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ তাই ওষুধের দ্বারা শ্বাসকষ্টকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। শ্বাস নেওয়া এবং ছাড়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে। ধূমপান পরিহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, এসব ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা নিলে অনেকটাই জটিলতা এড়নো সম্ভব।
লেখক:
অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোস্তফা হোসেন, বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, মেডিনোভা, মালিবাগ, ঢাকা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে? জেনে নিন গতি বাড়ানোর কৌশল!

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...

প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করলে কী হয়?

দখিনের সময় ডেস্ক: ওজন কমানো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হতে পারে। কঠোর ডায়েট অনুসরণ করা, খাবারের প্রতি লোভ নিয়ন্ত্রণ করা, প্রতিদিন জিমে যাওয়া, কঠোর ওয়ার্কআউট করা...

ডিভোর্সের দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান

দখিনের সময় ডেস্ক: নিন্দুকরা মনে করছে বাংলার মেয়ে গিটার বাদক মোহিনী দে-র জন্যই হয়ত সায়রাকে ছেড়েছেন ভারতের অস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী ও সুরকার এ আর রহমানের। তবে...

যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র টোকিও, সেক্স ইন্ডাস্ট্রির জড়িত কিছু চক্র

দখিনের সময় ডেস্ক: যখন স্বর্ণযুগ ছিল, শহরটি অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নতি দেখেছে। এটি এখনো বিশ্বের অন্যতম বাসযোগ্য শহর হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে আশঙ্কার বিষয়...

Recent Comments