দখিনের সময় ডেস্ক:
ব্রিটিশ নাগরিকত্ব হারানো মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সাবেক বধূ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগমের মামলা পর্যালোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি পাচারের শিকার হয়েছিলেন বলে তার আইনজীবী আদালতকে জানানোর পর সোমবার মামলাটি পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত হয়।
২০১৯ সালে ইসলামিক স্টেটের খেলাফতের পতনের পর সিরিয়া এবং ইরাক থেকে শত শত ইউরোপীয় নিজ নিজ দেশে ফেরার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আইএসে যোগ দেওয়া ইউরোপীয়রা তাদের দেশের সরকারের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগমও সেই শত শত ইউরোপীয়দের একজন যাদের ভাগ্য ঝুলে আছে আদালতে।
২০১৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে পূর্ব লন্ডনের বাসা থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে যান স্কুলশিক্ষার্থী শামীমা বেগম। সেখানে পৌঁছে আইএসের এক যোদ্ধাকে বিয়ে করেন তিনি এবং জন্ম দেন তিন সন্তানের। যদিও তার কোনও সন্তানই এখন বেঁচে নেই। বর্তমানে এই আইএস-বধূর বয়স ২২ বছর।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ার এক শিবিরে গর্ভবতী শামীমাকে খুঁজে পান ব্রিটেনের একজন সাংবাদিক। ওই সাংবাদিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আইএসে যোগ দেওয়া নিয়ে তার কোনও অনুশোচনা না থাকায় ব্রিটেনে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করে সেই সময়। পরে ‘আইএস বধূ’ নামে পরিচিতি পাওয়া শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল করে ব্রিটেনের সরকার। এর ফলে রাষ্ট্রহীন হয়ে সিরিয়ার কুর্দিদের পরিচালিত আল-রোজ বন্দি শিবিরে আটকা পড়েন তিনি।
আইএস বধূ শামীমা বেগমের পরিবারের আইনজীবী তাসনিম আকুঞ্জি ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, শামীমা বেগম পাচারের শিকার কিনা, সেই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এসআইএসিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সাজিদ জাভিদ এই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছিলেন কিনা সেবিষয়ে আদালত পর্যালোচনা করবে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে সাংবাদিক রিচার্ড কেরবাজ একটি বই প্রকাশ করেন। এতে তিনি অভিযোগ করে বলেন, শামীমা বেগম ও তার বন্ধুদের সিরিয়ায় নিয়ে গেছেন সিরীয় এক নাগরিক; যিনি কানাডীয় নিরাপত্তা সংস্থার কাছে শামীমার তথ্য ফাঁস করেছিলেন।
প্রথম দিকে আইএসের যোগ দেওয়া নিয়ে কোনও ধরনের অনুশোচনা প্রকাশ না করলেও শামীমা বেগম এখন অনুতপ্ত বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। একই সঙ্গে আইএসের শিকার হওয়া নারীদের প্রতি সহানুভূতিও প্রকাশ করেছেন তিনি।