Home লাইফস্টাইল শীতকালে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি যেসব কারণে বেশি

শীতকালে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি যেসব কারণে বেশি

দখিনের সময় ডেস্ক:
মেডিক্যাল গবেষণায় দেখা গেছে, শীতকালটা স্ট্রোকের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। শীতের সময় সকালে ঠা-া পানি দিয়ে গোসল করা, বাথরুমে হঠাৎ ঝরনা ছেড়ে দেওয়া- এসবই বিপদের লক্ষণ। বাথরুমে গিয়ে স্ট্রোক হয়েছে এমন খবরও আসে। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ক্ষেত্রে এমন হয়। তাই শীতকালটা সাবধান থাকা ভালো। সাধারণত রক্তনালি দুর্ঘটনার কারণে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেলে বা হারিয়ে গেলে তাকে বলে স্ট্রোক। তবে এটা যে কারও ক্ষেত্রে যে কোনো সময় হতে পারে।
স্টোকের লক্ষণ : শরীরের কোনো একদিকে দুর্বল বোধ করা বা শরীরের কোনো একদিক নাড়াতে না পারা, হাতে-পায়ে অবশ ভাব, মুখ একদিকে বেঁকে যাওয়া, প্রচ- মাথাব্যথা হওয়া, কথা অস্পষ্ট হয়ে যাওয়া, বমি হওয়া, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, মুখের অসাড়তা, কথা জড়িয়ে যাওয়া, বেসামাল হাঁটাচলা, হঠাৎ খিঁচুনি বা ধপ করে পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হলে বুঝতে হবে স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এমন হলে রোগীকে কাত করে শুইয়ে দিতে হবে। এ অবস্থায় কোনো খাবার বা ওষুধ মুখে দেওয়া যাবে না। এগুলো শ্বাসনালিতে ঢুকে ক্ষতি করতে পারে। বরং মুখে জমে থাকা লালা ও বমি পরিষ্কার করে দিতে হবে। টাইট জামাকাপড় ঢিলে করে দিতে হবে। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। হাসপাতালে যাওয়ার সময় রোগীর আগের চিকিৎসার ফাইল সঙ্গে নিতে হবে।
স্ট্রোকের পর করণীয় : অতিদ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে আধাঘণ্টার মধ্যেই। সাধারণত স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ইমারজেন্সি ব্রেইনের রেডিওলোজিক টেস্ট, সিটিস্ক্যান, এমআরআই করা উচিত। ঘাড়ের রক্তনালির ডপলার, হার্টের সমস্যার জন্য ইকো পরীক্ষা করাতে হবে। রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা পরীক্ষা করে নিতে হবে। প্রয়োজনে এনজিওগ্রাম ও ইকোকার্ডিওগ্রাফি পরীক্ষাও করতে হবে।
চিকিৎসা করাতে হবে দ্রুত : স্ট্রোক হলে আক্রান্ত এলাকার মস্তিষ্ক কোষের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। রক্ত সরবরাহ দুই থেকে পাঁচ মিনিটের বেশি বন্ধ থাকলে স্নায়ুকোষ স্থায়ীভাবে ধ্বংস হয়।
স্ট্রোকের চিকিৎসা : স্ট্রোক ব্রেইনের রক্ত চলাচল কমে যাওয়ার জন্য এবং ব্রেইন কম রক্তপ্রবাহ নিয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারে না। তাই স্ট্রোকের চিকিৎসা তাৎক্ষণিক শুরু করতে হয়। ওষুধ প্রয়োগ করে রক্তের চাপ, রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে। রক্তের জমাট অবস্থা কাটিয়ে উঠতে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা শুরু করতে হবে। প্রাথমিক ধাপ কাটিয়ে ওঠার পর বহুদিন পর্যন্ত ফিজিওথেরাপির প্রয়োজন হতে পারে। স্ট্রোক হয়েছে বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রতিরোধ : নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা, ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করা, ডাক্তারের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ সেবন, নিয়ম করে হাঁটা, খাদ্যাভ্যাসে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন, মানসিক চাপ পরিহার করা, ওজন নিয়ন্ত্রণ করা, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে। তবে সচেতন ও সাবধানতা জরুরি।
লেখক : অধ্যাপক; ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল। চেম্বার : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি., শ্যামলী শাখা, ঢাকা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে অটোরিকশা সমস্যার সমাধান হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

দখিনের সময় ডেস্ক: উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে ব্যাটারিচালিতঅটোরিকশার চলাচল বিষয়ক সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার...

বাউফলে সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

নয়ন সিকদার, বাউফল প্রতিনিধি পটুয়াখালীর বাউফলে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। চোখের সামনে প্রকাশ্যে দিবালোকে নির্মাণকাজে নিম্মমানের উপকরণ ব্যবহার করায় ক্ষুদ্ব প্রতিক্রিয়া...

টিকটকে নিরাপদ রাখবে যে ১০ ফিচার

দখিনের সময় ডেস্ক: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে টিকটক। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে টিকটক। যেখানে ‘ফিডস’ নেটওয়ার্কের...

প্রতিদিন খেজুর খাবেন যে কারণে

দখিনের সময় ডেস্ক: আপনার কি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য সুস্বাদু কোনো খাবার প্রয়োজন এবং সেইসঙ্গে অতিরিক্ত ওজন কমাতে চাইছেন? এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হতে পারে খেজুর।...

Recent Comments