দখিনের সময় ডেস্ক:
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বৈঠক ঘিরে চঞ্চল হয়ে উঠেছে সুইজারল্যান্ডের স্কি রিসোর্ট শহর দাভোস। সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যাওয়া শিল্পপতি, ধনকুবের, নামিদামি বিভিন্ন কোম্পানির সিইও ও রাজনৈতিক নেতাদের বৈঠকে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে যৌনকর্মীদের ব্যবসাও।
এই শহরে ডব্লিউইএফের সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিত্তশালীদের মনোরঞ্জনের বিনিময়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করছেন যৌনকর্মীরা। তাদের মধ্যে অনেকেই ঘণ্টা অথবা সারা রাতের জন্য খদ্দেরের কাছ থেকে নিচ্ছেন ৭০০ থেকে আড়াই হাজার ডলার (বাংলাদেশি ২ লাখ ৫৯ হাজার টাকা) পর্যন্ত।
প্রত্যেক বছরের জানুয়ারির এই সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও), শিল্পপতি, গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক নেতারা বৈশ্বিক নানা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার জন্য দাভোসে ৫ দিনের সম্মেলনে অংশ নেন। লিয়ানা নামের এক নারী যৌনকর্মী জার্মান সংবাদমাধ্যম বিল্ডকে বলেন, দাভোসে আসা এক আমেরিকানকে তিনি কয়েকবার সেবা দিয়েছেন। এজন্য প্রতি ঘণ্টায় কমপক্ষে ৭৫০ ডলার অথবা সারা রাতের জন্য আড়াই হাজার ডলার পেয়েছেন তিনি।
এই যৌনকর্মী বলেন, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সমাবেশের ভিড়ে মিশে যাওয়ার জন্য তিনি দামি পোশাক পরেছেন। দাভোস থেকে প্রায় ১০০ মাইল দূরের সুইস শহর আরগাউতে এসকর্ট সেবা পরিচালনাকারী একজন নারী টোয়েন্টি মিনিটকে বলেন, তিনি ১১ জনের বুকিং পেয়েছেন। এছাড়া যৌনকর্মী পাওয়া যাবে কিনা তা জানতে আরও ২৫ জন তার কাছে খোঁজ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি কেবল শুরু।’
এসকর্ট সেবাদানকারী এই ম্যানেজার বলেন, কেউ কেউ হোটেল স্যুটের পার্টিতে নিজেদের এবং তাদের কর্মীদের জন্য এসকর্ট বুক করেছেন। দাভোসে যৌনকর্মীদের চাহিদা তুঙ্গে পৌঁছেছে, সেই বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা টুইটারে লিখেছেন জার্মান যৌনকর্মী সালোমে বালথাস। তিনি লিখেছেন, ডব্লিউইএফ চলাকালীন সুইজারল্যান্ডে ডেট করার অর্থ হল রাত ২টায় হোটেলের করিডোরে নিরাপত্তারক্ষীদের বন্দুকের নলের দিকে তাকানো। তারপর রেস্তোরাঁ থেকে পাওয়া উপহারের চকলেট তাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়া এবং ধনীদের সম্পর্কে আলোচনা করা।
দাভোসের কাছের একটি হোটেলে অবস্থান করছেন বালথাস। তবে তার খদ্দেরদের নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি। টুইটে বালথাস লিখেছেন, আমাকে বিশ্বাস করুন, আপনি তাদের সাথে ঝামেলায় জড়াতে চাইবেন না।
তবে রাজনীতিবিদরা যৌনকর্মীদের কাছ থেকে তুলনামূলক কম সেবা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। জার্মান এই যৌনকর্মী লিখেছেন, রাজনীতিবিদদের সময় বা শরীরের চাহিদার কোনোটিই নেই।
বালথাস বলেন, ‘আপনাকে যৌনতা, রাজনৈতিক ক্ষমতা অথবা মাদকের মধ্যে থেকে যেকোনও কিছু বেছে নিতে হবে। তবে রাজনীতি বেশ ক্ষমতার, এটি অন্যান্য জিনিসের আগ্রহ তৈরি করে না, বরং মানুষকে পুরোপুরি খেয়ে ফেলে।’
এর আগে ২০২০ সালে সুইস আইন প্রয়োগকারী এক কর্মকর্তা টাইমস অব লন্ডনকে বলেছিলেন, সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানে খদ্দের পাওয়ার আশায় কমপক্ষে ১০০ জন যৌনকর্মী দাভোসে ভ্রমণ করেছিলেন।
সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট, ডেইলি মেইল।