Home লাইফস্টাইল দুধ দিয়ে গোসল করলে কী হয়?

দুধ দিয়ে গোসল করলে কী হয়?

দখিনের সময় ডেস্ক:
‘কলঙ্কমুক্ত’ হতে সম্প্রতি দুধ দিয়ে গোসলের কথা প্রায়ই খবরের শিরোনামে আসে। দুধ দিয়ে গোসলের মাধ্যমে পবিত্র হওয়ার এই ধারণা প্রাচীনকাল থেকে বিদ্যমান। অবশ্য বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘেঁটেও ‘দুগ্ধস্নানের মাধ্যমে কলঙ্কমুক্ত’ হওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে দুধ মিশ্রিত পানিতে গোসলের বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত উপকারিতা আছে।
প্রাচীন রোমানরা মুখের ত্বক কোমল রাখতে নিয়মিত দুধ মিশ্রিত পানিতে গোসল করতেন। ফারাও ক্লিওপেট্রা দুধ এবং মধু মিশ্রিত গরম পানিতে গোসল করে তার অপরূপ সৌন্দর্য ধরে রেখেছিলেন। চলতি শতাব্দীর শুরুতে আমেরিকায় ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল বাটারমিল্কে মুখ ধোয়া।
কেবল সৌন্দর্য বৃদ্ধি নয়, একজিমা, সোরিয়াসিস এবং শুস্কতাসহ ত্বকের বেশ কয়েকটি রোগের জন্য দুধ মিশ্রিত পানি উপকারী বলে ধরা হয়। তবে দুধ দিয়ে গোসল সবার জন্য উপকারী নাও হতে পারে, বিশেষ করে স্পর্শকাতর ত্বকের অধিকারীরা ভুগতে পারেন অ্যালার্জিতে। তাই দুধ গোসলের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত-এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুষ্ক ত্বক: ত্বক শুষ্ক হলে দুধ মিশ্রিত পানিতে গোসল উপকারী হতে পারে। কারণ দুধে রয়েছে প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড। এসব ত্বকের হারানো আর্দ্রতা পূরণে সহায়ক। প্রোটিন এবং চর্বি ত্বককে নরম ও প্রশমিত করতে সাহায্য করে। ত্বকের যত্ন নিয়ে ৬৫ ঊর্ধ্বে নারীদের ওপর চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, দুধ মিশ্রিত পানিতে গোসলের পর চুলকানি থেকে মুক্তি পেয়েছেন তারা।
একজিমা: একজিমার কারণে প্রায়ই ফুসকুড়ি, খসখসে ত্বক এবং জ্বালাপোড়া হতে পারে। একজিমা চিকিৎসায় দুধ স্নানের কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা সীমিত। প্রাপ্তবয়স্কের একজিমা চিকিৎসায় দুধ মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসলের কার্যকারিতার প্রমাণ নেই। তাই একে ওষুধের বিকল্প হিসেবে মনে করেন না চিকিৎসকেরা। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, মানুষের বুকের দুধ থেকে তৈরি হাইড্রোকোর্টিসোন মলম একজিমায় আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসায় বেশ কার্যকর। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
সোরিয়াসিস: সোরিয়াসিসের উপসর্গ যেমন চুলকানি, ত্বকের শুষ্কতা নিরাময়ে কার্যকর হতে পারে দুধের মিশ্রিত পানিতে গোসল; যদিও এ ব্যাপারে শক্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
রোদে পোড়া: দুধে থাকা প্রোটিন, চর্বি, অ্যামিনো অ্যাসিড এবং ভিটামিন এ এবং ডি রোদে পোড়া ত্বকের জন্য প্রশান্তিদায়ক হতে পারে। রোদ থেকে ঘুরে আসার পর ২০ মিনিট ধরে দুধ দিয়ে গোসল করুন। আরও ভালো ফলাফলের জন্য অ্যালোভেরা বা অন্য ময়েশ্চারাইজার যোগ করতে পারেন পানিতে।
যে ধরনের দুধ ব্যবহার করা যেতে পারে: বিভিন্ন ধরনের দুধ যেমন- গাভীর দুধ, বাটারমিল্ক, নারিকেলের দুধ, ছাগলের দুধ, পাউডার দুধ, চাল বা সয়া দুধ পানিতে মিশিয়ে গোসল করা যেতে পারে। এসব দুধের মধ্যে কোনটি বেশি কার্যকর তা নিশ্চিত নয়। এ কারণে বিভিন্ন ধরনের দুধের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে পরীক্ষা চালাতে পারেন। ত্বকের প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝতে পারবেন কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত।
যেভাবে প্রস্তুত করবেন: কুসুম গরম পানি দিয়ে বাথটাব বা বালতি ভরুন। তারপর ১ বা ২ কাপ দুধ এবং ঐচ্ছিক উপাদানগুলো (তেল, গোসলের লবণ, মধু বা বেকিং সোডা মেশান। ভালো করে পানিতে মিশিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট ধরে নিজেকে ডুবিয়ে রাখুন।
শুষ্ক, চুলকানিযুক্ত ত্বকের অধিকারীরা এই গোসলে প্রশান্তি পেতে পারেন। তবে এটি কখনো স্বাভাবিক ত্বকের ওষুধের বিকল্প হিসেবে নেওয়া উচিত নয়। সবচেয়ে ভালো হয়, দুধ গোসলের আগে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেশনাল এমবিএ প্রোগ্রাম চালু

কাজী হাফিজ: বর্তমান বিশ্বে মাস্টার্স অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ) প্রোগ্রামকে ব্যবসা এবং ব্যবস্থাপনার সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন কোর্স হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের চাহিদার কথা...

গাড়িতে আসার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন রনোভাই

প্রায় দুই দশক আগে এসটিভি ইউএস নামে একটি টেলিভিশন আমেরিকা থেকে সম্প্রচারিত হতো। কিন্তু কার্যক্রম পরিচালিত হতো বাংলাদেশ থেকে। এতে মুখোমুখি নামে একটি টকশো...

মাছ ধরার সময় শ্বাসনালিতে বাইন মাছ

দখিনের সময় ডেস্ক: ঝুঁকিপূর্ণ দেখে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় শ্বাসনালি কেটে বাইন মাছটি বের করা হয়। এরপর রোগী সুস্থ হলে ৭-৮ দিন পর তার শ্বাসনালিতে বসানো...

অধ্যক্ষের রুমে ঢুকে শিক্ষক পেটানো সেই ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার

দখিনের সময় ডেস্ক: কলেজে অধ্যক্ষের রুমে ঢুকে শিক্ষক পেটানো ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। শিক্ষককে পেটানো বহিষ্কৃত এ ছাত্রলীগ নেতা হলেন মো. সাফাতুন নুর...

Recent Comments