Home জাতীয় পিলখানা হত্যাকাণ্ড : বর্বরতা-নৃশংসতার ১৪ বছর

পিলখানা হত্যাকাণ্ড : বর্বরতা-নৃশংসতার ১৪ বছর

দখিনের সময় ডেস্ক:
আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি (শনিবার)। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম কালো দিন। ২০০৯ সালের এই দিনে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর), বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দপ্তরে বিপথগামী কিছু সদস্য ধ্বংসলীলা চালায়। তাদের উন্মত্ততার শিকার হয়ে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি পরিণত হয় ‘পিলখানা হত্যা দিবস’। আজ মর্মান্তিক এই ঘটনার ১৪ বছর।
দিবসটি পালন করতে বিজিবি ও সেনাবাহিনী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী শহীদ ব্যক্তিবর্গের রুহের মাগফিরাত কামনায় পিলখানার বিজিবি সদর দপ্তর এবং বিজিবির সব মসজিদ ও বিওপি পর্যায়ে সব রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় পবিত্র কোরআন খতম, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
দিবসটি পালনে সব স্থাপনায় বিজিবি রেজিমেন্টাল পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং সদস্যরা কালো ব্যাজ পরিধান করবেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় সকাল ৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধানরা (সম্মিলিতভাবে), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও বিজিবি মহাপরিচালক (একত্রে) ও শহীদদের নিকটাত্মীয়রা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
পিলখানা ট্র্যাজেডির এই ঘটনায় ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক নবজ্যোতি খিসা। এ ছাড়া বিজিবির নিজস্ব আইনে ৫৭টি মামলায় সারা দেশে পাঁচ হাজার ৯২৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে।
২০১০ সালের ১২ জুলাই পিলখানা হত্যা মামলায় ৮২৪ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে সম্পূরক চার্জশিটে আরও ২৬ জনকে আসামি করা হয়।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর লালবাগে অবস্থিত আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে এ হত্যা মামলার রায় দেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. আখতারুজ্জামান। রায়ে ৮৫০ জন আসামির মধ্যে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৭১ জনকে খালাস দেওয়া হয়। দুই থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয় ২৬৬ জনকে।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে আপিলের রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখা হয়। আট জনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও চারজনকে খালাস দেওয়া হয়। নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ পাওয়া ১৬০ জনের মধ্যে ১৪৬ জনের সাজা বহাল রাখা হয়। হাইকোর্টে আপিল চলার সময়ে কারাগারে থাকা অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়। খালাস পান ১২ আসামি।
এ ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলাটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে এখনও বিচারাধীন। মামলাটির আসামি রয়েছেন ৮৩৪ জন। এর মধ্যে ২৪ জন এরই মধ্যে মারা গেছেন। পলাতক রয়েছেন ২০ জন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

ভারতে অজ্ঞান পার্টির কবলে দুই বাংলাদেশি পর্যটক, পুলিশ সহযোগিতা না করার অভিযোগ

দখিনের সময় ডেস্ক: ভারতে বেড়াতে গিয়ে সর্বশান্ত হয়েছেন দুই বাংলাদেশি পর্যটক। চলন্ত ট্রেনে দুজন ব্যক্তি তাদেরকে চা খেতে দেয়। চা খাওয়ার পরই তারা জ্ঞান হারিয়ে...

শুরু ভালো হলেও বড় ইনিংসে পরিণত করতে ব্যর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ

দখিনের সময় ডেস্ক: বাংলাদেশের প্রাক্তন ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্প মনে করেন, ব্যাটসম্যানরা ভালো শুরু পেলেও সেটি বড় ইনিংসে রূপান্তরিত করতে না পারার খেসারত দিচ্ছে বাংলাদেশ।...

ইসকন আন্দোলনে দেশি-বিদেশি ইন্ধন রয়েছে, বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

দখিনের সময় ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইসকনের আন্দোলনে দেশি-বিদেশি ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি...

কোনো উসকানিতে সাড়া না দেওয়ার আহ্বান

দখিনের সময় ডেস্ক: চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মুক্তির দাবিতে আন্দোলনকারীদের হামলায় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবী নিহত হওয়ার ঘটনায় ছাত্র-জনতাকে কোনো ধরনের উসকানিতে সাড়া...

Recent Comments