দখিনের সময় ডেস্ক:
‘ফজলে হোসেন বাদশা ভোগবিলাসীতে মত্ত। কোটি কোটি টাকা খরচ করে ১০ তলা বাড়ি করেছেন। তা হলে কীসের বাম সংগঠন করেন বাদশা!’ এ প্রশ্ন তুলেছেন বজিস্কৃত নেরতারা। দলের সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’র অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার এন্তাজুল হক বাবুকে বহিষ্কার করেছে মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টি। একই শাস্তি পেয়েছেন জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আকবর আলী।
টানা ৩৩ বছর বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে ছিলেন রাজশাহীর আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু। দলটির রাজশাহী মহানগরের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যও ছিলেন তিনি। প্রবীণ এ দুই নেতাকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে ইতোমধ্যে আরও অনেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। এতে নিজের ঘরেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা।
পার্টি থেকে বহিষ্কারের পর শনিবার দুপুরে মহানগরীর লক্ষ্মীপুরের একটি ভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু ও আকবর আলী। সংবাদ সম্মেলনে দলের বিরুদ্ধে আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়ার অভিযোগ তুলে তারা বলেন, বহিষ্কার করতে গেলে কিছু নিয়ম আছে। নিয়ম বলতে শোকজ করতে হয়। এগুলো কিছু হয়নি। কেন্দ্রীয় কমিটির কোনো সদস্যকে মহানগর কমিটি বহিষ্কার করতে পারে না। তারা কীভাবে এটা করল এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় কমিটির তদন্ত করা উচিত।
ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস প্রামাণিক দেবুর মার্কিন নাগরিকত্ব রয়েছে বলে দাবি করেন বহিষ্কৃত নেতারা। স্থানীয় সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা মহানগরের সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু ও সাধারণ সম্পাদকের কথামতো চলছেন দাবি করে তারা বলেন, এমপি বাদশা নিজেও গত ১৪ বছরে কৃষক-শ্রমিকের দাবিদাওয়া নিয়ে কোনো আন্দোলনে দাঁড়াননি। ভোগবিলাসীতে মত্ত। কোটি কোটি টাকা খরচ করে ১০ তলা বাড়ি করেছেন। তা হলে কীসের বাম সংগঠন করেন বাদশা? তিনি তো আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিশে গিয়ে নিজের পার্টির অস্তিত্ব বিলীন করে দিয়েছেন’। সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ওয়ার্কার্স পার্টির ছাত্র সংগঠন
ছাত্রমৈত্রীর সাবেক নেতা আবু রায়হান মাসুদ বলেন, ‘ইতোমধ্যে অন্তত ২০০’ নেতা ফজলে হোসেন বাদশার পাশ থেকে সরে গেছেন।’ সংবাদ সম্মেলনের পর বিকালে রাজশাহীতে ওয়ার্কার্স পার্টিতে উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফজলে হোসেন বাদশা এমপিকে পাওয়া যায়নি। তবে দলের মহানগরের সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু বলেন, পার্টি আদর্শচ্যুত হয়নি। এন্তাজুল ও আকবররা নিজেই আদর্শচ্যুত হয়েছেন। তারা দলের ভেতর বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছেন। বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তাই বহিষ্কার করার কারণে এখন তারা পাগলের প্রলাপ বকছেন।
দলের রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস প্রামাণিক দেবু বলেন, আমার আমেরিকার নাগরিকত্ব নেই। তবে ২০০৯ সাল থেকে গ্রিনকার্ড ছিল। সেটিও মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালে। আর এন্তাজুল হক বাবু নিজেই লালমোহন হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তিনি কীভাবে অ্যাডভোকেট হলেন তা নিয়েই তো প্রশ্ন আছে। শিগগিরই আমরা তার গোমর ফাঁস করে দেব। দলের গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মেনেই দুই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলেও দাবি করেন দেবাশিস প্রামাণিক দেবু।