Home আন্তর্জাতিক আফগানিস্তানের কী হবে?

আফগানিস্তানের কী হবে?

দখিনের সময় ডেক্স ॥

‘শেষ হইয়াও হইল না শেষ’। আফগানিস্তানের গল্প অনেকটা এমন। তবে ‘ছোটগল্প’ নয়; এক দীর্ঘ, অন্তহীন, ট্রাজিক গল্পের কেন্দ্রভূমি আফগানিস্তান।

আফগানিস্তানের এই গল্প চলমান হলেও তার নানান অধ্যায় রয়েছে। দেশটির গল্পের বর্তমান অধ্যায়ের সূচনা ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, যাকে সংক্ষেপে বলা হয় ‘৯/১১’। এদিন যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিল ওসামা বিন লাদেনের আল-কায়দা। এই হামলার জেরে যুক্তরাষ্ট্র ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ যুদ্ধে নামে। যুক্তরাষ্ট্রের এই যুদ্ধের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্যবস্তু নির্ধারিত হয় আফগানিস্তান। কারণ, আফগানিস্তানে ঘাঁটি গড়েছিল আল-কায়দা। আর তৎকালীন তালেবান সরকার ছিল আন্তর্জাতিক এই জঙ্গি সংগঠনের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদদাতা।

সেই যে যুক্তরাষ্ট্র আফগান যুদ্ধে গেল, তারপর কেটে গেছে বহু বছর। প্রায় দুই দশক ধরে চলা এই যুদ্ধে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের পতন হয়েছে ঠিকই; কিন্তু দেশটিতে তারা এখনো বহাল তবিয়তেই আছে। তালেবানের দাবি, তারা এখন আফগানিস্তানের ৭০ শতাংশের বেশি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে আফগানিস্তানের একটি সংবাদ সংস্থার সাস্প্রতিক জরিপে দেখা যায়, তালেবান অন্তত ৫২ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। এ তো গেল তালেবানের কথা। আফগানিস্তানে আল-কায়েদাও বেশ তৎপর। এই যুদ্ধের মধ্যেই আফগানিস্তানে আরেক জঙ্গি সংগঠন আইএসের উত্থান ঘটেছে।

আফগানিস্তানে একটা সরকার আছে বটে; কিন্তু সেই সরকারের অবস্থা বড্ড নড়বড়ে। তারা প্রায়ই তালেবানের হামলার শিকার হচ্ছে। তালেবানের সঙ্গে এককভাবে লড়তে তারা হিমশিম খাচ্ছে। কার্যত যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশিদের সামরিক সহায়তার ছায়ায় আফগান সরকার টিকে আছে।

আফগানিস্তানের এই যখন অবস্থা, ঠিক তখনই সে দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে যাচ্ছে। ‘৯/১১’-এর ২০ বছর পূর্তির আগেই আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে যে যুদ্ধ করে চলছে, তা অবসানের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিল।
যুক্তরাষ্ট্র তার সবচেয়ে দীর্ঘ এই যুদ্ধ চালাতে গিয়ে অনেক মাশুল দিয়েছে। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় আড়াই হাজার সেনা নিহত হয়েছেন। আহত ২০ হাজারের বেশি। ডলার খরচ হয়েছে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন। এখন আফগানিস্তানে প্রায় আড়াই হাজার মার্কিন সেনা আছে। তাঁদের সেখানে আর রাখা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অর্থহীন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, যে উদ্দেশ্যে মার্কিন সেনারা ২০০১ সালে আফগানিস্তানে গিয়েছিলেন, তা পূরণ হয়েছে। এখন আফগান পাট চুকিয়ে করোনা মহামারি, সাইবার হামলা, চীন, রাশিয়া প্রভৃতি ইস্যুতে পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রের।

উদ্দেশ্য হাসিল করে যুক্তরাষ্ট্র না হয় চলে যাচ্ছে, কিন্তু তারপর আফগানিস্তানের কী হবে, সেটা একটা বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে? জেনে নিন গতি বাড়ানোর কৌশল!

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...

প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করলে কী হয়?

দখিনের সময় ডেস্ক: ওজন কমানো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হতে পারে। কঠোর ডায়েট অনুসরণ করা, খাবারের প্রতি লোভ নিয়ন্ত্রণ করা, প্রতিদিন জিমে যাওয়া, কঠোর ওয়ার্কআউট করা...

ডিভোর্সের দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান

দখিনের সময় ডেস্ক: নিন্দুকরা মনে করছে বাংলার মেয়ে গিটার বাদক মোহিনী দে-র জন্যই হয়ত সায়রাকে ছেড়েছেন ভারতের অস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী ও সুরকার এ আর রহমানের। তবে...

যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র টোকিও, সেক্স ইন্ডাস্ট্রির জড়িত কিছু চক্র

দখিনের সময় ডেস্ক: যখন স্বর্ণযুগ ছিল, শহরটি অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নতি দেখেছে। এটি এখনো বিশ্বের অন্যতম বাসযোগ্য শহর হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে আশঙ্কার বিষয়...

Recent Comments