দখিনের সময় ডেস্ক:
নওগাঁ সদরের ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিনকে আটকের পর র্যাবের হেফাজতে তার মৃত্যুর বিষয়টি এখন টক অব দ্য কান্ট্রি। এ কা-ের জেরে বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠেছেন মানবাধিকার কর্মীরা। ২০১৩ সালের হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু নিবারণ আইনে এ পর্যন্ত মাত্র একটি ঘটনার বিচার হয়েছে।
মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক কথিত ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধে মৃত্যুর ঘটনা কমে যায়। ২০২০ সালের ৩১ জুলাই এ ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে, ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর র্যাবের সাবেক-বর্তমান সাত শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এরপর কথিত ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধে তথা বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অলিখিত লাগাম টানা হলেও থেমে নেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা। ২০২২ সালে ক্রসফায়ারে চারজনের মৃত্যু হয় আর র্যাব-পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু হয় ১৫ জনের।
পরিসংখ্যান
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বিচার-বহির্ভূতভাবে এবং তাদের হেফাজতে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের হাতে ১৩ এবং র্যাবের হাতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। র্যাবের ক্রসফায়ারে ৪ জন নিহত হয়েছে। সংস্থাটির হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। পুলিশের হেফাজতে ৭ জনের নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে বলে আসক বলছে। দুজন আত্মহত্যা করেছে। ২০২২ সালে কারা হেফাজতে মারা গেছেন ৬৫ জন। তাদের মধ্যে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ২৮, বিচারাধীন ৩৭ জন।
এ পর্যন্ত বিচার হয়েছে
একটি ঘটনার
জানা গেছে, ২০১৩ সালের হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু নিবারণ আইনে এ পর্যন্ত একটি ঘটনার বিচার হয়েছে। ২০১৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার মিরপুরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে দুই ভাই ইশতিয়াক হোসেন জনি ও ইমতিয়াজ হোসেন রকিকে আটক করে পুলিশ। পরে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হয় বড় ভাই জনির। ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মামলার রায়ে পাঁচ আসামির মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদ-সহ এক লাখ টাকা করে জরিমানা এবং দুই লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। গত ১০ বছরে এ আইনে আর কোনো শাস্তির নজির নেই।