দখিনের সময় ডেক্স:
অভিনেত্রী কবরীর মৃত্যুর একদিন পরেই মারাড়েলেন চিত্রনায়ক ওয়াসিম। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।তিনি রাজধানীর শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেচিকিৎসাধীন ছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা ওয়াসিম৷
সত্তরের দশক থেকে ঢাকাই সিনেমায় একচেটিয়া আধিপত্য ছিল ওয়াসিমের। ১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চলচ্চিত্রে শীর্ষ নায়কদের একজন ছিলেন ওয়াসিম। বিশেষ করে ফোক ফ্যান্টাসি আর অ্যাকশন ঘরনার ছবির নায়ক হিসেবে ছিলেন তুমুল জনপ্রিয় ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী। সত্তর ও আশির দশকে রাজা, রাজপুত্র বলতে চলচ্চিত্রপ্রেমীরা ওয়াসিমকেই কল্পনা করতেন।
এক সময়ের দর্শকপ্রিয় এই অভিনেতার রুপালী পর্দায় যাত্রাটা অবশ্য নায়ক হিসেবে হয়নি। ১৯৭২ সালে সহকারী পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় তার। এর দুই বছর পর নায়ক হিসেবে অভিষেক ঘটে। ১৯৭৪ সালে মহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন’ সিনেমার মাধ্যমে নায়ক রূপে আবির্ভাব ঘটে ওয়াসিমের। এক ছবিতেই বাজিমাত। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। একের পর এক হিট ছবি উপহার দিতে থাকেন। ১৯৭৬ সালে তার অভিনীত এস এম শফী পরিচালিত ‘দি রেইন’ সিনেমা তাকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়। অন্তত ১৫২টির মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন ওয়াসিম।
ওয়াসিমের বিপরীতে ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের অনেক জনপ্রিয় নায়িকা। তাদের মধ্যে অলিভিয়া, রোজিনা, অঞ্জু ঘোষ, কবরী, শাবানার সঙ্গে বেশি সংখ্যক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। অলভিয়ার বিপরীতে ওয়াসিম অভিনীত ‘লাল মেম সাহেব’ ছবিটি আজও সিনেপ্রেমীদের হৃদয়ে দোলা দেয়। কিংবদন্তি অভিনেত্রী শাবানার অভিনীত ‘রাজ দুলালী’ ছবিতে ওয়াসিমের অভিনয় দর্শকনন্দিত হয়। এছাড়া অঞ্জু ঘোষের সঙ্গে জুটি বেধে করা ওয়াসিমের ছবি ‘সওদাগর’, ‘নরম গরম’, ‘রসের বাইদানী’ ব্যাপক ব্যবসাসফল হয়।
কালজয়ী এই অভিনেতা ১৯৫০ সালের ২৩ মার্চ চাঁদপুরের মতলবে জন্মগ্রহণ করেন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ইতিহাস বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। মূলত ওয়াসিমের নেশা ছিল বডি বিল্ডিংয়ে। ১৯৬৪ সালে বডি বিল্ডিংয়ের জন্য ‘মিস্টার ইস্ট পাকিস্তান’ খেতাব অর্জন করেছিলেন ওয়াসিম।