দখিনের সময় ডেস্ক:
বরিশাল সিটি নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের দুই নেতা মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন। এ নিয়ে নানান গুঞ্জন থেরী হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে খোলামেলা কোনো কথা বলতে রাজি নয় দলটি। তবে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রার্থী জাহাঙ্গীরের ঘটনায় কৌশলী ভূমিকা নেওয়া হয়েছে। সরকার যেন কোনো অজুহাতে ইসলামী আন্দোলনকে ভোটের বাইরে না রাখতে পারে তার পূর্বপ্রস্তুতি এটা।
বরিশালে আওয়ামী লীগের যে প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে তাতে সুষ্ঠু ভোট হলে ইসলামী আন্দোলনের বিজয় সুনিশ্চিত বলে মনে করেন তারা। ইসলামী আন্দোলনের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির সহকারী সমন্বয়কারী মো. শহিদুল্লাহ কবির জানান, দুইজনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা নির্বাচনী একটা কৌশলও হতে পরে। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাচই পযর্ন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। তার পরেই সব কিছু খোলাসা হবে।
সরকারের শক্ত প্রতিপক্ষ বিএনপি, বাসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় বরিশালের প্রেক্ষাপটে এবার ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীই নৌকার মূল প্রতিপক্ষ। ভোটের হিসেবে দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় বরিশালে বেশ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে দলটির। তাছাড়া সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম রাজনৈতিক দিক দিয়ে স্বচ্ছ ও পরিপক্ব। তবে ইসলামী আন্দোলন তার প্রার্থিতা শেষ পর্যন্ত টিকিয়ে রাখতে পারবে কিনা এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে।
কয়েকজন সিনিয়র নেতা এই প্রসঙ্গে টেনে আনেন ২০১৫ সালের কথা। ওই বছরের ২৬ মে সৌদি আরবের রিয়াদের ১৬ নম্বর এক্সিটের কাছের একটি কমিউনিটি সেন্টার থেকে রাত ১২টার দিকে মাহফিল থেকে মুফতি ফয়জুল করিমসহ চারজনকে আটক করে সেদেশের পুলিশ। সেই রাতে দুজনকে ছেড়ে দিলেও মুফতি ফয়জুল করিমসহ দুজনকে আটক রেখে কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই ঘটনায় ৪০ দিন কারাগারে থাকার পর ৭ জুলাই সন্ধ্যায় মুক্তি পান ফয়জুল করিম ও তার সঙ্গী।
মুফতি ফয়জুল করিম ৪০ দিন দেশের বাইরে কারাভোগ বা দণ্ডভোগের বিষয়টি সামনে এনে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে যদি মনোনয়ন বাতিল করা হয় তখন প্রার্থীহীন অবস্থায় নির্বাচনের মাঠ ছাড়তে হবে। এজন্য বিকল্প প্রার্থী রাখা হয়েছে নির্বাচন পরিকল্পনায়। বিকল্পের বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেছেন ইছাহাক মো. আবুল খায়ের। তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই। আমরা মুফতি ফয়জুল করিমের জন্য ঐক্যবদ্ধ। তবে প্রক্সি প্রার্থী হিসেবে আমি মনোনয়ন কিনেছি।
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির জানান, বিদেশে কেউ কারাদণ্ডভোগ করলে তার প্রার্থিতা বাতিল হবে কিনা তা নির্বাচনের আইনে উল্লেখ নেই। বিষয়টি আইনজ্ঞরা ভালো বলতে পারবেন। তবে দেশে কেউ দণ্ডিত হলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না- এটা এখন পর্যন্ত বিধানে বলা হয়েছে। এই কর্মকর্তা বলেন, চরমোনাইয়ের প্রার্থী বিদেশে কারাভোগ বা দণ্ডভোগ করেছেন কিনা তা এখনো নির্বাচন কমিশন অবহিত নয়।