দখিনের সময় ডেস্ক:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে দুই কিশোরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে জয়ন্ত কুমার মোহন্ত (৩০) নামে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। রোববার (২১ মে) দুপুরে উপজেলার মধ্য পানিমাছকুটি গ্রামের নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে নির্যাতনের শিকার ওই দুই কিশোর বর্তমানে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারা ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
অভিযুক্ত জয়ন্ত কুমার মোহন্ত উপজেলার ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং মধ্য পানিমাছ কুটি গ্রামের মৃত দেবেন্দ্রনাথ মোহন্তের ছেলে। অভিযোগে জানা যায়, রোববার বেলা ১১টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা জয়ন্ত ফোন করে ভুক্তভোগী কিশোরদের একজনকে তার চায়ের দোকানে ডাকেন। ফোন পেয়ে কিশোররা চার বন্ধু মিলে উপজেলা সদররের জয়ন্তের চায়ের দোকানে যায়। সেখানে চা-নাস্তা খাওয়ানোর পর জয়ন্ত তাদেরকে কৌশলে অটোরিকশায় উঠিয়ে নিজ বাড়ির এলাকায় নিয়ে যান।
সেখানে তিনজনকে বাড়ির পাশের মুদির দোকানে বসিয়ে রেখে গোপন পরামর্শের কথা বলে একজনকে নিয়ে বাড়িতে ঢোকেন। বাড়ির ভেতরে গিয়ে জয়ন্ত ওই কিশোরের গলায় ছুরি ঠেকিয়ে এবং লাঠি দিয়ে মেরে বলাৎকার করেন। এতে ওই কিশোর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পাশের রুমে তালাবদ্ধ করে রাখেন। এদিকে অনেক সময় অতিবাহিত হলে দোকানে অপেক্ষমাণ তিন কিশোর জয়ন্তের বাড়ির দরজায় গিয়ে ডাকাডাকি শুরু করে। তখন জয়ন্ত দরজা খুলে আরও এক কিশোরকে শার্টের কলার ধরে টেনেহিঁচড়ে বাড়ির ভেতর নিয়ে গিয়ে একইভাবে বলাৎকার করেন।
অপর দুই কিশোর ভয়ে পালিয়ে যায়। মারধর ও বলাৎকারে ওই দুই কিশোর অসুস্থ হয়ে পড়লে দুপুর ২টার দিকে জয়ন্ত তাদেরকে ঘটনা কাউকে বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে একটি অপরিচিত অটোরিকশায় উঠিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বাড়িতে ফিরে ভুক্তভোগী দুই কিশোর ভয়ে-লজ্জায় কাউকে কিছু না বলে বিছানায় শুয়ে থাকে। পরে রাতের বেলা পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে আসা দুই কিশোরের কাছে ঘটনা শুনে অসুস্থ দুই কিশোরকে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।
ভুক্তভোগী এক কিশোরের দাদা শামছুল হক জানান, জয়ন্ত এর আগেও আরেক কিশোরের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। তখন এলাকাবাসী মেরে তার পা ভেঙে দিয়েছিল। ফুলবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুর রহমান জানান, ঘটনা শুনে অসুস্থ কিশোরদের দেখতে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।