দখিনের সময় ডেস্ক:
ডিবি কার্যালয়ে গয়েশ্বরের ভোজের একটি ভিডিও ২৯ জুলাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেই খাবার টেবিলে ছিলেন গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ভিডিওটি নিয়ে দেশজুড়ে চলছে আলোচনা। খাবার টেবিলে গয়েশ্বরের সঙ্গে কী কথা হয়েছে, একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে তা বলেছেন ডিবির হারুন।
গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমাদের কাজ হচ্ছে মানুষের জানমাল ক্ষতিগ্রস্ত থেকে রক্ষা করা। আমরা যে মুহূর্তে গয়েশ্বর রায়কে নিয়ে আসলাম, সে আসলেই আহত ছিল। তাকে প্রথমে রাজারবাগ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে আমি গিয়েছিলাম। তখন গয়েশ্বর রায়কে আমি নিজে বলেছি, “আপনি আমাদের কার্যালয়ে আসেন। চা খেয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলে যান।” এ সময় তিনি নিজেই আমার সঙ্গে আসতে চেয়েছেন। তিনি আসার পর আমার রুমে বসলেন। তখন লাঞ্চ টাইম ছিল। তাই আমি তাকে বললাম, “আপনি তো অসুস্থ, তাই আমাদের সঙ্গে লাঞ্চ করেন।” এই কথা শুনে তিনি হ্যাঁ বা না বলেননি। তখন আমার বাসার খাবার বা ক্যানটিনের খাবার তাকে খাওয়ালে কেমন হয়। তাই আমি তার জন্য সোনারগাঁও থেকে সবজি নিয়ে আসলাম। বাকি সব খাবার আমার বাসার।’
পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘কালকে তো তিনি ভালো ছিলেন। তিনি আমার সঙ্গে অনেক কথা বলেছেন। অনেক রোমান্টিক কথা হয়েছে তার সঙ্গে। তখন আমার সঙ্গে তিনি খাবার খেলেন। খাওয়ার সময় তিনি আমাকে বললেন, “সবজিটা দাও।” আমি তাকে বললাম, “সবজিটা কিন্তু সোনারগাঁওয়ের।” এখন সোনারগাঁওয়ের সবজির দাম খুব একটা না। তিনি আমার বাসার খাবারও খেলেন।’
ডিবির হারুন বলেন, ‘খাওয়ার সময় তিনি আমার সঙ্গে অনেক কথা বলেছেন। তিনি বলেন, “শেখ কামালের সঙ্গে আমি রাজনীতি করেছি।” তখন আমি বললাম, “আপনার বয়স কত?” তিনি বললেন, “আমার বয়স ৭৪।” তখন আমি তাকে বললাম, “আমার মনে হয় না আপনার এত বয়স।” আমি তার সঙ্গে কৌতূক করলাম। একসময় আমি তাকে বললাম, “আপনি অসুস্থ হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আপনার খোঁজখবর নিয়েছেন।” তখন তিনি বললেন, “হুম শেখ কামাল আমার অনেক ঘনিষ্ট ছিল। আমরা একসঙ্গে ছিলাম, অনেক কিছু করেছি।” এগুলো কথা খাবার টেবিলেই হয়েছে। একসময় আমি তাকে বললাম, “দেখেন আজকের ঘটনায় আমাদের অনেক পুলিশ মার খেয়েছে, আমাদের গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।” তখন তিনি বললেন, “হুম আমি তো অনেক চেষ্টা করেছি এদেরকে নিবৃত করতে।”
খাবার টেবিলের সেই ভিডিও কে করেছে, কীভাবে সেটি প্রকাশ হলো—এমন প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমরা একেবারে ঘরোয়া পরিবেশে খাওয়া-দাওয়া করেছি। তিনি আমাকে অনেক ধন্যবাদ দিয়েছেন। এখন সেখানে অনেক পুলিশ সদস্য ছিল। তারা হয়তো মনে করেছে—এমন সুন্দর পরিবেশ, তাই ভেবে হয়তো কেউ ছবি তুলেছে। আমরা বিয়ের অনুষ্ঠানে অনেক রাজনীতিবিদের সঙ্গে খাবার খাই, ছবি তুলি। সেগুলো তো গণমাধ্যমে আসে। তাই এটাকে এত গুরুত্ব দেওয়ার মতো না। আমরা খাবার টেবিলে দাদার সঙ্গে যে কথা বলেছি, তা কাউকে দেখানোর জন্য নয় বা অপচেষ্টার জন্য বা ভিডিও ভাইরাল করার জন্য না। এখন এই ঘটনাকে যদি কোনো অন্যদিকে ধাবিত করে, আমরা কিন্তু এমন কোনো বিষয় মনে করে কাজটা করিনি।