দখিনের সময় ডেস্ক:
আপনি বসে আছেন কিংবা হাঁটছেন, হঠাৎ মাথাটা ঘুরে গেল। আবার এমনও হতে পারে, শুয়ে শুয়ে মোবাইল কিংবা ল্যাপটপে কোনো সিনেমা দেখছেন, আচমকাই মাথা ঘুরে উঠল। সেই সঙ্গে চোখে ঝাপসা বা অন্ধকার দেখছেন। স্বাভাবিক ঘটনা মনে করে প্রথমে হয়তো পাত্তাই দিলেন না ব্যাপারটা। কিন্তু বারবার এমন সমস্যা হলে তা কোনোমতেই এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয় বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
চিকিৎসকদের মতে, বিভিন্ন কারণে এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তবে এর প্রধান কারণ ভার্টিগো। যদিও এই ভার্টিগো কোনো মেডিকেল অবস্থা নয়। বরং বলা চলে, কোনো রোগের উপসর্গ হতে পারে। কিন্তু রোগ ছাড়া যদি আপনি ক্রমাগত মাথা ঘোরা বা মাথা ঝিমঝিম করার সম্মুখীন হন, তাহলে সচেতন হওয়া জরুরি।
অনেক সময় মানসিক চাপের কারণে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা বলেন, প্রকৃতপক্ষে অর্থোস্ট্যাটিক এবং পোস্টুরাল হাইপোটেনশনের কারণে হঠাৎ ভার্টিগো হতে পারে, যা নিম্ন রক্তচাপের একটি লক্ষণ। এ ছাড়া মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে কখনো কখনো ঘুম থেকে ওঠার পরও মাথা ঘুরতে পারে। কানের ভেতরে কোনো সমস্যা হলেও এমন হতে পারে। আবার গরমে ঘেমে হঠাৎ রক্তচাপ কমে গেলে মাথা হালকা হয়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি হতে পারে।
চিকিৎসকরা বলেন, হৃদযন্ত্রের পেশি সঙ্কুচিত বা প্রসারিত হওয়ার স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত হলেও এই ধরনের সমস্যা দিতে পারে। এ ছাড়া সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হলেও মাথা ঝিমঝিম করতে পারে।
কী করবেন: বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শরীরে পানির ঘাটতি হলে মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ কারণে সমস্যা কমাতে বারবার পানি পানের পরামর্শ দেন তারা। এই সমস্যার নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, সব বয়সেই এই রোগ হওয়া সম্ভব। তবে মাথায় রাখতে হবে যে ৬০ ঊর্ধ্বদের মধ্যেই ভার্টিগো বেশি দেখতে পাওয়া যায়। এ ছাড়া এখন ছোটদেরও এই রোগ হয়।
যদি স্ট্রেস আপনার জন্য ভার্টিগোর কারণ হয়ে থাকে, তাহলে এই ক্ষেত্রে মানসিক চাপ কমানো ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।মানসিক চাপ কমানোর জন্য আপনি গান শুনতে পারেন, ধ্যান করুন। যোগব্যায়াম করলেও মানসিক চাপ কমতে পারে। এ ছাড়া ক্যাফেইনযুক্ত খাবার ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রসঙ্গত, ভেস্টিবুলার সিস্টেমের গোলমাল হলেই মূলত ভার্টিগো হয়। মস্তিষ্কের যে অংশ কিংবা ভেস্টিবুলার যেসব স্নায়ু দেহের ভারসাম্য রক্ষা করে, সেগুলোতে সমস্যা দেখা দিলেই ভার্টিগো হতে পারে।