Home শীর্ষ খবর কুখ্যাত ফু-ওয়াং ক্লাবের ইডি মাদকের সাবেক ডিজি

কুখ্যাত ফু-ওয়াং ক্লাবের ইডি মাদকের সাবেক ডিজি

আলম রায়হান:
ক্লাবের ছদ্মাবরনে জুয়া-মদ-নারী ব্যবসার জন্য কুখ্যাত ফু-ওয়াং ক্লাব। অবৈধ মাদক ব্যবসা এবং ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে ফু-ওয়াং ক্লাবে র‌্যাব-পুলিশ-মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে। তবে এসব অভিযানে অবৈধ কার্যক্রম থেমে থাকেনি অথবা ফু-ওয়াং ক্লাব বন্ধ হয়ে যায়নি। কিন্তু পিলে চমকানো খবর হচ্ছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সাবেক এক মহা-পরিচালক(ডিজি) এই ফু-ওয়াং ক্লাবের নির্বাহী পরিচালক (ইডি) হিসেবে যোগদান করেছেন।
ওপেন সিক্রেট, ফু-ওয়াং ক্লাবে সারারাত চলে তথাকথিত ডিসকো, মদ্যপান ও অন্যান্য অসামাজিক কার্যক্রম। অনেকেই বলেন, ফু-ওয়াং ক্লাব চলে অদৃশ্য এশাধিক খুঁটির জোরে। এরপরও মাঝেমধ্যে এখানে অভিযান চলে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও একবার এই ফু-ওয়াং ক্লাব থেকে কিছু তরুন-তরুনীকে মদ্যপ অবস্থায় আটক করেছিলো পুলিশ। এ খবর ছবিসহ প্রকাশিতও হয়েছে।
কথিত এই ক্লাবটি ঘিরে সবচেয়ে মজার ঘটনা ঘটে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। প্রথম দফায় ২৩ সেপ্টেম্বর কয়েক দফায় পুলিশী অভিযানে অবৈধ কিছুই পাওয়া যায়নি। কিন্তু এর ঠিক তিনদিনের মাথায় র‌্যাবের অভিযানে পাওয়াগেলো বিপুল পরিমাণ মদ, বিয়ার আর আমদানি নিষিদ্ধ বিদেশি সিগারেট। র‌্যাব জানায়, অভিযানে ক্লাবটির ভেতর থেকে দুই হাজার দুই’শ বোতল বিদেশি মদ ও দশ হাজারের উপরে অনুমোদহীন বিয়ার পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা ছাড়াও আটক করা হয় ৩ কর্মচারীকে। আটক তিনজন ও ক্লাবের মালিকের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছিলো বলে জানা যায়। কিন্তু এই সব অভিযান ও মামলায় যে কোন ফলোদয় হয় না- তা সাধারণভাবেই জানা কথা। কিন্তু যা অনেকেরই অজানা তা হচ্ছে, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সাবেক এক মহাপরিচালক ফু-ওয়াং ক্লাবের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে যোগদান করার বিষয়টি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উল্লেখিত সাবেক মহা-পরিচালকের সঙ্গে আজ বুধবার (২৩ আগস্ট) রাত পোনে আটটার দিকে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করেন। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আমাকে কেউ ফু-ওয়াং ক্লাবের আশেপাশেও দেখেছে?’ তার ভাষ্যমতে তিনি, কোন রকমের চাকরির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। এমনকি আন্তর্জাতিক সংস্থায় চাকরির প্রস্তবাও গ্রহণ করেননি বলে দাবি করেন মাদকের সাবেক এই মহা-পরিচালক।
এদিকে সূত্র বলছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতের মহাপরিচালক থাকাকালেই সরকারি এই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ফু-ওয়াং ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। এই সম্পৃক্ততার সুবাধে তিনি মাদক মাফিয়াদের ‘মুরব্বী’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। পাশাপাশি বিপুল অর্থের মালিক হন। এদিকে অধিদফতরের ছোটখাটো অনিয়ম থেকে নিজেকে তিনি দূরে রেখেছেন। ফলে তার এক ধরনের সুনামের ভাবমূর্তি সৃষ্টি হয়েছিলো। এই সুনামের আড়ালে তিনি মাদক কারবারীদের গোপনে সহায়তা করেছেন।
তবে এই বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে শেষপর্যন্ত আর গোপন থাকেনি বলে সূত্র জানিয়েছে। ফলে তাকে সচিবের স্টাটাস দেয়া হলেও সচিবের পদে বসানো হয়নি। বরং সচিবের পদমর্যাদায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহা-পরিচালকের পদ থেকেই সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যেতে হয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সাবেক এই মহা-পরিচালককে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

কোথাও সরকারিভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়নি, দেশকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে

দখিনের সময় ডেস্ক: সরকারিভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়নি জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, দেশের পাহাড়ি এলাকাতেও বহুমুখী ষড়যন্ত্র থেমে...

দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বিচারক নিয়োগ নীতিমালা: প্রধান বিচারপতি

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগে নীতিমালা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে। একই সঙ্গে সুনির্দিষ্ট আইনও করা হবে বলে...

গায়েবি মামলার কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে: আসিফ নজরুল

দখিনের সময় ডেস্ক: অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিচার বিভাগ ব্যবহার করে মানুষকে হয়রানি করার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বিগত...

ইসরায়েলে মশাবাহিত ‘ওয়েস্ট নাইল’ ভাইরাসে নিহত ৭০, আক্রান্ত ৯১৩

দখিনের সময় ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যের দু’টি দেশ লেবানন ও ফিলিস্তিনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইসরায়েল। গাজায় যুদ্ধ শেষ করতে না করতেই, দেশটি নতুনভাবে লেবাননে যুদ্ধ শুরু করেছে। এদিকে, মশাবাহিত...

Recent Comments