দখিনের সময় ডেস্ক:
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকা থেকে নিখোঁজ কিশোর নুর নবী (১৪) হত্যা মামলার জট খুলতে শুরু করেছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত হোসেন নামে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর গ্রেপ্তারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। সেখানে তিনি ঘটনার দায় স্বীকার করে কামরুল ইসলাম নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের জড়িত থাকার কথা বলেছে। এছাড়া গ্রেপ্তারের পর অভিযুক্ত হোসেন তদন্ত সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছেন নুর নবীকে হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কাহিনী।
এদিকে, নুর নবী হত্যাকাণ্ডের কারণ যতই স্পষ্ট হচ্ছে, ততই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের গাফিলতি ভুল কৌশলের অভিযোগ তোরা হয়েছে। নুর নবী নিখোঁজের পর থেকে থানা পুলিশ তাকে উদ্ধারে যথেষ্ট তৎপরতা চালায়নি। তাদের মধ্যে এক ধরনের গা-ছাড়া ভাব ছিল। কয়েকদিন সময় পাওয়ার পরও পুলিশ অপহরণকারীদের ভুল কৌশল প্রয়োগ করেছে। জানা গেছে, অভিযুক্তরা নুর নবীকে অপহরণের পর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এই টাকা পরিশোধের জন্য একটি বিকাশ পার্সোনাল নম্বর প্রদান করে।
এসময় অপহরণকারীরা ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজনকে ওই বিকাশ নম্বরে ফোন করতে নিষেধ করেছে এবং দ্রুত টাকা পাঠাতে বলে। তবে ভুক্তভোগীর পরিবার আগে টাকা না পাঠিয়ে পুলিশের কথা মতো বিকাশ নম্বরটি তাদের পাঠাতে বলে। বিকাশ পার্সোনাল নম্বর পেয়ে পুলিশ ওই নম্বরে ফোন করে টাকা পাঠানোর জন্য আরেকটি এজেন্ট নম্বর দিতে বলে। পুলিশের ধারণা ছিল এজেন্ট নম্বর হলে দোকানের অবস্থান নিশ্চিত হলে টাকা উঠানোর সময় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা যাবে। কিন্তু সহজ এই কৌশলের প্রয়োগ করতে গিয়ে কাল হলো নুর নবীর। অভিযুক্তরা মুক্তিপণ আদায়ের আশা ছেড়ে দিয়ে ভুক্তভোগীকে হত্যা করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম নগর পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যখনই পুলিশ বিকাশ পার্সোনাল নম্বর পেয়েছে তখনই ওই নম্বরের অবস্থান চট্টগ্রামে শনাক্ত করতে পেরেছিল যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ। এক্ষেত্রে দ্রুত তারা চট্টগ্রামের স্থানীয় থানাকে জানাতে পারত। আর স্থানীয় থানা কয়েকটি টিম নিয়ে অভিযান চালাতে পারত। কিন্তু যাত্রাবাড়ী থানা বিষয়টি চট্টগ্রামের পুলিশকে অবহিত করেনি। আর ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ পেলেও অভিযুক্তরা নুর নবীকে হত্যা করত না বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।