দখিনের সময় ডেস্ক:
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল দলটি। তবে ইতোমধ্যে বিএনপির দেওয়া সেই ৪৮ ঘণ্টা সময় অতিবাহিত হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপির এ আল্টিমেটামে কোনো ধরনের সাড়া দেয়নি সরকার। ফলে দেশের একটি বেসরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে খালেদা জিয়াকে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে আরও কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে এতে সরকারের সায় মেলেনি। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে হলে আদালতের মাধ্যমে জামিন নিতে হবে। শর্তযুক্ত মুক্তিতে তাকে বিদেশে পাঠানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
এদিকে বেঁধে দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম না মানার ব্যাপারে বিএনপি নেতারা বলছেন, খালেদা জিয়া যে অত্যন্ত অসুস্থ, সরকার তা কর্ণপাত করছে না। সে কারণে দলের পক্ষ থেকে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। তারপরও সরকার সাড়া দেয়নি। ফলে বর্তমানে খালেদা জিয়া যেভাবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, সেটিই চালিয়ে যাওয়া হবে। পাশাপাশি তার মুক্তির দাবিতে নতুন করে কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে। যদিও কর্মসূচির বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয়। একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরা হবে।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের এখন একটাই লক্ষ্য ম্যাডামকে চিকিৎসার জন্য বাইরে পাঠানো। কিন্তু সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাচ্ছে না। আমাদের আন্দোলন তো চলমান রয়েছে, সামনে আরও কর্মসূচি আসবে। এদিকে বিএনপির বেঁধে দেওয়া ৪৮ ঘণ্টা সময়ের ব্যাপারে ২৫ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী খালেদা জিয়ার দণ্ড শর্তযুক্তভাবে স্থগিত করা হয়েছিল। তাই তাকে বিদেশে পাঠানোর ব্যাপারে আইনের অবস্থান থেকে সরকারের আর কিছু করার নেই।
এদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা ভালো নয়। ওষুধ দিয়ে তার রোগ যতটুকু নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, সেই চেষ্টাই করে যাওয়া হচ্ছে। তারপরও মাঝে-মাঝে তার অসুস্থতা মারাত্মক পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। আসলে, তার মূল সমস্যা হচ্ছে লিভার জটিলতা। এটির কারণে অন্যান্য রোগগুলো অনেক সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তখন অনেক সময় ওষুধেও কাজ হয় না।