Home বরিশাল বরিশালে কৃষি সেচের বেহাল দশা, চালের জন্য ভরসা উত্তর অঞ্চল

বরিশালে কৃষি সেচের বেহাল দশা, চালের জন্য ভরসা উত্তর অঞ্চল

আলম রায়হান:
বরিশালে সেচ ব্যবস্থাপনা বেহাল দশায় আছে। ফলে কৃষি উৎপাদন কমে প্রায় তলানীতে ঠেকেছে। ফলশ্রুতিতে এক সময় ধান উৎপাদনে শীর্ষে থাকা দক্ষিণ অঞ্চলকে নির্ভর করতে হচ্ছে উত্তর অঞ্চলের উপর। সূত্র বলছে, এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড বিলম্বে হলেও একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব:) জাহিদ ফারুক শামীমের বিশেষ নজরদারীতে প্রকল্পটি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া অনেকটাই এগিয়েছে বলে জানাগেছে। তবে এব্যাপারে বোর্ডের কোন কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সূত্রে জানাযায়, বিগত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৪টি পাম্পের মাধ্যমে ১২৫০ হেক্টর জমিতে সেচ প্রদান করা হয়েছে। যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ১১টি পাম্পের মাধ্যমে ২৮৯৯ হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া হয়েছে। সেচ কার্যক্রমের প্রতি সরকার ও কৃষকদের আগ্রহের ফলে সেচের আওতা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্রমতে ‘বরিশাল সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন (১ম পর্ব) নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে এ প্রকল্প অনুমোদনের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে ঢাকার সূত্রে জানাগেছে। এদিকে বরিশালের সূত্র বলছে, বরিশাল সেচ প্রকল্প (বিআইপি)-এর আওতায় অন্তত ২১টি পাম্প হাউজ এবং সংশ্লিষ্ট অফটেক ও চেক স্ট্রাকচার মেরামতের মাধ্যমে সেচ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। এর ফলে  প্রায় ৩ হাজার থেকে সাত হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় আসবে। এই প্রকল্পের আওতায় খালও খনন করা হবে বলে জানাগেছে।  সূত্রমতে, উল্লেখিত প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রায় ২৭ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদিত হবে। এ প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার নিশ্চিত করা। এর ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর চাপ কমার পাশাপাশি মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং জীববৈচিত্র অনেকখানি রক্ষা পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার আমলে ১৯৭২-১৯৭৫ সময়কালে বরিশাল সেচ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়। ১৯৭৪ সালের ৮ জুলাই আবদুর রব সেরনিয়াবাত বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানিসম্পদ ও বিদ্যুৎমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করার পরিপ্রেক্ষিতে গোটা দেশে কৃষি ও পানি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে। আর বিশেষভাবে উপকৃত হয় বরিশালের ৬ জেলা। তখন ছিলো এক জেলা। আবদুর রব সেরনিয়াবাত এই অঞ্চলে ইরি চাষের জন্য ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ফলে ‘ষড়যন্ত্রের দুর্ভিক্ষের ‘  তীব্রতা এই অঞ্চলে তুলনামূলকভাবে কম ছিলো। কিন্তু ৭৫-এ ১৫ আগস্টের পর সবকিছু এলোমেলে হয়ে যায়। যার ফলশ্রুতিতে ‘ধান-নদী-খাল, এই তিনে বরিশাল’ হয়েগেছে কেবলই অতীত স্মৃতি, সেই বাস্তবতা এখন পরিণত হয়েছে অলীক প্রবচনে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে? জেনে নিন গতি বাড়ানোর কৌশল!

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...

প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করলে কী হয়?

দখিনের সময় ডেস্ক: ওজন কমানো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হতে পারে। কঠোর ডায়েট অনুসরণ করা, খাবারের প্রতি লোভ নিয়ন্ত্রণ করা, প্রতিদিন জিমে যাওয়া, কঠোর ওয়ার্কআউট করা...

ডিভোর্সের দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান

দখিনের সময় ডেস্ক: নিন্দুকরা মনে করছে বাংলার মেয়ে গিটার বাদক মোহিনী দে-র জন্যই হয়ত সায়রাকে ছেড়েছেন ভারতের অস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী ও সুরকার এ আর রহমানের। তবে...

যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র টোকিও, সেক্স ইন্ডাস্ট্রির জড়িত কিছু চক্র

দখিনের সময় ডেস্ক: যখন স্বর্ণযুগ ছিল, শহরটি অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নতি দেখেছে। এটি এখনো বিশ্বের অন্যতম বাসযোগ্য শহর হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে আশঙ্কার বিষয়...

Recent Comments