আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য নিয়ে। মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এয়ারপোর্ট থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠলে ঢাকাকে মনে হয় ইউরোপ। আর নামলেই আমাদের বাসগুলো দেখলে মনে হয় গরিব গরিব চেহারা। জীর্ণ, মুড়ির টিন চলছে। গায়ে লেখা আল্লাহর নামে চলিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘মালিক সমিতিকে বলব, এসব গাড়ি কীভাবে চলে ঢাকা শহরে? এ কথা কতবার বললাম। কী লাভ হলো? কথা অনেক বলেছি। কথা কাজে পরিণত না হলে মূল্য থাকে না।’
সেতু ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। কারণ তিনি দেশের আসল চেহারা অনুধাবন করতে পেরেছেন। এ ব্যাপারে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একটা কবিতা আছে। যাতে তিনি বিমান থেকে বন্যায় প্লাবিত দেশ দেখতে বারণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে। কারণ ওপর থেকে সর্বনাশা প্লাবনের জলরাশি মনোহর হিসেবে ধরা দিয়ে আহ্লাদে মুখ থেকে ‘আহ’ শব্দ বেরিয়ে যেতে পারে। মানে ওপর থেকে দেখলে বাস্তবতা অনুধাবন করা যায় না। বরং উল্টোই মনে হতে পারে। বিলম্বে হলেও যার প্রমাণ পেয়েছেন আমাদের সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও। আসলে মন্ত্রীদের উচিত ওপর থেকে নয়, নিচ থেকেই দেখা। তাতে বাস্তবতা অনুধাবন সহজ হবে।
বলে রাখা ভালো, দেশের মানুষ কিন্তু এ নিচেরটাই দেখে। এমনকি স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় মানুষ নিচের অসংখ্য চর দেখে। যার প্রভাবে স্বাচ্ছন্দ্যে যাওয়ার আনন্দ ভুলে নিচের দৃশ্যে ব্যথিত হয়। এটি সেতুমন্ত্রীসহ সবার বিবেচনায় নেওয়া উচিত। এদিকে আরেকটি ভালো কথা বলেছেন আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আসবে বলে জানিয়েছেন। তবে সরকার তাদের খরচ বহন করবে না।’ খুবই সরেস বচন। টাক মাথায় কৃত্রিম কালো চুলের আচ্ছাদনধারী আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশের টাকা নিয়ে ভাবনার আওয়াজ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি কি জানেন, তার এ বচন নিয়ে দেশের মানুষের কোনো আগ্রহ নেই।
আলম রায়হান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক (দৈনিক কাবেলায় প্রকাশিত, ২৬ অক্টোবর ২০২৩))