দখিনের সময় ডেস্ক:
আয়রন আমাদের শরীরের জন্য একটি অপরিহার্য খনিজ। এটি সুস্থ ইমিউন সিস্টেম, মানসিক সুস্থতা, পেশী এবং শক্তির জন্য লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন। শিশুর সুস্থ মস্তিষ্কের বিকাশ এবং বৃদ্ধির জন্য আয়রন গুরুত্বপূর্ণ। আয়রন লোহিত রক্তকণিকায় হিমোগ্লোবিন নামক প্রোটিনের অংশ গঠন করে। হিমোগ্লোবিন রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন পরিবহন করে।
আয়রনের ঘাটতি কী?
আয়রনের ঘাটতি বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে সাধারণ পুষ্টির ঘাটতি। যদিও এটি সব বয়সের মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে, তবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে শিশু, গর্ভবতী বা ঋতুস্রাব হওয়া নারী এবং কিডনি ডায়ালাইসিস গ্রহণকারী ব্যক্তিরা। শরীরে আয়রনের অভাবে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। যেহেতু শরীর নিজে থেকে আয়রন তৈরি করতে পারে না, তাই আমাদের খাদ্য থেকে পর্যাপ্ত আয়রন গ্রহণ করতে হবে।
আয়রনের ঘাটতির কারণ কী?
আয়রনের ঘাটতির প্রধান তিনটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত আয়রন সমৃদ্ধ খাবার না খাওয়া, আয়রন শোষণে সমস্যা এবং রক্তের ক্ষয়। উপরে উল্লিখিত কারণগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি শরীরে প্রয়োজনীয় পরিমাণ আয়রনকে হ্রাস করতে পারে।
আয়রনের ঘাটতির লক্ষণ: আয়রনের ঘাটতির লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্লান্তি এবং দুর্বল বোধ করা। শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে বা মাথা ঘোরা এবং মাথা ঝিমঝিম বোধ হতে পারে। আয়রনের ঘাটতি কোনো কাজে মনোনিবেশ করা এবং তা মনে রাখতে বাধা দেয়। এর ফলে আপনার সব জায়গায় পারফর্মেন্স খারাপ হতে শুরু করবে। যৌন চাহিদা কমে যাওয়াও আয়রনের ঘাটতির লক্ষণ। তবে এই লক্ষণগুলো শুধু আয়রনের ঘাটতির জন্য নয় বরং অন্যান্য সমস্যার কারণেও হতে পারে।
খাবার থেকে আয়রন গ্রহণ: আমাদের খাদ্য থেকে আয়রন দুটি আকারে আসে: হিম আয়রন এবং নন-হিম আয়রন। হার্ভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেলথ অনুসারে হিম আয়রন নন-হিম আয়রনের চেয়ে শরীর দ্বারা ভালো শোষিত হয়। হাঁস-মুরগি এবং সামুদ্রিক খাবারের মতো প্রাণির মাংসে হিম আয়রন পাওয়া যায়। নন-হিম আয়রন উদ্ভিদ থেকে যেমন দানা শস্য, বাদাম, বীজ, লেবু এবং শাক-সবজিতে পাওয়া যায়। এ ধরনের খাবারের সঙ্গে ভিটামিন সি খেলে তা শরীরে হিম আয়রন এবং নন-হিম আয়রনের শোষণকে উন্নত করে।
যেসব খাবার কম খাবেন: কিছু খাবার এবং পানীয় আপনাকে সঠিকভাবে আয়রন শোষণ করতে বাধা দেয়। পরিমিত পরিমাণে এই জাতীয় খাবার খাওয়া অর্থাৎ অতিরিক্ত না খাওয়া ভালো। এই খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে চা, কফি, ওয়াইন এবং ক্যালসিয়াম এবং ফাইবার রয়েছে এমন খাবার।